খাবার দেখলে কোন মানুষের জিভে না জল আসে! বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন রকমের খাবার এর প্রতি ভালোবাসা থাকে। তবে দিন কে দিন খাবারের অভ্যাস মানুষের পাল্টাচ্ছে। পুরানো দিনে মানুষ জলখাবার-এ লুচি-আলুর দম খেত প্রতিদিন।
কিন্তু বর্তমানে মানুষের হাতে অত সময় না থাকায় তারা চটজলদি খাবার এর দিকে বেশি ঝুঁকছে। তাই বিভিন্ন রকমের অফবিট খাবার এর আমদানি হচ্ছে প্রতিদিনের রুটিনে। চলুন সেই রকম অফবিট কিছু খাবার এর সন্ধান আজ আপনাদের দিই।
দেখে নিন 10 টি অফবিট খাবার যেগুলি ঢুকে পড়ছে প্রতিদিনকার রুটিনে—
ওটস:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 1 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/oats-1296x728-feature-1024x575.jpg)
প্রতিদিনকার জল খাবারের তালিকায় জায়গা করে নিতে শুরু করেছে ওটস। লুচি আলুরদম এর স্বাদ ভুলে বাঙালি স্বাস্থ্যকর খাবার ওটস এর দিকে ঝুঁকেছে।
ওট (আভেনা স্যাটিভা), যা কখনও কখনও সাধারণ ওট নামে পরিচিত, এটি বীজের জন্য উত্থিত এক ধরণের সিরিয়াল শস্য, যা একই নামে পরিচিত। ওটমিল ও ওট মিল্ক হিসাবে ওটস মানুষের ব্যবহারের উপযোগী, তবে সর্বাধিক সাধারণ ব্যবহারগুলির মধ্যে একটি হ’ল লাইভস্টক ফিড। ওটস নিয়মিত সেবন করলে লো রক্তের কোলেস্টেরল ঠিক থাকে।
বার্লি:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 2 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/barley-grains-in-a-wooden-bowl-1024x640.jpg)
পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বার্লিও আমাদের প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকা ঢুকে পড়েছে। বার্লি অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখতেও সক্ষম তাই সকালের জলখাবার বা দুপুরের খাবার হিসাবে এটির জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘাসেদের পরিবারের সদস্য বার্লি (হার্ডিয়াম ভলগারে) হ’ল বিশ্বব্যাপী নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় উত্থিত একটি প্রধান সিরিয়াল শস্য। বিশেষত ইউরেশিয়ায় 10,000 বছর আগে এটি প্রথম চাষ করা শস্যগুলির মধ্যে একটি ছিল। বার্লি প্রথমদিকে পশুর খাদ্য হিসাবে, বিয়ার এবং কিছু নির্দিষ্ট পাতিত পানীয়ের জন্য দ্রবণীয় উপাদানের উৎস হিসাবে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর খাবারের উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
এটি স্যুপ এবং স্টিউ এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির বার্লি রুটিতে ব্যবহার করা হয়। ঐতিহ্যবাহী এবং প্রাচীন প্রস্তুতির পদ্ধতিতে বার্লি শস্যগুলি সাধারণত মাল্টে তৈরি হয়। এই বার্লিই এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে অফবিট খাবার এর তালিকায় নতুন করে জায়গা করে নিতে শুরু করেছে।
কর্নফ্লেক্স:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 3 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/905783_tabitharwheeler_042865b6-b05a-413e-863a-952875e3378e-1024x768.jpg)
বর্তমান যুগে মানুষের হাতে সময় বড্ড কম। গতিময়তার যুগে তাল মেলাতে মানুষ প্রায় সারাক্ষণই ছুটে চলেছে। তাই সহজে হয়ে যায় এমন কিছু খাবার তারা খেতে পছন্দ করে কিন্তু সেই খাবারে সাথে সাথে পুষ্টিকর গুণগুলিও খোঁজে। তাই সহজে হয়ে যায় এমন এক খাবার হল কর্নফ্লেক্স যা এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে পাওয়া যায়।
কর্নফ্লেকস, একটি প্রাতঃরাশের খাবার যা টোস্টিং ফ্লেকের ভুট্টা থেকে তৈরি। মূলত গম দিয়ে তৈরি খাবার টি 1894 সালে তার ভাই জন কেলোগের জন্য তৈরি করেছিলেন উইলিয়াম কেলোগ। জন কেলোগ এমন একটি খাবার চেয়েছিলেন যা মিশিগানের ব্যাটল ক্রিক সানিটারিয়ামের রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর, যেখানে তিনি সুপারিনটেনডেন্ট ছিলেন।
