মুসলিমরা কি হিন্দু অনুষ্ঠানের অংশীদারী হতে পারে না? কেন আজও এই কট্টর নিয়ম বলতে পারেন?

ভারতবর্ষ বহু ধর্ম ও জাতির মিলিত একটি দেশ। এত ধর্মের মধ্যেও হিন্দু ও মুসলিম এই দুই ধর্মের আঁতাত চিরকালের। তবু এই দুই ধর্মের মানুষই ধর্মীয় বিদ্বেষ ভুলে একে অপরের সুখ দুঃখের সাথী হিসেবে থাকার ইতিহাসগত প্রমাণ মেলে সপ্তম শতাব্দীর সময় থেকে। ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যেও ধর্মের গরিমা মানবিকতার থেকে উপরে ছিল না। ব্রিটিশ এদেশে আসার পর চিত্রতে বেশ খানিকটা রদ বদল হলেও আজও অনেক ক্ষেত্রেই আচার অনুষ্ঠানে কট্টর বৈষম্য হ্রাস পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে
https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcSWAa56x2IOJ_h8M8mfGnlRoYQCmiU9V15efg&usqp=CAU

যে কোনও ধর্মেরই নিজস্ব রীতি,নীতি, আচার রয়েছে। কিন্তু প্রতি ধর্মেরই মূল কথা হল সর্বশক্তিমানকে আরাধনা করা ও আর্তে‌র প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। হিন্দু ও মুসলিম দুই ধর্মের মধ্যেই বেশ কিছু সাদৃশ্য দেখা যায় যেমন – হিন্দু ও মুসলিম দুই ধর্মেই উপবাস থাকার ও তীর্থে যাওয়ার প্রচলন আছে। বৈসাদৃশ্যও কিছু কম নয় – পশু বলি, ধর্ম ত্যাগ, নিরামিষ আহার ভক্ষণ, অধার্মিক কথা আলোচনা, সুন্নৎ, নিজ বংশে বিয়ে প্রভৃতি।

অনুষ্ঠানে
https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcQERG9IXwOR6o4AMjnN76Wt8noi3IrkqSwiTg&usqp=CAU

দুই ধর্ম ছাড়াও বৈসাদৃশ্য রয়েছে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মের অন্তর্বর্তী ক্ষেত্রেও। অনেক আচারেই হিন্দুরা হিন্দু ধর্মের হয়েও অংশ নিতে পারে না জাতিগত ভেদাভেদের কারণে। লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে আবার মুসলিম ধর্মাবলম্বী মহিলারা তাদের ধর্মের সব অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারে না। ( https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcQERG9IXwOR6o4AMjnN76Wt8noi3IrkqSwiTg&usqp=CA )

একবিংশ শতাব্দীর যুগে হিন্দু ও মুসলিম উভয় ধর্মের আচার অনুষ্ঠানে যে অন্তর্বর্তী কট্টর বৈষম্য ছিল তা হ্রাস পেলেও পরস্পরের ধর্মের প্রতি উদারতা এখনও আসেনি। আধুনিকতার ছোঁয়া মানুষের বুদ্ধির চোখকে উন্মীলিত করেছে খানিকাটা হলেও। তারা ধর্মের কোমলতাকেও বুঝতে শিখেছে। হিন্দু, ‌ধর্মে পুজোয় যে কাঁসার বাসন ব্যবহার করা হয় তা বানানোর কারিগরদের একাংশ মুসলিম ধর্মেরই মানুষ। ভারতবর্ষে এমন কিছু হিন্দু মন্দির আছে যেখানে ঠাকুরের ভোগ রান্না করে থাকে মুসলিম ধর্মের মানুষেরা। এমন অনেক মুসলিম দরগা আছে যেখানে হিন্দুরা মিলে চাদর চড়ানোর আচার পালন করে থাকে।

https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcRnkIIvHRRCwNXALsvKjMotHxkyoAhcO2NVrw&usqp=CAU

আমরা মুখে সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিলেও রোষে ফেটে পড়ি যদি আমাদের ধর্ম অনুষ্ঠানে ভিন্ন ধর্মের কেউ এসে উপস্থিত হয়। মুসলিম ধর্মের অভিনেত্রী নুসরত জাহান যখন হিন্দু পুজোয় আসে তখন কট্টর হিন্দুত্ববাদীরাই নয় রোষে ফেটে পরে মৌলবাদীরাও। যার প্রমাণ পাওয়া যায় এই বছরের কালীপুজোয় বাংলাদেশের ক্রিক্রেট খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান কোলকাতায় এলে। কোলকাতার কাঁকুড়গাছিতে কালিপুজোর উদ্বো‌ধনে আসার কারণে হিংসার পরিবেশ এমন আকার ধারণ করে যে সাকিবকে খুনের হুমকি দেওয়া হয় যার পরিপ্রেক্ষিতে সাকিবকে ক্ষমা পর্যন্ত চাইতে হয়।

“I consider myself a proud Muslim, I offer my apology if I have hurt your sentiments. There was no intention to show my own religion in poor light. I believe Islam is a religion of peace. I always try to follow every custom of Islam. Yes, we do make mistakes but I try to learn from them in order to become a better Muslim,” 

https://indianexpress.com/article/sports/cricket/shakib-al-hasan-gets-death-threat-from-fundamentalist-7054507/

https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcRRIio4di6Ir9dLwYZqKsgeJFk9RCWO2KK0sQ&usqp=CA

images?q=tbn:ANd9GcRRIio4di6Ir9dLwYZqKsgeJFk9RCWO2KK0sQ&usqp=CAU
https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcRRIio4di6Ir9dLwYZqKsgeJFk9RCWO2KK0sQ&usqp=CAU

হুমকি দাতাকে পরে বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এই পরিণাম কি কাম্য? একজন মানুষের ধর্মের অনুষ্ঠান, আচার পালনের সময় কেন অন্য একটি মানুষের উপস্থিতি কেন অনভিপ্রেত হবে? ব্রাত্য কেন হবে কেউ? ধর্ম হোক ব্যাক্তি বিশেষের কিন্তু সেই ধর্মকে ঘিরে উৎসব সকলের। মুসলিমরা যেমন হিন্দু অনুষ্ঠানের অংশীদার হবে তেমনই হিন্দুরাও হোক মুসলিম ধর্মানুষ্ঠানের অংশ। সকলের ধর্মানুষ্ঠানেই হোক সকলের অংশীদারিত্ব।

https://www.banglakhabor.in/%e0%a6%86%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%ad%e0%a7%8b%e0%a6%9f%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ab%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ab%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%a4/