নিজস্ব সংবাদদাতাঃ গুরুং ফ্যাক্টরে উত্তরবঙ্গে ফল খারাপ হতে চলেছে বিজেপির। একটি সর্বভারতীয় সমীক্ষা সংস্থার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের সময় উত্তরবঙ্গে একচেটিয়া ভালো ফলাফল করেছিল গেরুয়া শিবির। তারপর তিস্তা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। শিবির বদল করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধায় উত্তরবঙ্গকে ঘিরে বিজেপি নেতৃত্ব যে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল তা অনেকটাই ব্যাহত হবে।
তবে শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, জঙ্গলমহলেও লোকসভা নির্বাচনের ক্ষত অনেকটাই মেরামত করে নিতে পারবে তৃণমূল। এক্ষেত্রে ছত্রধর মাহাতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হতে চলেছে বলে ওই সমীক্ষায় জানানো হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর ওপরই নির্ভর করছে জঙ্গলমহল অঞ্চলের চূড়ান্ত ফলাফল, তার সমীক্ষা রিপোর্টে পরিষ্কার। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা এই নেতা তার ব্যক্তিগত দক্ষতায় জঙ্গলমহলের ফলাফলকে আমূল বদলে দিতে পারেন বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।
এতদিন তৃণমূলের গড় বলে পরিচিত ছিল দক্ষিণবঙ্গ। গত লোকসভা নির্বাচনেও এই অঞ্চলের বেশিরভাগ আসন নিজেদের দখলে নিতে সফল হয় রাজ্যের শাসক দল। বিশেষ করে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় নিজেদের একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রেখেছিল তারা। সর্বভারতীয় ওই সংস্থার সমীক্ষা রিপোর্ট বলা হয়েছে উত্তরবঙ্গের ক্ষতি দক্ষিণে অনেকটাই মেরামত করে নিতে পারবে বিজেপি।
ঘটনা হল দক্ষিণবঙ্গ দখলে আনার জন্য এই অঞ্চলের বেশকিছু শীর্ষস্থানীয় তৃণমূল নেতাকে টার্গেট করা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। দিলীপ ঘোষ-মুকুল রায়দের লক্ষ্য তৃণমূলের এই নেতাদের দলে সামিল করে দক্ষিণবঙ্গের ভোট নিজেদের দখলে নিয়ে আসা। সেই লক্ষ্যে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং কলকাতার ৫১ টি আসনের দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কিচেন ক্যাবিনেট’-এর সদস্য শোভন চ্যাটার্জীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে।
এই মুহূর্তে হাওড়া, হুগলির মতো জেলাগুলির রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই বিজেপির দিকে ঢলে পড়েছে। তবে এটাও ঠিক এখনো পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর কদমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেননি। তিনি মাঠে নামলে দক্ষিণবঙ্গের এই অঞ্চলগুলির রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ কিছুটা ঘুরে যেতেও পারে।
সর্বভারতীয় ওই সংস্থার সমীক্ষা রিপোর্টে অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক হল মুর্শিদাবাদ ও মালদহে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করতে চলেছে বাম-কংগ্রেস জোট। বিজেপিকে এই দুই জেলা থেকে শূন্য হাতে ফিরতে হতে পারে। এমনকি তৃণমূলও যে বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না তা পরিষ্কার ওই সমীক্ষায়।
লোকসভা নির্বাচনের বিপর্যয় কাটিয়ে বামফ্রন্টের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা যে ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছে ওই সমীক্ষা রিপোর্টে জানানো হয়েছে। বাম দলগুলির ভোট শতাংশ অভাবিত পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। সমীক্ষায় ইঙ্গিত দীর্ঘ চার দশক পর আবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে।
আরও পড়ুনঃ আর্মি দিবস 2021: আর্মি দিবস এবং এর তাৎপর্য সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই 5 টি জিনিস জানতে হবে