ব্লু হোল কি ? আগে নাম টি শুনেছেন ? যারা প্রথম বার শুনলেন, তাদের একটু খটকা লাগছে নিশ্চই ?এটা কি ? নিশ্চয়ই ব্ল্যাক হোল এর মত কিছু একটা হবে হয়ত ! কিন্তু আপনাকে আগেই জানিয়ে রাখি আপনি যদি এরম ভেবে থাকেন তাহলে আপনি কিন্তু ভুল ভাবছেন । ব্যাপারটা একদমই সেরকম না। এটি আমাদের পৃথিবীতেই অবস্থিত এবং মোটেই ব্ল্যাক হোল এর মত বিপদজনক কিছু না। ডুব সাঁতারের জন্য এই ব্লু হোল খুবই জনপ্রিয় একটি স্থান। চলুন তবে এবার দ্য গ্রেট ব্লু হোল সম্পর্কে আজ জেনে নি আমরা।

ব্লু হোল
photo source : lonely planet

ব্লু হোলের উৎপত্তি :

ধারনা করা হয় ৬৫ হাজার বছর আগে পৃথিবীতে শেষবারের মতো যখন বরফ রাজত্ব করত , পৃথিবীর সব জল তখন জমে জমে বরফ হতে জড়ো হয়েছিল মেরু অঞ্চলে। সমুদ্রপৃষ্ঠও তাই তখন ছিল এখনকার চেয়ে অনেক নিচুতে। বেলিজে তখন সমুদ্রপৃষ্ঠ ছিল এখনকার চেয়েও আরো ১৫০ মিটার নিচুতে। তখন ক্যালসিয়াম কার্বনেট জাতীয় পদার্থ জমে তৈরি হয় পাথর। আর সেই পাথর দিয়ে সৃষ্টি হয় কেভের বিশাল কাঠামো। কিন্তু যখন বরফ আবার গলতে শুরু করে, সাগরের পানির উচ্চতাও বাড়তে শুরু করল। জলের নিচে ডুবে যায় সেই কাঠামো। মোটামুটি আজ থেকে ১০ হাজার বছর আগে পুরো কেভ নেটওয়ার্কই একেবারে জলের নিচে ডুবে যায়। আর তখনই কয়েক জায়গার পাথর ভেঙে সৃষ্টি হয় এই ব্লু হোলগুলো।বেলিজ উপকূলে অবস্থিত একটি বৃহৎ সমুদ্রগর্ভস্থ গর্ত। উপর থেকে দেখলে মনে হবে এ যেন এক বিস্ময়কর চোখ। ব্লু হোলগুলো মূলত একটি বিশাল কেভ নেটওয়ার্কের প্রবেশদ্বার।

belize great blue hole
Photo source : Newsweek

বেলিজের বেরিয়ার রিফ রিজার্ভ সিস্টেম অবস্থিত, এটি বেলিজ সিটি থেকে প্রায় ৬০ মাইল দূরে। এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র গর্ত হিসাবে বিশ্বাস করা হয়। এটির আকৃতির বৃত্তাকার, ব্যাসার্ধ ৩০০ মিটার (৯৮৪ ফুট) এবং ১২৪ মিটার (৪০৭ ফুট) গভীরে। স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ পানির ১২৫ মিটার গভীরে ৩১০ মিটার চওড়া এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এলাকাটি ডাইভারদের জন্য অসাধারণ একটি এলাকা। বেলিজ এর প্রবাল প্রাচীর গুলো ১৯৯৬ সালে UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বেলিজের সাতটি বিখ্যাত প্রবাল প্রাচীরের মধ্যে লাইটহাউজ প্রাচীরটির কেন্দ্রে এটি অবস্থিত।ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় নাম তুলেছে গ্রেট ব্লু হোল (Great Blue Hole)। বিশ্বের জনপ্রিয়তম স্কুবা ডাইভিং ডেস্টিনেশন এই ব্লু হোল।

AdobeStock 105646939 1068x712 1
Photo source : deeper blu.com

বিশ্বের সবচেয়ে গভীর ব্লু হোল ৩০০.৮৯ মিটার (৯৮৭ ফুট) গভীরে দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থিত। এটির নাম দেওয়া হয়েছে ড্রাগন হোল বা লংডং । ২০২ মিটার (৬৩৬৩ ফুট) জলের তলদেশের প্রবেশপথ সহ বিশ্বের দ্বিতীয় গভীরতম ব্লু হোল হল ডিনের ব্লু হোল। এটি বাহামাসের লং আইল্যান্ডের ক্লারেন্স টাউনের পশ্চিমে অবস্থিত। অন্যান্য নীল গর্তগুলি র গভীরতার প্রায় ১০০-১৫০মিটার (৩৩০-৩৯০ ফুট)। শীর্ষ প্রবেশদ্বারের ব্যাস 25-25 মিটার (৮২-১৫৫ফুট)।

0vOd9bTy4492BjBGp
Photo source : Medium

স্কুবা ডাইভারদের মধ্যে এটি একটি জনপ্রিয় জায়গা। তাছাড়া পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও এই জায়গাটি বেশ বিখ্যাত । পর্যটকরা স্ফটিক-স্বচ্ছ জলে ডুব দেওয়ার এবং মধ্যরাতের প্যারোটফিশ, ক্যারিবিয়ান রিফ হাঙ্গর এবং অন্যান্য কিশোর মাছের প্রজাতি সহ বেশ কয়েকটি প্রজাতির মাছের দেখা পাওয়ার লোভে আসেন। অন্যান্য প্রজাতির হাঙ্গর, যেমন ষাঁড় হাঙ্গর ইত্যাদি সেখানে দেখা গেছে । তবে নিয়মিত দেখা যায়না। সাধারণত, গ্রেট ব্লু হোলের ট্রিপগুলি বেলিজের উপকূলীয় পর্যটক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ফুল-ডে ট্রিপ হয়। তাহলে, আর দেরি কিসের ! সময় পেলেই চট করে ছুটি কাটিয়ে আসুন ব্লু হোলে।

আরও পড়ুন ,https://www.banglakhabor.in/কলকাতার-সেরা-5টি-হসপিটালে/amp/?