নিজস্ব সংবাদদাতা- ভারত-চীন সীমান্ত বিভাগ নিয়ে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বারবার নিশানা করেছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী একাধিকবার অভিযোগ করেছেনপ্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখে ৫৬ ইঞ্চি ছাতির কথা বললেও চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধে তিনি ভয় পেয়েছেন,  তাই তিনি চীনের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না। প্রসঙ্গত মোদি আমলে সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের একাধিকবার বিবাদ চরমে ওঠে। এমনকি লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়। দেশের পূর্ব সীমান্তে অরুণাচল প্রদেশের ৪  কিলোমিটার অভ্যন্তরে ঢুকে চিনা বাহিনী একটি আস্ত গ্রাম গড়ে তুলেছে বলেও অভিযোগ ওঠে। কিন্তু দেশজু ড়ে জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুললেও প্রধানমন্ত্রী একবারও চীনের নাম করে সমালোচনা করেননি।

কংগ্রেস সহ বাকি বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় প্রতিবেশী চীন দেশের ভূখণ্ড দখল করে নিলেও রাজনৈতিক ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ করছে না, তারা কেবল দেশের অভ্যন্তরে বিরোধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতেই ব্যস্ত আছে। এই সমস্ত সমালোচনার পাল্টা দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হল আগামী মে-জুন মাস নাগাদ প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটি গালওয়ান সফরে যাবে। তারা সেখানে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে যে উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার সমস্ত কিছুই খতিয়ে দেখবে।

ঘটনা হল প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য হলেন স্বয়ং রাহুল গান্ধী, সঞ্জয় রাউতের মতো বিজেপির চরম সমালোচক সাংসদরা। প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী শরদ পাওয়ার সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান পদে আছেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে চীন ইস্যু নিয়ে বিরোধীরা বারবার সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তারা প্রকৃত সত্য প্রকাশ না করে তথ্য গোপন করছে। সম্ভবত সেই অভিযোগের মোড় ঘুরিয়ে দিতেই বিরোধী শিবিরের হেভিওয়েট নেতাদের নিয়ে গড়ে তোলা প্রতিরক্ষা কমিটিকে গালওয়ান সফরে পাঠাচ্ছে সরকার। স্বাভাবিকভাবেই গালওয়ান সফরের পর কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আর তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলতে পারবে না রাহুল গান্ধীরা।

এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই সফরের কথা ঘোষণা হওয়ার পর কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা দাবি করেছেন চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ নিয়ে অবিলম্বে সংসদে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক সরকার।