সকালে আর্লাম বাজার সাথে সাথে সেটা কে অফ করে আরও ১০ মিনিট ঘুমিয়ে নি বলাটা সকলেরই অভ্যাস। ঐ ১০ মিনিটের ঘুম অনেক শান্তি এনে দেয়  প্রত্যেকের জীবনে। আবার কারোর ক্ষেত্রে সেই ১০ মিনিট যে কখন ৩০ মিনিটে পরিনত হয় তা হয়তো নিজেরাই জানে না। সকাল হতেই তারপর শুরু হয় জীবনের ব্যস্ততা যা সময়ের সাথে সাথে চলতেই থাকে আর শেষ হয় না। কিন্তু ঘুম থেকা উঠে ব্যস্ততার জগতে পা দাওয়ার আগে অবধি মানুষ অনেক কাজ করে থাকেন। যেমন চোখ রগড়াতে রগড়াতেই ফোনটা হাতে নিয়ে ঘাটাঘটি করা। বা ঘুম থেকে উঠেই দৌড়াদৌড়ি করা, টিফিন না করেই কাজের জন্য বেরিয়ে পড়া। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন এই ধরনের কাজ আপনার জীবনে সত্যি উপকারী তো নাকি ডেকে আনছে কোন অশনিসংকেত যা আপনার অগোচরে ঘটছে। তাই ঘুম থেকে উঠে এমন কিছু করা উচিৎ না যা আপনর ভবিষ্যতকে বিপদের কাঠগোড়ায় না দাড় করিয়ে দেয়।

তাড়াহুড়ো  করে ঘুম থেকে উঠবেন না

আমরা অনেক সময় আচমকা ঘুম থেকে উঠে যাই, বা কোথাও কোন আওয়াজ পেলে ধড়পড় করে উঠে বসি, বা হঠাৎ করে ঘুম থেক উঠে ঘড়ির কাঁটায় চোখ গেলে খেয়ল পড়া অনেক দেরি হয়ে গেছে। এই সকল কারনবশত কেউ কেউ তাড়াহুড়ো করে ঘুম থেকে ওঠেন। দুম করে উঠে বসে আবার হাঁটাচলাও  করে থাকে। কিন্তু এই আচমকা শোয়া থেকে উঠে বসার কারনে পায়ে রক্ত তৎক্ষণাৎ পৌছতে পারে না। ফলে স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে পারে না। অনেক সময়রক্ত চাপ হুট করে আশঙ্কাজনকভাবে কমে যেতে পারে। এতে কিছুক্ষণের জন্য মাথা ঘোরানো বা বিহ্বলতার ভাব হতে পারে।আবার অনেক সময় শুকনো মাটিতে পড়েও যায়। এই রক্তচাপ বেশী কমে গেমে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

অন্ধকার পরিবেশে থাকবেন না

ঘুম থেকে ওঠার পর হটাৎ করে চোখে সুর্যের আলো পড়লে অনেকেই অস্বস্তি হয়ে থাকে। কারন তখনো চোখ থেকে ঘুমের রেশ কাটে না। আবার কারোর মনে হয় অন্ধকার থেকে হটাৎ আলোর পরিবেশে গেলে এতে চোখের ক্ষতসাধন হতে পারে কিন্তু ধারনাটি সম্পুর্ণ ভুল। সকাল বেলায় সুর্যের কিরন শরীরে পড়া স্বাস্থ্যের জন্য প্রচন্ড উপকারী। এতে শরীরে ভিটামিন- ডি এর অভাব পুরণ হয়। এছাড়াও মানুষের শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়ির সময় নির্ধারিত হয়। সুর্যিমামার দর্শনে আপনার ঘুম সঠিক সময়ে হয় এবং হজমপ্রক্রিয়া ভালোমতো ঘটে।

স্যোশাল মিডিয়াতে মত্ত হবেন না

স্যোশাল মিডিয়াত বর্তমানে আমাদের দৈনিক জীবনের অভ্যাসবশত অধ্যায়। গোটাদিন কাজের সূত্রে হোক কিংবা পরিবেশের সাথে জগতের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য আমরা ঘুম থেকে উঠেই নিউজ ফিড , ই-মেইল দেখতে বসি।  কিন্তু ঘুম থেকে উথেই এই কাজ গুলি করার ফলে আমাদের মস্তিষ্কে চাপ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। এই চাপের ফলে গোটা দিন খারাপ যেতে পারে। তাই সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর কয়েক ঘণ্টা ই-মেইল বা ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ  না দেখাই শ্রেয়। এতে মন প্রশান্ত থাকে ও ধীরে ধীরে কর্মব্যস্ত দিনের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারা যায়। 

খালি পেটে গোটা দিন অতিবাহিত করবেন না

অনেকেরই ঘুম থেকে উঠে খাবার রুচি থাকে না, অনেকে আবার রোগা হওয়ার উপলক্ষ্যে সকালের জলখাবার স্কিপ করে যান একবারে ব্রাঞ্চ করেন , অনেকে অফিসের তাড়াহুড়ো বা কোথাও যাওয়ার জন্য না খেয়েই বড়িয়ে যান। আবার অনেকের সকালে জলখাবারের কোন পালাই থাকে না। কিন্তু এই বিষয়টা অত্যন্ত ক্ষতিকর আপনার শরীরের স্বার্থে। সকাল বেলায় অনেকক্ষন খালি পেটে থাকার ফলে শরীরে পিত্তি জন্মে, গ্যাস হয় যার ফলে পেট ফুলে যায়, এবং যারা রোগা হওয়ার জন্য খাবার স্কিপ করেন তারা উল্টে আরও গ্যাসে ফুলে যান।  এছাড়া ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও  থাকে। কাজেই সকাল শুরু করুন একটি স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট  দিয়ে  আর সারা দিন  ফুরফুরে  মেজাজে থাকুন।

দাঁত না মেজে প্রাতঃরাশ সারবেন না

ঘুম থেকে উঠে কেউ কেউ দাঁত না মেজেই প্রাত্যহিক কাজ করা শুরু করে দেন। কারও আবার ঘুম থেকে উঠেই কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে। কিন্তু সকালে উঠেই না মাজলে দাঁতে টারটার নামের এক ধরনের পদার্থ জমা হতে শুরু করে। এসব থেকে মুখের দুর্গন্ধ, ক্যাভিটিজ ও দাঁতের অন্যান্য রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তা ছাড়া কফি পানের পরপরই দাঁত ব্রাশ করা উচিত নয়। কারণ কফিতে থাকা অ্যাসিড দাঁতের এনামেলকে দুর্বল করে দেয়। কফি খাওয়ার পর পরই ব্রাশ করলে এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও সকালে দাঁতে অনেক ব্যক্টেরিয়া থাকে যা পেটের মধ্যে গিয়ে অনেক অসুখ বাধাতে পারে । তাই কফি বা লেবুর শরবত , বা কোন খাবার খাবার আগে  অন্তত ৩০ থেকে ৬০ মিনিট পর দাঁত মাজা উচিত।

2 COMMENTS