ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে ক্রিসমাসের ২২ দিন আগে এই দিন টি পালিত হয়। ক্রিসমাসের সময় খ্রিস্টানদের বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এই অনুষ্ঠানগুলোকে আরো সুন্দর ও আরো মনোরঞ্জন করে তোলার জন্য গান-বাজনার আয়োজন বহু শতাব্দী আগে থেকে করা হয়ে আসছে। এই গান বাজনার আসরে ভায়োলেন এক বিশাল ভূমিকা রেখে আসছে এবং এখনও সেটি বজায় রয়েছে।লোকমুখে শোনা যায় যে নয়ের দশকে প্রথম ভায়োলিন আবিস্কৃত হয়। সমগ্র বিশ্বজুড়ে এই বাদ্যযন্ত্রটিকে অত্যন্ত ভালোবাসা ও সম্মান জানানোর জন্য 13 ই ডিসেম্বরকে ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে হিসেবে পালিত করা হয়। এই বাদ্যযন্ত্রটির আওয়াজ যতটাই না সুন্দর ঠিক ততটাই এটি বাজানো বেশ কষ্টসাধ্য। ঠিকভাবে বাজানোর জন্য এই বাদ্যযন্ত্রটি ভালোমতো শেখা অত্যন্ত জরুরী।
ভায়োলিনের ইতিহাসঃ
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 1 ভায়োলিন](https://www.connollymusic.com/hs-fs/hubfs/so-types-of-violins-bblog.jpg?width=760&name=so-types-of-violins-bblog.jpg)
ভায়োলিনের শুরু থেকেই ক্রিসমাসের সময় এই বাদ্যযন্ত্রটির চাহিদা খুব বেড়ে ওঠে। ভায়োলিন আবিষ্কারের সঠিক সময় কোন বৈজ্ঞানিক সঠিকভাবে বলতে পারেন না কিন্তু মনে করা হয় ভায়োলিন নয়ের দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয় এশিয়া বা ইউরোপে। আজ পর্যন্ত কেউই সঠিকভাবে বলতে পারেন না যে কে প্রথম ভায়োলিন তৈরি করেছিল। অনেকের মতে ভায়োলিনের চাহিদা সব থেকে বেশি বাড়ে পনেরোর দশকের ইতালিতে। উত্তর ইতালির শহর সেরিমোনাতে প্রথম ভায়োলিন তৈরি হয়েছিল। আনুমানিক 450 বছর আগে ভায়োলিন ঠিক যে রকম দেখতে ছিল তা আজও সেইরকমই রয়েছে কেবল মাত্র উচ্চতা কমে গেছে। আগে ভায়োলিন কেবল মাত্র এক রকমেরই পাওয়া যেত কিন্ত এখন ভায়োলিন বিভিন্ন রকমের, বিভিন্ন ধরনের পাওয়া যায়।
প্রথম ভায়োলিনেস্টঃ
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 2 ভায়োলিন](https://media.npr.org/assets/img/2017/05/08/violin-preference-1_wide-ab93c8e0c1cf656f6e3c78ec8e9b449e59d784df.jpg?s=1400)
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 2 ভায়োলিন](https://media.npr.org/assets/img/2017/05/08/violin-preference-1_wide-ab93c8e0c1cf656f6e3c78ec8e9b449e59d784df.jpg?s=1400)
আর্নাল্ড রোস বিশ্বের সর্বপ্রথম ভায়োলিনেস্ট ছিলেন। আর্নাল্ড শুধুমাত্র বিশ্বের সর্বপ্রথমই নন তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ইউরোপীয় ভায়োলিনেস্ট ছিলেন। তার ভায়োলিন বাজানোর দক্ষতা ধীরে ধীরে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ভিয়েনায় আর্নাল্ডের প্রতিভা দেখে ভিয়েনাবাসীরা তাকে “বাদ্যযন্ত্রের হৃদয় কারক” সম্মানে ভূষিত করে। আর্নাল্ড নিজের সমগ্ৰ জীবন সংগীতের নামে উৎসর্গ করেছিলেন। শুধুমাত্র উনি নন উনার মেয়েও একজন বিখ্যাত সংগীতশিল্পী হিসেবে পরিচিত। আজ ভায়োলিন একটি খুবই বিখ্যাত বাদ্যযন্ত্রে পরিনত হয়েছে।
বিশ্বের সর্বপ্রথম ভায়োলিনঃ
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 3 ভায়োলিন](https://d3el53au0d7w62.cloudfront.net/wp-content/uploads/2016/04/28/a01_jd_29apr_pine-2-640x427.jpg)
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 3 ভায়োলিন](https://d3el53au0d7w62.cloudfront.net/wp-content/uploads/2016/04/28/a01_jd_29apr_pine-2-640x427.jpg)
