
করোনা মানুষের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্থ করে তুলেও মানুষকে শিখেয়েছে কিছু বিষয়। যা আমাদের জীবনে পরবর্তী যেকোনো বাধা বিপত্তিকে জয় করতে কাজে লাগবে। সব কিছু জিনিসের মধ্যেই ভালো যেমন থাকে খারাপও তেমনভাবে থাকে। আজ খারাপ বিষয়কে দূরে সরিয়ে আমাদের প্রধান লক্ষণীয় বিষয় হলো এর থেকে আমরা কী কী শিখতে পারি । জীবনে প্রত্যেক মুহূর্ত থেকেই আমরা কিছু না কিছু শিখতে পারি কিন্তু আমাদের দৃষ্টিকোণ সব সময় থাকতে হবে ভালো শিক্ষার ওপর।
১.অর্থ সঞ্চয় :

করোনার ফলে আমাদের সব থেকে বড়ো যে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে তা হলো আর্থিক বিপদ। আমরা কেউই এই বিপদের সম্মুখীন হতে প্রস্তুত ছিলাম না কিন্তু আমাদের সম্মুখীন হতে হয়েছে যেভাবেই হোক। এই লকডাউনের ফলে মানুষ আর্থিক দিক থেকে একেবারেই ভেঙে পড়েছে। তাই করোনা আমাদের শিক্ষা দিল অর্থ সঞ্চয় করে রাখতে। বেশির ভাগ মানুষ আজ তাদের কাজ হারিয়েছে। কিন্তু এখনো আমরা ঘুরে দাঁড়াবার কথাই ভাবছি ভেঙে পড়ার নয়। আমরা অনেকেই এখনো পর্যন্ত অর্থ সঞ্চয় করে তেমনভাবে রাখিনা কিন্তু করোনা আমাদের শিক্ষা দিলো যেকোনো পরিস্থিতির সাথে লড়তে গেলে আমাদের অর্থ সঞ্চয় করে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
২.মানুষের পাশে দাঁড়ানো:
করোনা আমাদের শিখেয়েছে মানুষের পাশে একমাত্র মানুষই ভরসা। মানুষই পারে পাশে দাঁড়িয়ে সব বাধা বিপত্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। করোনা আমাদের শিখেয়েছে শুধু নিজে ভালো থাকলেই চলবে না আশেপাশের মানুষদেরকেও ভালো রাখার দায়িত্ব নিজেদেরই। আমাদের সবার প্রতি সবার সহানুশীলতা থাকা খুব দরকার। আর একটা জিনিস খুব ভালো ভাবে করোনা আমাদের শিখিয়ে দিল যে জাতিবিদ্বেষ করে দেশে এতো লড়াই করে কোনো লাভ হবে না। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে মানবিকতা বোধ জাগরণই মানুষের মধ্যে প্রধান শিক্ষণীয় বিষয় হওয়া দরকার এবং আমাদেরকে ডাক্তার,পুলিশ,নার্স সহকর্মী সহ সবাইকে শ্রদ্ধা ও মর্যাদা করা ভীষণভাবে দরকার। কারণ এই কঠিন পরিস্থিতে দেবদূত হয়ে তারাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
৩.পরিবারের প্রতি ভালোবাসা :

আমরা অনেকেই পরিবারের থেকে কর্মসূত্রে বা চাকরিসূত্রে বহু দূরে বসবাস করি।কিন্তু এই করোনার ফলে অনেক খারাপ বিষয়ের মধ্যেও একটি ভালো বিষয় হলো অনেকেই বহু মাইল পেরিয়ে আমরা পরিবারের কাছে ফিরে এসেছি। করোনার ভয়াবহতা আমরা দেখতে পারছি কিন্তু এর ফলে অনেকেই কাছের মানুষের কাছে আসতে পেরেছে এবং কাছের মানুষের কাছে থাকতে পেরেছে।
৪.ইন্টারনেটের ব্যবহার :

করোনার ফলে শত খারাপের মধ্যেও একটি প্রধান বিষয় যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে তা হলো ইন্টারনেটের ব্যবহার। করোনার ফলে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে এবং ইন্টারনেটের মধ্যে গড়ে উঠেছে একটা নতুন পরিমণ্ডল। ইন্টারটেনমেন্টের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া একটা বড়ো জায়গা করে নিয়েছে। তাছাড়া আমরা এখন ওষুধ,খাবার,ইলেকট্রিক বিল ,জামা কাপড়ের অর্ডার সব কিছুই করছি অনলাইনের মাধ্যমে। এমন কি এই কয়েক মাস অনেকেই কাজ করছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম- এ। এছাড়াও অনলাইন ব্যবসাও বেড়ে গিয়েছে।মার্কেটিং আজ ডিজিটাল হয়েছে। অনেক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার না করতে পারতনা কিন্তু যেকোন তারা শিখে গিয়েছে। এতে মানুষেরই সময় বেঁচে যাচ্ছে এবং তাড়াতাড়ি কাজ ও হয়ে যাচ্ছে।
৫.সহনশীলতা :
আজ করোনা আমাদের দেশে প্রভাব ফেলেছে প্রায় ৮ মাসের ওপর। আমরা ক্ষতবিক্ষত হলেও সহ্যের সাথে সময়ের সাথে এগিয়ে চলেছি। সহনশীলতা বাড়ানো আমাদের কত প্রয়োজন তা আমরা এখন বুঝতে পারছি। যেকোনো বিষয়কে হাতে নিয়ে স্বাভাবিক করতে গেলে প্রথমেই যা প্রয়োজন তা হলো সহনশীলতার সাথে কাজ করা। আমরা সহনশীলতার সাথে কাজ করলে সব বিষয় আমাদের কাছে সহজ হয়ে দাঁড়াবে।
করোনার ফলে এই ৫টি গুরুত্বপূর্ন বিষয় আমাদের শেখা উচিত। যা শিখলে আমাদের পরবর্তী জীবনের পথ আরো মসৃন হবে এই কামনা করা যায়।