প্রাতঃরাশের খাবার টি রোগীদের মধ্যে জনপ্রিয় প্রমাণিত হয়েছিল, তবে উইল কেলোগ জনপ্রিয়তা বাড়াতে চিনি যুক্ত করতে চেয়েছিলেন। এই অফবিট খাবার কর্নফ্লেক্স এখন জনপ্রিয় প্রাতরাশ হিসাবে ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে।
বিরিয়ানি:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 4 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/ambur-biryani-1024x683.jpg)
অফবিট খাবার যা এখন মানুষের প্রতিদিনকার খাবারে রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে সে রকম একটি জনপ্রিয় খাবার হল বিরিয়ানি। গত কয়েক বছরে জনপ্রিয় খাবারের তালিকায় প্রথমে রয়েছে বিরিয়ানি। বাঙালিরা এই মোঘলাই খাবারে মজেছেন।
বিরিয়ানি হল ভারতীয় উপমহাদেশের এক জনপ্রিয় খাবার। এটি ভারতীয় মশলা, ভাত এবং মাংস (মুরগী, গো-মাংস, ছাগল, শুয়োরের মাংস, ভেড়ার বাচ্চা, চিংড়ি, বা মাছ) বা শাকসবজি এবং কখনও কখনও কিছু নির্দিষ্ট আঞ্চলিক জাতের ডিম এবং আলু দিয়ে তৈরি করা হয়।
বিরিয়ানি সমগ্র ভারত উপমহাদেশে পাশাপাশি প্রবাসীদের মধ্যেও জনপ্রিয়। এটি আফগানিস্তান, ইরান এবং ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চলেও প্রস্তুত হয়। এটি এমন একটি অফবিট খাবার যা দক্ষিণ এশীয় জায়গাতেও নিজের স্থান করে নিয়েছে।
পাস্তা:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 5 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/Tuscan-White-Bean-Pasta-bowl.jpg)
বাচ্চাদের টিফিন হোক কিংবা সন্ধ্যেবেলার স্ন্যাকস পরোটা-আলু ভাজার জায়গায় উঠে আসে এখন পাস্তা এর নাম। পাস্তা খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। এটি একটি অদ্ভুত খাবার যা বর্তমানকালের প্রায় প্রত্যেক মানুষই খেতে পছন্দ করেন।
পাস্তা এক ধরণের খাবার যা সাধারণত ময়দার/ গমের আটা থেকে জল বা ডিমের সাথে মিশ্রিত করা হয় এবং বিভিন্ন ধরনের আকারে তৈরি করা হয়। এগুলি ফুটন্ত বা বেকিং অবস্থার দ্বারা রান্না করা।
চালের ময়দা, বা শিম বা মসুরের মতো জিনিস গুলি কখনও কখনও গমের ময়দার জায়গায় আলাদা স্বাদ এবং টেক্সচারের জন্য ব্যবহার করা হয়, বা আঠালো-মুক্ত বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পাস্তা ইতালিয়ান খাবারের একটি প্রধান খাদ্য হলেও এখন প্রায় প্রত্যেক বাঙালি কিংবা ভারতীয়দের ঘরে ঘরে জায়গা করে নিয়েছে অফবিট খাবার হিসাবে।
নুডুলস:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 6 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/hot-dry-noodles-11.jpg)
রুটি-মুড়ির জায়গা নুডুলস অনেকদিনই কেড়ে নিয়েছে। তবে দিনের পর দিন এই খাবার এর ব্যবহার আরও বেড়েই চলেছে। বাচ্চা থেকে বড় অনেকেই তাদের টিফিনে নুডুলস খেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যদিও এটি স্বাস্থ্যকর খাবার নয় তাও মুখের তাগিদে সকলেই নুডুলস খেতে ভালোবাসেন।
নুডলস হ’ল ময়দা থেকে তৈরি এক ধরণের খাবার যা সমতল এবং কাটা, প্রসারিত বা এক্সট্রুড, লম্বা ফালা বা স্ট্রিংগুলিতে পরিণত হয়। নুডলস স্বল্প-মেয়াদী সঞ্চয়স্থানের জন্য ফ্রিজ করা যায় বা শুকনো এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
নুডলস সাধারণত ফুটন্ত জলে রান্না করা হয়, কখনও কখনও রান্নার তেল বা লবণ যুক্ত করা হয়। এগুলি প্রায়শই প্যান-ফ্রাইড বা গভীর-ভাজা হয়। নুডলসের থালাগুলি একটি সস অন্তর্ভুক্ত করতে পারে বা নুডলসকে স্যুপে রাখা যেতে পারে। ভূ-সংস্কৃতি উৎস নুডলস বিভিন্ন ধরণের হয়।
স্যান্ডউইচ:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 7 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/Corn-Sandwich.jpg)
সন্ধ্যেবেলার খাবার হিসাবে স্যান্ডউইচ বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় একটি অফবিট খাবার। স্যান্ডউইচ বানাতেও কম সময় লাগে এবং খেতেও হয় খুবই সুস্বাদু। কিছু কিছু স্যান্ডউইচ পুষ্টিকর ও হয়।
