নিজস্ব সংবাদদাতা- কেন্দ্রীয় বাজেটে ওপর ভর করে রেকর্ড সৃষ্টি হল শেয়ার বাজারে। একদিনে এত বেশি পরিমাণ শেয়ার সূচকের বৃদ্ধি এর আগে হয়নি। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বেসরকারি করণের কথা ঘোষণা করার ফলেই চাঙ্গা হয়ে উঠেছে বাজার।

অভূতপূর্ব ভাবে মুম্বাই শেয়ার বাজার সূচক সেনসেক্স আজ ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। বাজার খেলার সময় মুম্বাই শেয়ারবাজারের শেয়ার সূচক সেনসেক্স ছিল ৪৬,৬১৭.৬১ পয়েন্টে। বাজেটের ওপর ভর করে দিনের শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৮,৬০০.৬১ পয়েন্টে।অন্যদিকে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার সূচক নিফটির প্রায় 5 শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। দিনের শেষে সূচক বেড়ে নিফটি দাঁড়িয়েছে ১৪,২৮১.২০ পয়েন্টে।

বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বেসরকারিকরণের কথা ঘোষণা করতে গিয়ে জানিয়ে দেন দুটি স্বরাষ্ট্র ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ করা হবে। সেইসঙ্গে এলআইসির বেসরকারিকরণের কথাও ঘোষণা করেন। সার্বিকভাবে বিমা শিল্পে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের মাত্রা বাড়িয়ে করে দেন ৭৪ শতাংশ। এর ফলে দেশের বীমা ক্ষেত্রে মোটামুটি ভাবে বিদেশি কোম্পানিরাই এখন থেকে নিয়ন্ত্রক হয়ে দাঁড়াবে।

ব্যাপক সংখ্যক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিক্রি করার কথাও জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। দেশের সমস্ত ক্ষেত্রের শিল্প প্রতিষ্ঠানেরই দরজা মোটামুটিভাবে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকার নিজেদের মনোভাব পরিষ্কার করেছে যে তারা আর কোনো শিল্প চালানোর দায়িত্ব নিতে চায় না। এর ঘোষণা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মনে স্বাভাবিকভাবেই আশার আলো সঞ্চার করবে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল দেশ জোড়া প্রবল বিতর্ক সত্ত্বেও কৃষি ক্ষেত্রের সংস্কার নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার পিছু হটেনি। সরকারের এই অবস্থান বিনিয়োগকারীদের আস্থা আর‌ও বাড়িয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশী সংস্থাগুলি দেশের বীমা এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রগুলিতে সংস্কার সাধনের জন্য তদবির করে আসছিল। তাদের সেই চাহিদা যে পুরণ হতে চলেছে তা বাজারে লগ্নিকারীদের গতিবিধি দেখলেই পরিষ্কার বোঝা যাবে। প্রতিটি বেসরকারি বীমা, ব্যাঙ্ক এবং নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কম্পানিগুলির শেয়ার দর ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে বাজেট দেখে উৎসাহিত হয়ে বিদেশী লগ্নিকারীরা ইতিমধ্যেই বাজারে টাকা ঢালতে শুরু করে দিয়েছে।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অবশ্য শেয়ার বাজারের এই গতিবিধিকে একটুও পাত্তা দিচ্ছে না। তাদের বক্তব্য সরকার সবকিছু বেচে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে। তাই বিজেপির বন্ধুরা যে শেয়ার বাজারে টাকা ঢালবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।