নিজস্ব সংবাদদাতা: ভোটের মরশুমে বাংলায় গোটা দেশের মতো বাংলাতেও বিপুল হারে বৃদ্ধি পেয়েছে করোনা সংক্রমণ। যার ফলে সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এখনই লকডাউনের কোনও চিন্তা নেই। বরং তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, লকডাউন করলেই কি সব কমে যাবে! তা ছাড়া ফের সব বন্ধ হলে মানুষেরই কষ্ট হবে। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ কথা বললেও, সোমবারই দেখা গিয়েছে দেশের রাজধানী দিল্লীতে ১ সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। এদিকে, কেজরিওয়াল মমতার রাজনৈতিক বন্ধুও বটে। তাঁর এদিনের ঘোষণাই উদ্বেগ বাড়িয়েছে কলকাতায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লী ও কলকাতার পরিস্থিতির মধ্যে খুব যে ফারাক রয়েছে তা নয়। দিল্লীতে গতকাল কোভিড অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৭৫ হাজার। কলকাতায় সোমবার কোভিড অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৩,৪১৮। দিল্লীতে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা একদিনে ৫ হাজার বেড়েছে, কলকাতায় তা কমবেশি চার হাজার করে বাড়ছে। এদিকে, শুধু কলকাতাতেই গত কয়েক দিনে কোভিড অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে ১৪ হাজার পার করেছে। এদিনও নতুন ৮ হাজারের বেশি রোগীর শরীরে কোভিড পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে।

সার্বিক এই পরিস্থিতিতে আমলা মহলেও অনেকের ধারণা যে ভোট মিটলেই রাজ্যে কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এমনিতে বাম, বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস-সহ সব দলই কোভিডের কারণে সভা ছোট করার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ হল, সভা বন্ধ করা বা ভার্চুয়ালি সভা করার কথা কেউ বলেনি। আগামী ২৬ তারিখ ভোটের শেষ প্রচার। শেষ দফার ভোট গ্রহণ হবে ২৯ এপ্রিল। তার পর হয়তো দেখা যাবে, লকডাউন বা সে ধরণের পদক্ষেপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলিও আপত্তি করছে না।

এদিকে, রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশের মতে, সংক্রমণ ছড়ানোর হার এভাবে বাড়তে থাকলে সেই শৃঙ্খল ভাঙা ছাড়া উপায় নেই। সে ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে কনটেইনমেন্ট জোন তৈরি বা লকডাউনের মতো পদক্ষেপ ভাবতে হতে পারে। নবান্নের এক কর্তার কথায়, সাধারণ মানুষকে বার বার সতর্ক করা হলেও কোভিডের সংক্রমণ নিয়ে অনেকে এখনও সচেতন নন। মহারাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত চোখের সামনে থাকলেও বহু মানুষ বুঝেও বুঝছেন না। কিন্তু এই বেপরোয়া মনোভাবই বিপদ ডেকে আনতে পারে। মুম্বইতেও সে ভাবেই বিপদ বেড়েছে।