স্যান্ডউইচ, তার মূল আকারে, মাংস, পনির বা অন্য খাবারের টুকরোগুলি দু’টি রুটির টুকরোর মধ্যে রাখা। যদিও খাওয়ার এই পদ্ধতিটি অবশ্যই মাংস এবং রুটির মতো পুরানো হতে পারে তবে নামটি 18 তম শতাব্দীতে স্যান্ডউইচের চতুর্থ আর্ল জন মন্টাগুর জন্য গৃহীত হয়েছিল। এই স্যান্ডউইচ বর্তমানে ভারত কিংবা বাঙালির ঘরে ঘরে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
পিৎজা:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 8 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/6-Ways-to-Make-Pita-Pizzas-683x1024.jpg)
বাচ্চা থেকে বড় পিৎজা খেতে পছন্দ করেনা এরকম মানুষ বোধহয় হাতেগোনা! ইতালিয়ান খাবার হলেও বর্তমানে পিৎজা বাঙালির কাছে খুবই প্রিয় একটি অফবিট খাবার। যদিও পিৎজার কোন পুষ্টি গুণ নেই কিন্তু এই খাবারের নাম শুনলেই মুখে জল চলে আসে।
পিৎজা হলো এক ধরনের ইতালিয়ান খাবার যা ময়দা থেকে তৈরি হয়। এটি মূলত গোল হয় এবং উপরের পরিবাগ হয় সমতল, ময়দার তৈরি এই পিৎজার উপর দেয়া হয় টমেটো, চিজ এবং আরও বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন (মাশরুম, পেঁয়াজ, আনারস, জলপাই, মাংস ইত্যাদি)। যা পরে উচ্চ তাপমাত্রায় বেক করা হয়, ঐতিহ্যগতভাবে কাঠের চালিত উনানেও বেক করা হয়।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 9 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/easy-french-fries-1-813x1024.jpg)
বাচ্চাদের অতি প্রিয় খাবার হল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। একে আলুভাজাও বলা চলে কিন্তু তার থেকে কিছুটা হলেও আলাদা। এই অফবিট খাবার এর পুষ্টিগুণ একদমই নেই কিন্তু এটি খুবই মুখরোচক।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই গরম পরিবেশন করা হয়, হয় নরম বা খাস্তা, এবং সাধারণত দুপুরের খাবার বা রাতের খাবারের অংশ হিসাবে বা একটি নাস্তা হিসাবে নিজেরাই খাওয়া হয় এবং এগুলি সাধারণত ডিনার, ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ, পাব এবং বারগুলির মেনুতে উপস্থিত হয়।
এগুলি সাধারণত নুনযুক্ত করা হয় এবং দেশের উপর নির্ভর করে কেচাপ, ভিনেগার, মেয়োনিজ, টমেটো সস বা অন্যান্য স্থানীয় বৈশিষ্ট্য সরবরাহ করা যেতে পারে। এটি একটি গভীরভাবে ভাজা জিনিস যা একেবারেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
ডোনাট:–
![10 টি অফবিট খাবার যা ইদানিং জায়গা করে নিচ্ছে আমাদের রুটিনে 10 অফবিট খাবার](https://www.banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/Preview-Doughnuts-for-Dad-10.jpg)
খাবার খাব কিন্তু একটু মিষ্টি হবে না তা কি কখনো হয়? তবে চিরাচরিত মিষ্টির জায়গায় এখন ডেজার্ট হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ডোনাট। বাচ্চা থেকে বড় সবাই ডোনাট-এ মজেছেন। বলা হয় চিরাচরিত মিষ্টি খেলে স্বাস্থ্য সম্মত থাকা যায় না কিন্তু ডোনাট-এ নাকি অতটাও মিষ্টি নেই।
ডোনাটগুলি সাধারণত ময়দা থেকে গভীর ভাজা হয়ে থাকে এবং সাধারণত তা কোনও রোল-শেপড বা কোনও গর্ত ছাড়াই বেশ কয়েকটি আকারের হয় এবং প্রায়শই ভরাট হয় তবে এটি বলের আকারের (“ডোনাট হোল”) হতে পারে।
অন্যান্য ধরণের ব্যাটারও ব্যবহার করা যেতে পারে এবং বিভিন্ন টপিংস এবং গন্ধগুলি বিভিন্ন ধরণের জন্য যেমন চিনি, চকোলেট বা ম্যাপেল গ্লেজিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। ডোনাটসের মধ্যে জল, মাখন, ডিম, দুধ, চিনি, তেল, সংক্ষিপ্তকরণ এবং প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম স্বাদ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
কি! আপনার ঘরে কোন অফবিট খাবার প্রতিদিনকার রুটিনে জায়গা করে নিয়েছে? উপরিউক্ত কোন খাবার আপনার ঘরে কি জায়গা করতে পেরেছে না পারেনি? জানান আমাদের নিচের কমেন্ট বক্সে।
[…] […]