কথায় বলে সুন্দর মুখের জয় সর্বত্র । পৃথিবীর কোন মেয়েই না চায় নিজেকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে। ঝকঝকে, মোলায়েম, জৌলুসপূর্ণ, দাগবিহীন ত্বক সকলের একান্ত কাম্য। আর ত্বকের জৌলুস ধরে রাখার চাবিকাঠি হল ফেসিয়াল । রোজ রোজ পার্লারে লাইন দিয়ে ফেসিয়াল করায় অনেকেরই এলার্জি। আর বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে ফেসিয়াল করতে গিয়ে স্যোশাল ডিস্টেন্স রক্ষা করা অসাধ্য। তার উপর কারোর ব্যবহৃত জিনিষ যদি পুনঃব্যবহৃত হয় তাহলে আর রক্ষা নেই। কিন্তু তা হলে কি ত্বকের যত্নে ইতি টানতে হবে। খাদ্য যেমন আমাদের পুষ্টি যোগায় তেমনই ফেসিয়াল আমাদের ত্বকের পুষ্টি যোগায় । তাই সেটা থেকে বিরত থাকা নৈবঃ নৈবঃ চ। তাহলে এখন করণীয়?

অনেকেরই এই ভাবনায় কপালে থাকে থাকে ভাঁজ পড়েছে। না সমস্যার সমধান রয়েছে আপনাদের হাতে। অবাক হলেও এটাই সত্যি। বাড়িতে বসে মেশিন ছাড়াই এখন ফেসিয়াল সম্ভব। তারই সকল পন্থা নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি আপনাদের সামনে। কিভাবে আপনি আপনার সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য বাড়িতে বসে ফেসিয়াল করবেন। তাহলে এবার থেকে পার্লারের ক্যমিকেল কে নিজের ত্বকের উপর কোন হানিকারক প্রভাব ফেলতে দেবেন না।
কোন বিষয় সম্পর্কে জানার আগে অবশ্যই তার গুনাগুন ও উপকারিতা জেনে নেওয়া আবশ্যক
ফেসিয়াল কি?

ফেসিয়াল হল আমাদের ত্বককে চির সতেজ রাখার উপায়। আমাদের শরীরকে সতেজ রাখার জন্য দরকার পুষ্টি ঠিক তেমন ভাবেই ফেসিয়াল হল আমাদের মুখমণ্ডলের ত্বকের পুষ্টি। যা আমাদের স্কিনকে টানটান, জৌলুসপূর্ন, লাস্যময়ী রাখতে সাহায্য করে।
ফেসিয়ালের উপকারিতাঃ-

- ত্বকের অযাচিত দাগ চলে যায়, ত্বকে ব্রনের সমস্যা থাকলে তারও নিরাময় ঘটে ফেসিয়ালের দ্বারা।
- ফেসিয়ালের ফলে আপনার মুখের মধ্যে জমে থাকা সমস্ত ময়লা দূর হয়।
- লোমকূপের গোঁড়াকে উন্মচিত করে। লোমকূপে জমে থাকা সকল তেল টেনে বার করে। ত্বকের আদ্রতার ভারসম্য বজায় রাখে।
- ফেসিয়ালে ‘এক্সফোলিইয়েশন’ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, যার ফলে ত্বকের বলিরেখা নির্মূল হয়।ত্বকের অযাচিত দাগ চলে যায়, ত্বকে ব্রনের সমস্যা থাকলে তারও নিরাময় ঘটে ফেসিয়ালের দ্বারা।
- নির্জীব ত্বককে সতেজ, উজ্জ্বল করে তোলে।
- ফেসিয়ালের ফলে ত্বকের ভেতরে থাকা মৃত কোষ নির্মূল করে নতুন কোষের জন্ম দেয়।
- সকল ব্ল্যাক হেডসর নিরাময় ঘটে।
ফেসিয়াল করার নিয়মাবলী
ক্লিনসিং –
ক্লিনসিং হল ফেসিয়াল করার নিয়ম এর প্রথম ধাপ। ময়দার সাথে মধ্যে কাঁচা দুধ মিশিয়ে সেই মিশ্রণটা দিয়ে গোটা মুখে ৩ থেকে ৪ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এইভাবে ১০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ছবি সৌজন্যে Luminate Co ছবি সৌজন্যে Numidia BV
স্ক্রাবিং –
একটি পাত্রে ১ চামচচালের গুঁড়ো, ১ চামচ লেবুর রস, ১ চামচ মধু, ১/২ টেবিল চামচ আলভেরা জেল মিশিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে সার্কুলার মোশনে স্ক্রাব করুন। এরপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে আলতো করে ড্যাব করুন।

স্টিমিং-
ফেসিয়ালে ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি ধাপ স্টিমিং। আর ফলে ত্বকের সতেজতা ফিরে আসে। গরম জল করে সেই পাত্রের উপরে মুখ নিয়ে তোয়াল দিয়ে ঢেকে দিন। যতটা গরম ভাপ নিতে পারবেন ততক্ষন ভাপ নিন।

ফেস প্যাক-
১চামচ মধু, ১ চিমটি স্যাফরন, ২ চামচ চন্দন বাঁটা, ১ চামচ টকদই, ১ চামচ লেবুর রস, ১ চামচ নারকেল তেল সব একসাথে মিশিয়ে ফেস প্যাক গোটা মুখে লাগিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে দিন।

ম্যাসাজ-
হালকা হাতে ভালো করে গোটা মুখে ম্যাসাজ করুন যাতে রক্ত চলাচল ঠিক ভাবে হয়।

টোনার সহ ফেস মাস্ক –
ফেসিয়ালের ক্ষেত্রে টোনার খুব আবশ্যকীয় কারন টোনার মুখের ফাঁকা লোমকূপকে ভরাট করতে সাহায্য করে। একটি টিসু নিয়ে মুখের ন্যায় সেটি গোল করে কেটে নিন , আর চোখের, নাকের ও ঠোঁটের আকারে টিস্যুটিকে কাটুন। তারপর সেটি টোনারের মধ্যে ডুবিয়ে মুখের উপর লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে তুলে ফেলুন।

ময়শ্চারাইজার ব্যাবহার-
ফেসিয়ালের সর্বশেষ পর্যায় হল ময়শ্চারাইজার ব্যাবহার করা। এটি ত্বকে কোমলতা আনে। এক্ষেত্রে বাইরের ক্রিম না ব্যবহার করে তার পরিবর্তে অলিভ ওয়েল, জোজোবা ওয়েল ব্যবহার করতে পারেন ।

স্কিনকে গ্লোয়িং, আর মৃত কোষের বদলে নতুন কোষ পেতে ফেসিয়াল ইজ মাস্ট নেশেসারি। তাহলে এবার থেকে পার্লারকে টাটা বাই, ঘরোয়া পদ্ধতিকে হাই। অনুষ্ঠান হোক বা নিজের বিয়ে ঘরে বসেই মাত্র কয়েকটা পদ্ধতি অবলম্বন করলেই পেয়ে যাবেন ঝকঝকে, মোলায়েম, মসৃণ, কোমল, সতেজ ত্বক। তাই আবার সকলকে তাক লাগানোর পালা কিন্তু আপনার।
তাই আর দেরী নয় প্রতিবেদনটি পড়া মাএই কাজে লেগে পড়ুন। আর নিজের ত্বককে করে তুলুন উজ্জ্বল,মসৃন, কোমল। আর বাড়িতে বসে যে ফেসিয়াল সম্ভব তা সকলের সাথে ভাগ করে নিন।