নিজস্ব সংবাদদাতা: আজ ৫ মে, ২০২১। ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক সকাল ১০টা বেজে ৪৫ মিনিট। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে তৈরি হল এক নতুন অধ্যায়। বিপুল জনসমর্থন নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তৃতীয়বারের জন্য শপথ নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘জননেত্রী’কে ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পেয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলার মানুষ।

আজ, রাজভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। আগামী ৫ বছর মানুষের দ্বারা নির্বাচিত সরকার মানুষের হয়ে, মানুষের জন্য কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন মমতা। কোভিড পরিস্থিতিতে বর্ণাঢ্য নয়, বরং একেবারে অনাড়ম্বরেই হয়ে গেল তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। সর্বসাকুল্যে অতিথি ছিলেন ৫০ জন। তবে নিমন্ত্রিতের তালিকায় থাকা সত্ত্বেও সেখানে ছিলেন না সিপিএম ও বিজেপির কোনও প্রতিনিধি।

প্রস্তুতি ছিল সকাল থেকেই। কাঁটায় কাঁটায় ১০:৪৫ মিনিটে রাজভবনের ঐতিহাসিক থ্রোন রুমে শুরু হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ অনুষ্ঠান। প্রোটোকল মেনে রাজ্যপাল তাঁকে শপথ পাঠ করান। এরপর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের শপথরক্ষার প্রতিশ্রুতিতে নির্দিষ্ট কাগজে স্বাক্ষর করেন মমতা। তাঁকে সকলে শুভেচ্ছা জানান। তিনিও সংক্ষিপ্ত বার্তায় সবাইকে পাল্টা ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে উল্লেখ করেন বাংলার মানুষের কথা। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে সকলকে এই শুভক্ষণের সাক্ষী হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে পারেননি বলে দুঃখপ্রকাশও করলেন তিনি।

এসব সেরেই অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী সোজা কাজের কথায় চলে এলেন। পাশাপাশি, রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা দিলেন তিনি। সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে আবেদন করলেন, প্রতিহিংসা পরায়ণ আচরণ থেকে বিরত থাকার জন্য। বললেন, ‘শান্তি বজায় রাখুন, বাংলা অশান্তি পছন্দ করে না’। উল্লেখ্য, ফলাফল প্রকাশের পরই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকাশ্যে এসেছে অশান্তির খবর। রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছেন বহু মানুষ। ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সব মিলিয়ে বেশ আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে গোটা বাংলায়।

এসবের মাঝেই বৃহস্পতিবার রাজভবনের থ্রোন রুমে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথ নিয়েই রাজ্যের ভোট পরিবর্তী হিংসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এদিন মমতা বলেন, “এখন আমার প্রথম কাজ কোভিড মোকাবিলা। এখনই নবান্ন যাব। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। দ্বিতীয় কাজ, রাজনৈতিক হিংসা বন্ধ করা”। কড়া ভাবে তিনি বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের কর্মীদের আবেদন করব, কেউ অশান্তি ছড়াবেন না। প্রতিহিংসা পরায়ণ আচরণ করবেন না। শান্তি বজায় রাখুন। বাংলা অশান্তি পছন্দ করে না। কোথাও কোনও অশান্তি আর মানব না”।