লিপস্টিক পড়তে কোন মহিলাই না ভালোবাসেন? প্রত্যেক মহিলারই ওয়ারড্রবে দুই বা তার অধিক লিপস্টিক থাকেই। নিজেদের সৌন্দর্য আরোও ফুটিয়ে তোলার জন্য মহিলারা লিপস্টিক পড়েন। বেশিরভাগ মহিলারাই নিজেদের জামার সাথে ম্যাচিং লিপস্টিক খুঁজতে ব্যস্ত থাকেন, কিন্তু তারা লিপস্টিকের খারাপ দিকগুলির কথা মনেও আনেন না। লিপস্টিক অনেকগুলি কেমিক্যালের মিশ্রণে তৈরি হয় যেমন-সীসা, ক্রোমিয়াম এর মত কেমিক্যাল লিপস্টিকে থাকে। যেগুলি ঠোঁটের সহজাত সৌন্দর্য ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও খাবার বা পানীয় খাওয়ার সময় লিপস্টিক পেটে যায় যার ফল হয় মারাত্মক। তাই লিপস্টিক ব্যবহার করার আগে এর খারাপ দিক গুলি জেনে নিতে হবে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক লিপস্টিকের 8 টি নেতিবাচক প্রভাব—
• রাসায়নিক উপস্থিতি:–

লিপস্টিকে ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানীজ থাকে যা লিপস্টিক তৈরির প্রধান উপকরণ। এই রাসায়নিকগুলি আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়। এটি গুরুতর রোগ এবং অঙ্গগুলির ক্ষতিও হতে পারে। ক্রোমিয়াম কিডনিতে দীর্ঘক্ষণ জমে থাকলে সেটি কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
• সীসার উপস্থিতি:–

লিপস্টিকে এমন সীসা রয়েছে যা আপনার দেহের জন্য ক্ষতিকারক। এটি হরমোন ভারসাম্যহীনতা এবং মস্তিষ্কের ক্ষতির কারণ হিসাবেও পরিচিত। সীসা হ’ল নিউরোটক্সিন যা স্নায়ুতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক। সীসা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য একটি বিপজ্জনক রাসায়নিক।
• খনিজ তেলের ব্যবহার:–

লিপস্টিকে চকমকের জন্য খনিজ তেল থাকে। তবে খনিজ তেল মানুষের ঠোঁটের প্রাকৃতিক ছিদ্রগুলিকে অবরুদ্ধ করে। এটি আপনার স্বাস্থ্যের পাশাপাশি আপনার ঠোঁটের স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
• ফরমালডিহাইড ব্যবহার:–

ফরমালডিহাইড একটি শক্তিশালী গন্ধযুক্ত গ্যাস। যদি আপনি ফরমালডিহাইড সেবন করেন তবে আপনার কাশি, জ্বলন সংবেদন এবং মাথা ঘোরা পর্যন্ত হতে পারে। এই ফরমালডিহাইড-ই সুবাসের জন্য লিপস্টিকে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং সহজেই অনুমেয় লিপস্টিক কতটা পরিমাণে শরীরে ক্ষতি করতে পারে।
• পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবহার:–

লিপস্টিক তৈরি করতে পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এটি স্বাস্থ্যের পক্ষে সত্যই ক্ষতিকর। এটি এমন একটি রাসায়নিক যা অপরিশোধিত তেল এবং গ্যাস দিয়ে তৈরি। এছাড়াও এটি মানবদেহের এন্ডোক্রাইন সিস্টেমের জন্য ক্ষতিকারক।
• জ্বালা এবং চুলকানি:–

আপনি যখন একটি লিপস্টিক ব্যবহার করেন যা ভাল মানের নয় তখন এটি তার চারপাশে ঠোঁট এবং ত্বকের চুলকানি এবং জ্বালা জাগায়। যা থেকে আপনার ত্বকের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
• ক্যান্সারের উৎপত্তি:–

লিপস্টিকগুলিতে ব্যবহৃত প্রিজারভেটিভগুলি ত্বকের জ্বালা, শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং চোখের জ্বালা ইত্যাদির মতো বড় ক্ষতি হতে পারে। এটিতে সতর্ক হওয়া উচিত কারণ কিছু লিপস্টিক ব্র্যান্ড ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
• রেচনজনিত ব্যর্থতা:–

লিপস্টিকগুলিতে উপস্থিত ভারী ধাতুগুলি অঙ্গ ক্ষতি এবং বিপজ্জনক রোগের কারণ হতে পারে। ক্যাডমিয়ামের উচ্চ ব্যবহারের ফলে রেনাল ব্যর্থতা ঘটে। ঘন ঘন লিপস্টিক প্রয়োগের ফলে পেটের টিউমার হয়।
তাহলে এবার জেনে গেলেন লিপস্টিকের অপকারিতার কথা। এবার আপনিই বিচার করুন লিপস্টিক ঘনঘন পড়বেন নাকি পড়বেন না! তবে আমার মতে কোন অনুষ্ঠানে কিছু সময়ের জন্য লিপস্টিক পড়লেও প্রতিদিন নিয়ম করে না পড়াই ভালো। আপনি কি করবেন বলে ঠিক করলেন জানান নিচের কমেন্ট বক্সে।