অনেকের মতে ভায়োলিনের আসল সৃষ্টিকর্তা আন্ড্রেয়া আমাতি। 1555 সালে আন্ড্রেয়া সর্বপ্রথম ভায়োলিন তৈরি করেন। এমনকি ইতালির সেরিমোনার থেকেও অনেক সুন্দর ও মজবুত ভায়োলিন তৈরি করতেন। দেখতে দেখতে আন্ড্রেয়ার সুন্দর ভায়োলিন সমগ্ৰ বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল ও ফ্রান্সের রাজার কানে খবরটি পৌঁছে যায়। ফ্রান্সের রাজা আন্ড্রেয়াকে আদেশ দেয় যে তিনি শুধুমাত্র তাঁর জন্যেই ভায়োলিন বানাবে। আন্ড্রেয়ার দক্ষতা দিন দিন বাড়তে থাকে ও তিনি একটি ভায়োলিন প্রস্তুত শেখানোর স্কুল তৈরি করেন। এই স্কুলে তার খুবই পছন্দের দুই ছাত্রের সন্ধান পান। দুইজনই পরবর্তী সময়ে বিশ্ব বিখ্যাত ভায়োলিন প্রস্তুতকারক হয়ে ওঠেন। একজনের নাম অন্ত্রনীয় সাতরাদিভারি ও আন্ড্রেয়া গোয়ারনারি। এই দুই ভায়োলিন প্রস্তুতকারক 17 ও 18 শতকে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। পুরনো সময়ের ভায়োলিন এখনও চাইলে আপনি পেয়ে যাবেন কিন্তু তার দাম এখন আকাশ ছোঁয়া।
পৃথিবীর সব থকে উন্নত মানের ভায়োলিনঃ
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 4 ভায়োলিন](https://storage.googleapis.com/afs-prod/media/media:fb8e211c27034cd48df7dff0277a5d1e/2000.jpeg)
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 4 ভায়োলিন](https://storage.googleapis.com/afs-prod/media/media:fb8e211c27034cd48df7dff0277a5d1e/2000.jpeg)
গোয়ারনারি ও সাতরাদিভারির তৈরি ভায়োলিন পৃথিবীর সবথেকে উন্নত মানের ভায়োলিন। প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করর পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে যে ভায়োলিনের ইতিহাসে এই দুইজনের মানুষের তৈরি ভায়োলিন বিশ্বের সবথেকে উন্নত মানের ভায়োলিন। তবে সঙ্গীতানুরাগী দের মতে সাতরাদিভারির ভায়োলিনের সুর একটু উচ্চমনের এবং গোয়ারনারির ভায়োলিনের সুর একটু নরম প্রকৃতির। কিন্তু দুরকম সুরই সঙ্গীত অনুরাগীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এই দুই রকম সুরের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন রকম অসাধারণ কিছু গান তৈরি করতে পেরেছেন। আজ ভায়োলিন সাধারণত খুবই সহজলভ্য একটি বাদ্যযন্ত্র পরিণত হয়েছে কিন্তু আজ থেকে বহু বছর আগে এই বাদ্যযন্ত্রটি বাজানো তো দূরের কথা এর অদ্ভুত আকৃতি দেখে যে কেউ ভিরমি খেয়ে পড়তে পারতো।
ভায়োলিনের গঠনাকৃতিঃ
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 5 ভায়োলিন](https://www.amromusic.com/assets/1942/violin-parts-diagram-labeled.jpg)
![জেনে নিন 13 ই ডিসেম্বর কেন ওয়ার্ল্ড ভায়োলিন ডে পালিত হয়। 5 ভায়োলিন](https://www.amromusic.com/assets/1942/violin-parts-diagram-labeled.jpg)
ভায়োলিন আগে অনেকটাই লম্বা প্রকৃতির ছিল তাই জন্য সঙ্গীত কারকদের সেটিকে সামলানো যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছিল। লেলিন এর গঠন আকৃতি লম্বা হলেও তাকে বাজানোর কায়দা তখনো যেরকম ছিল আজও সেই একই রকম রয়েছে। বদল এসছে কেবলমাত্র উচ্চতায়। আগে সঙ্গীত কারকদের দাঁড়িয়ে ভায়োলিন কে ধরে তবে সেটিকে বাজাতে হত কিন্তু এখন ভায়োলিন কে থুতনির কাছে ধরে বাজাতে হয়। আগেও ভায়োলিনে তিনটি তার ও একটি স্ট্রিং ছিল আজও তাই রয়েছে। আগে ভায়োলিন বাজানোর জন্য প্রচুর কায়দার প্রয়োজন পড়তো কিন্তু এখন আর প্রয়োজন পড়ে না। এই সময় দাঁড়িয়ে ভায়োলিন নানা রকম সুরের পাওয়া যায় না কিন্তু এখন সমস্ত রকমেরই সুরেরই মার্কেটে সব সময় পাওয়া যাচ্ছে।
ভায়োলিন আজও মানুষের মনের মধ্যে এক জায়গার সৃষ্টি করে রেখেছে। ভায়োলিনের সুর এতগুলো বছরেও মানুষের মনের মধ্যে এক আলাদাই ভাবনা জাগিয়ে তুলতে এখনও সক্ষম। ভায়োলিনের জাদু আজও মানুষের মনকে মাতিয়ে রেখেছে। ঠিক এই কারনেই ভায়োলিন বিশ্বের একটি বিখ্যাত ও জনপ্রিয় বাদ্যযন্ত্র। আজও ভায়োলিনের জনপ্রিয়তা কোনো অংশে কম হতে পারেনি ও পরেও কোনো অংশে কম হবে না।