নিজস্ব সংবাদদাতা: ভোটের মাঝেই তৃণমূল নেতার সঙ্গে দোল উদযাপন করে বেজায় বিতর্কে জড়িয়েছেন বিজেপির তারকা প্রার্থীরা। গতকাল গঙ্গাবক্ষে কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মদন মিত্রের ডাকে সাড়া দিয়ে রঙিন এক বসন্ত উৎসবে হাজির হয়েছিলেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, পায়েল সরকার এবং তনুশ্রী চক্রবর্তী। গেরুয়া শিবিরের তরফে সম্প্রতি তাঁদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে প্রার্থী হিসেবে। দোলের দিন রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে যেভাবে তৃণমূল বিজেপি এক সঙ্গে মিশে গেছিলেন তা সাম্প্রতিক আবহে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

বরাবরই এ রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস আর বিজেপিকে একযোগে “বিজেমূল” বলে কটাক্ষ করে আসছে বাম শিবির। এবছর বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের শক্তি বাড়াতে কংগ্রেস আর আব্বাস সিদ্দিকীর নতুন দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বামেরা। দোলের সকালে তৃণমূল বিজেপির যে রাজনৈতিক রংমিলান্তির চিত্র দেখেছে গোটা রাজ্য, তাতে বামফ্রন্ট তথা সংযুক্ত মোর্চার “বিজেমূল” তত্ত্বই আরো জোরদার হয়েছে, অন্তত তেমনটাই মত বাম সমর্থকদের।

গঙ্গাবক্ষে মদন মিত্র আয়োজিত দোল উৎসবে এদিন সামিল হয়েছিলেন বিজেপির তারকা প্রার্থীরা। সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বকেও দেখা যায়। তার চেয়েও বড় কথা, সকলেই সেখানে নাচছিলেন তৃণমূলের সিগনেচার স্লোগান হিসেবে পরিচিত ‘খেলা হবে’-র তালে তালে। ভোটের আগে রাজনীতির আঙিনায় পা রাখা তারকাদের আত্মনিবেদন সম্বন্ধে এমনিতেই তৈরি হয়েছে সন্দেহ। রাজনীতির ময়দানে ভিন্ন পক্ষ হলেও ভোটের মুখে কেন এই সম্প্রীতি? বিভেদের সবটাই কি লোকদেখানো? উঠে গেছে প্রশ্ন।

এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গেরুয়া প্রার্থীরা বলেন, “এটা কোনো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম নয়, আজ আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি না। হোলি খেলছি। খেলা হবে একটা ভালো গান। তাই নাচছি।” আয়োজক মদন মিত্রের মন্তব্যও এক্ষেত্রে ছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, “একটা বান আসছে। দোলের দিন সবাই সবাইকে ধরে রাখতে বলছে তাই। আজকে বসন্ত উৎসব, এখানে সবাই বাংলার মানুষ। তাই আজ কোনো রাজনীতি নয়।” বঙ্গ রাজনীতির মঞ্চে এই নতুন রঙ্গকে ব্যঙ্গ করে ফের “বিজেমূল” তত্ত্বে শান দিতে দ্বিধা করছে না বাম শিবির।