দীনেশ দাস
দীনেশ দাস

দীনেশ দাস (Dinesh Das)। 2021 এর বিধানসভা ভোটে তিনি বনগাঁ উত্তরের নির্দল প্রার্থী। কিন্তু কে তিনি? তার পরিচয়-ই বা কি? আজ সেটাই জেনে নেওয়া যাক। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসেন তিনি, ভালবাসেন মানুষের স্বপ্নকে দিশা দিতে। আর এই স্বপ্ন সত্যি করেই বনগাঁর একেবারে গরীব পরিবার থেকে উঠে এসেও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজের ব্যবসা ছড়িয়েছেন তিনি।

নির্দল প্রার্থী

নির্দল প্রার্থী দীনেশ দাস ছোটোবেলায় বনগাঁ হাইস্কুল থেকে পড়াশোনা করেন। বাবা রিকশা চালক, পরিবারে শিক্ষিত বলতে কেউ ছিল না। তিনিই তার পরিবারের প্রথম শিক্ষিত বলা চলে। স্কুলের পড়া শেষ হওয়ার পর তিনি কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরবর্তী পড়াশোনা করেন। যাদবপুরে পড়াশোনার খরচ তিনি যোগাতেন মূলত টিউশনি করে এবং শিক্ষার স্কলারশিপ থেকে। তাঁর বিষয় ছিল পলিটিকাল সায়েন্স, তিনি এই বিষয়কে মনেপ্রাণে ভালোবেসে পরবর্তীকালে যাদবপুর থেকেই এমএ এবং এমফিল পাস করেন। না তিনি এখানেই থেমে থাকেননি, এরপর যথারীতি নেট এবং সেট পরীক্ষাতেও তিনি উর্ত্তীন্ন হন, এছাড়াও তিনি JRF অর্থাৎ ন্যাশনাল জুনিয়ার রিসার্চ ফেলোশিপ পরীক্ষাতেও নিজের নাম তুলেছিলেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি একটি কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি সংস্থায় চাকরির সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু সে সব করেননি একটাই কারণে। তিনি নিশ্চিত জীবন বেছে নেওয়ার চেয়ে গুরুত্ব দেন চ্যালেঞ্জ নিতে। মনের জোর আর জেদকে কাজে লাগিয়ে জীবনের সব বাধা পেরিয়ে আজ আইটি, ফিনান্স, ট্রান্সপোর্ট সংস্থার মালিক। কলকাতা, দিল্লি সহ দেশের বড় শহরে যার ব্যবসার বিস্তার। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও তিনি তার ব্যবসা ছড়িয়েছেন। ব্যবসাতেও পুঁজি সেই জেদ আর ভিশন। যে কোনও কঠিন কাজকে সঠিক পরিকল্পনা করে সফলভাবে বাস্তবে পরিণত করায় পুরস্কারও পেয়েছেন।

1617351588531

তবে তিনি নিজের স্বপ্ন সত্যি করেই থেমে যেতে চান না। তিনি চান সমাজের জন্য কিছু করতে,সমাজে থাকা আরও গরিব ঘরের ছেলে মেয়েরা যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে তার জন্য তিনি সবরকম চেষ্টা করতে চান সেই সমস্ত ইচ্ছুক ছেলেমেয়েদের। তাই অন্যান্য প্রার্থীদের মত না ভেবে তিনি সাধারণ মানুষের জন্য চাকরির সংস্থান করে দিতে এবারের ভোটে দাঁড়িয়েছেন তবে নির্দল প্রার্থী হিসাবে। তাই কলকাতা শহরের মায়া জালে তিনি আবদ্ধ না থেকে আবার তার ছেলে বেলার গ্রামকেই বেছে নিয়েছেন প্রথম জায়গা হিসেবে, যাতে সেই গ্রামের জন্য তিনি কোনো ভালো কাজ করতে পারেন। তিনি এবার ভোটে লড়ছেন একটাই লক্ষ্যে বনগাঁকে কিছু ফিরিয়ে দিতে।

বেকারদের চাকরি নেই, আইনশৃঙ্খলার অবস্থা শোচনীয়। বনগাঁ যেন দিন দিন অন্ধকার গাঁয়ে পরিণত হচ্ছে। অনেকের থেকেই ফোন পেতাম দাদা আপনি তো এত বড় ব্যবসার মালিক, একটা চাকরি দিন না। কষ্ট হত। সমাজের তেষ্টার বিশাল মাপে আমি বড়জোড় এক ফোঁটা জলের জোগান দিতে পারি। আফশোস নিয়েই দিন কাটছিল। মাঝে বেশ কটা আত্মজীবনী, স্টার্ট আপ নিয়ে আরও পড়াশোনা, বিদেশে কয়েকজন বন্ধু শিল্পপতির সঙ্গে কথা বলে একটা মডেল তৈরি করলাম। করে বুঝলাম, সমাজের চাহিদা পূরণ করার ক্ষমতা আমার আছে। বিকল্প চিন্তা। দাদা-দিদি ছাড়া সমাজের জন্য করার চিন্তা। না কোনও এনজিও নয়, কাউকে আর্থিক সাহায্য নয়, আমার মডেল হল দুনিয়ায় নিজের প্রতিভাকে ঠিকভাবে বিক্রি করার উপায়। ডিজিটাল দুনিয়া এখন সুযোগের রাজধানী হয়ে গিয়েছে। প্যারাগুয়ের কোনও এক গ্রামে বসে এখন নিউ ইয়র্কের ব্যবসাকে টক্কর দেওয়া যায়। কেনিয়ায় কানাগলি থেকে এখন স্টার্টআপ শুরু করে কোটপতি হওয়া যায়। দেশে বিদেশে না ঘুরেও দুনিয়ার যে কোনও প্রান্তের ক্রেতার কাছে নিজের প্রতিভা-পণ্য বিক্রি করা যায়। তাহলে বেকার থাকবে কেন আমাদের বনগাঁয়। আসলে কথা বলে দেখেছি, বুঝেছি নেতারা বেকারদের কাজ দিতে ভাবেন না, বেকারদের কাজে লাগানোর কথা ভাবেন।

আমার মত যাতে আরোও দরিদ্র পরিবারেরছেলেমেয়েরা নিজের স্বপ্ন সত্যি করার সুযোগ পায় সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতেই লড়বেন বলে জানালেন বনগাঁ উত্তরের নির্দল প্রার্থী দীনেশ দাস।