নিজস্ব সংবাদদাতা- ‘একুশে হাফ, উনিশে সাফ’ এই স্লোগান তুলে চন্দননগরে রোড শো করলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই রোড শো থেকেই তিনি দাবি করেন বিধানসভা নির্বাচনে হুগলির প্রতিটি আসনে বিজেপি জিতবে।জমি আন্দোলনের ধাত্রী ভূমি সিঙ্গুরেও গেরুয়া পতাকা উড়বে বলে প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন তিনি।

রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দুর পাশাপাশি এতদিন উপস্থিত ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন সিং, স্বপন দাশগুপ্তরা। শুভেন্দু অধিকারীকে ঘিরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। যে রাস্তা ধরে তারা এগিয়ে গিয়েছেন,সেই রাস্তার পাশের বাড়িগুলির বাসিন্দারা বারান্দায় জড়ো হয়ে শুভেন্দুকে লক্ষ্য করে হাত নাড়েন।

এই বিজেপি নেতা দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছে! বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছে বলেই টালিগঞ্জে আমাদের মিছিলে লোক দিয়ে ঢিল মেরেছে। তার পর গতকাল খেজুরিতে বিজেপি কর্মীদের মিছিলের ওপর লোক দিয়ে হামলা চালালেন।” এরপরই হুঙ্কারের সুরে বলেন, “যত মারবে, তত হারবে।”

সিঙ্গুর প্রসঙ্গে এই রোড শো থেকেই রাজ্যের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন শুভেন্দু। তার বক্তব্য, “আমরা সবাই ল্যাম্প পোস্ট ছিলাম। আমাদের কথা শুনত না, তাই বুকে দুঃখ নিয়ে মুখ চেপে থাকতে হয়েছিল। সিঙ্গুরে কারখানার না হওয়ায় রাজ্যের ছেলেমেয়েরা এখানে কোনো চাকরি পায়নি। তাদের অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করতে হয়। এই পাপের ক্ষমা সাধারণ মানুষ করবেনা। বিধানসভা নির্বাচনের সিঙ্গুরে আমরাই জয়লাভ করব।”

এই মিছিল থেকে শুভেন্দুর একটি দাবিকে ঘিরে জল্পনা তীব্র হয়ে উঠেছে। উত্তর পাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল সম্বন্ধে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে হাতজোড় করে বলেন, “প্রবীরদা সম্মানীয়, ওনার সম্বন্ধে কোনো খারাপ কথা আমি বলতে পারবো না। আমি প্রবীরদাকে বলেছি বিধানসভা ভোট আসছে, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে কথা না বলে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন!”

শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের পর হুগলি জেলার রাজনীতিতে জল্পনা তীব্র হয়েছে তাহলে কি উত্তর পাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল‌ও দল ছাড়া স্রোতে সামিল হবেন? রাজনৈতিক মহল সূত্রে খবর উত্তর পাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এবং দলের মধ্যে তার প্রতিদ্বন্দ্বি আচ্ছা লাল যাদবের মধ্যে যে কোনো একজনকে অন্তত দলে সামিল করতে চাইছে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে তারা এই দুজনের মধ্যেকার বিরোধকে উস্কে দিয়ে কাজ হাসিল করবে বলে ঠিক করেছে।

প্রবীর ঘোষাল যেমন উত্তর পাড়ার বিধায়ক, তেমনি হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের ভাই আচ্ছা লাল যাদব তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান। তার অনেক দিনের শখ উত্তর পাড়ার বিধায়ক হবেন। কিন্তু প্রবীর ঘোষালের কারণে সেই ইচ্ছে পূর্ণ হয়নি। বিজেপির মনে করছে এই দুজনের মধ্যে যে কোনো একজন শেষ পর্যন্ত তাদের জালে ধরা দেবেই!