রোগ হল জীব দেহের কোন অস্বাভাবিকতা, অক্ষমতা, স্বাস্থ্যহানির ইঙ্গিত। রোগ ব্যাধি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আজ সারল তো কাল আবার জুটল। আর বিশেষ করে যদি বাড়িতে কোন বাচ্চা কাচ্চা থাকে তালে তো আর কথাই নেই আজ জ্বর, কাল সর্দি।  অনেক সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলেও রোগ ব্যাধি হয়। বাঙ্গালী এই রোগগুলির সাথে একপ্রকার অভ্যাসগত হয়ে গেছে। বলা যেতে পারে এই সকল রোগ নিয়েই নিত্যদিন বাঙ্গালীর  বাস।

প্রায়শই  যে সকল রোগ বাঙ্গালীর ঘরে ঘর অযাচিত আত্মীয়ের মতো আগমন ঘটে

১) জ্বর

বাঙ্গালী ঘরে  জ্বর প্রায়শই লেগে থাকে, কারন  অকারনেই জ্বর বাধিয়ে বসে।  জ্বর অনেক কারনেই হতে পারে ২ ৩ বার ঠাণ্ডা জলে স্নান করলে, বৃষ্টিতে ভিজলে, আবাওয়াহয়া পরিবর্তন হলে , ঘাম গায়ে বসে গেলে। যাই হোক না কেন জ্বর আর গা ম্যজম্যজ নিত্য দিনের ঘটনা।  এই রোগের সাথে এতটাই অভ্যস্ত বাঙ্গালী যে প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তিরা এই জ্বরকে তেমন আমলই দেয় না। কিন্তু অনেক সময় ভাইরাল জ্বর কিন্তু মানুষকে কাবুও করে দিতে  পারে। তাই জ্বরকে অবহেলা না করাই শ্রেয়।

সমাধান – জ্বর হলেই যে ডাক্তারের কাছে ছুটতে হবে তার কোন অর্থ নেই। ঘরোয়া উপায়ে খুব সহজেই সেরে যাবে জ্বর।  আদা , মধু, দারচিনি, তুলসি দিয়ে চা খান।  আদা জ্বর নিরাময় করে, দারচিনি, তুলসি  গা ম্যজম্যজ ভাব, ভাইরাল জ্বর  নির্মূল করার উপকারী পথ্য ।

২) সর্দি কাশি

গলা ব্যাথা, খুশখুশে কাশি, ঠাণ্ডার ধাঁচ বাঙ্গালীর ঘরে ঘরে হামেশাই হচ্ছে। বিশেষ করে যদি কোন ছোট বাচ্ছা থাকে তাহলে তো কথাই নেই। আবার বর্ষা শুরুতেই, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সর্দি –কাশির আগমন ঘটে, নাক থেকে জল গড়ায়, বুকে শ্লেষ্মা জমার সমস্যা শুরু হও।  অনেক সময় ঠাণ্ডা লেগে বুকে কফ জমে যায় তার থেকেই কাশি হয়ে থাকে।

সমাধান- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দু-তিন কোয়া রসুন চিবিয়ে খান। রসুনে আন্টি ব্যাকটিরিয়াল ও অ্যান্টি ফাংগাল উপাদান শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখে, রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

৩) বমি

মানব দেহের শরীরের পরিপাক তন্ত্র সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে, খাবার হজম না হলে, বদ হজম হলে, অ্যাসিড হলে অনেক সময় বমি হয়ে থাকে, আবার অতিরিক্ত ক্লান্তি , মাইগ্রেনের ব্যাথা, বদ্ধ জায়গায় শ্বাস নিতে কষ্ট হলে ও অনেক সময় গ্যাস থেকেও বমি হয়ে থাকে।  পাকস্থলী থেকে মস্তিষ্কে  নানা উৎসজাত কারনে বমির প্রভাব দেখা যায়। বেশিরভাগ সময় বদহজম সমস্যার জন্য প্রধান কারন হলেও কিন্তু ব্যাতিক্রমও থাকে যেমন কোথাও সজরে আঘাত লাগার ফলে বমি হয়ে থাকে।  

সমাধান- বমির সমস্যা থাকলে হাতের কাছে সর্বক্ষন লবঙ্গ রাখুন, আর একটি করে জীবের তলায় দিয়ে রাখুন। এক লেবু পাতিলেবু  শুধুও খেতে পারেন আবার এক গ্লাস উষ্ণ গরম জলে লেবু মিশিয়ে খান। বমি বমি ভাব থেকে নিষ্পত্তি ঘটবে।

 

৪) পেটখারাপ

বেশীর ক্ষেত্রেই বদ হজম ও অতিরিক্ত পরিমাণে বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে হয়ে থাকে, আবার কখনও পেট গরম থেকেও হুয়ে থাকে, কখনও বেশী মশলাদার খাবার, অনেকদেরি করে খাবার খাওয়া, ক্যাফিনযুক্ত পানীয় সেবন, অতিরিক্ত ধূমপান, দুষিত জল খাবার ফলেও  পেটখারাপ হয়ে থাকে।

সমাধান- পেট খারাপ হলে মশলাদার খাবার একেবারেই কমিয়ে দিতে হবে। কাঁচা কলা, সেদ্ধ খাবার, পেপে সিদ্ধ, জ্যন্ত মাছের ঝোল খান। পারলে জলের মধ্যে জিরে গুঁড়ো মিশিয়ে খান খুব তাড়াতাড়ি ফল পাবেন।

৫) মাথাধরাঃ

 মাথাধরা অনেক কারনেই হতে পারে, মাইগ্রেনের থেকে, গ্যাস থেকে, উচ্চচাপ থেকে,  অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার ফল, সাইনাসের সমস্যা থাকলে, অনেকক্ষন ধরে চোখের উপর চাপ বাড়লে, চোখের পাওয়ার বাড়লে  মাথা ধরার সমস্যা দেখা যায়।

সমাদান- নিজেকে চাপমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন, আদা চা খান। আদাতে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন সিন্থেসিস থাকে যা ব্যাথানাশক হিসেবে কাজ করে।

সবর্ক্ষন নিজেকে সতেজ , ফুরফুরে রাখর চেষ্টা করুন, প্রতিদিন প্রাতঃভ্রমনে যান। যোগা করুন। নিজেকে চাপমুক্ত রাখুন। নিজেকে যত চাপমুক্ত রাখতে পারবেন আপনি তত সুস্থ থাকবেন। যত পারবেন ঘরোয়া উপায়ে রোগের সমাধান করুন।