নিজস্ব সংবাদদাতা- বিজেপি বিরোধী সাংবাদিকদের ওপর আইনি ফাঁস আরও জোরদার করে তুলছে গেরুয়া শিবির। রাজদীপ সারদেশাইয়ের মতো দেশের প্রথম সারির সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দু’দিন আগেই উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়। এবার আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য হরিয়ানায় এই প্রখ্যাত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার ছাড়াও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং শত্রুতা ছাড়ানোর ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হল।

এর আগে অনেকবারই বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তারা একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে। উত্তরপ্রদেশের হাথরস গণধর্ষণকাণ্ডের সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ‘হিংসা এবং সমাজে বিভেদ’ ছড়ানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয় এবং তাদের আটক করাও হয়েছিল।

আগের সমস্ত উদাহরণকে ছাপিয়ে গিয়ে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লির রাজপথে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত কৃষকদের যে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধেছিল তা নিয়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে মাঠে নেমেছে অমিত শাহর অধীনস্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বিরোধীরা অভিযোগ করছে সাধারণ বিজেপি সমর্থকদের কাজে লাগিয়ে সাংবাদিকদের পর্যন্ত হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে তারা সরকার বিরোধী কোনো খবর করতে সাহস না করেন।

রাজদীপ সরদেশাইয়ের পাশাপাশি কংগ্রেস সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী থারুরের বিরুদ্ধেও দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনা হয়েছে। শনিবার হরিয়ানার গুরুগ্রাম থানায় ঝারসার বাসিন্দা মহাবীর সিং রাজদীপ সরদেশাই, শশী থারুর সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা, অপরাধমূলক মিথ্যা খবর ছড়ানো, হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া এবং দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি প্রেস ক্লাব একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। সাংবাদিকদের সংগঠন এডিটর্স গিল্ডের পক্ষ থেকে এই ধরনের উদ্দেশ্যমূলক অভিযোগ দায়ের করার ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমকে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হলেও ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে বিজেপি নেতারা যে তা মানতে চাইছেন না, তা তাদের একের পর এক পদক্ষেপে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।