কোরান বা হাবিব মতে কজন নবি আছে জানেন ? কুরআন মজিদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ বা কোরআন ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন। এটিকে আরবি শাস্ত্রীয় সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট রচনা বলে মনে করা হয়। কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবিতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা ।পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবী বাবা আদম এবং মা হাওয়া যখন বেহেশত থেকে দুনিয়ায় নেমে এলেন, তখন আল্লাহ বলে দিয়েছেন, কুলনাহ বিতু মিনহা জামিআ।

আপনি কি জানেন মোট দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী-রাসুল এ পৃথিবীতে এসেছেন বলে বর্ণনা পাওয়া যায় ? এর মধ্যে মোট পঁচিশ জন নবী-রাসুলের নাম পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। আসুন তাহলে সংক্ষেপে জেনে নেই কোরআনে বলা নবীদের কথা।

১.হজরত ইদরিস ( কোরান মতে) :

ইনি কোরান – এর দুটি আয়াতে এ নবী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, হজরত ইদ্রিস (আ.)ই প্রথম কলম আবিষ্কার করে লিখিত জ্ঞানের সূচনা করেন। এ ছাড়াও পোশাক সেলাইয়ের পদ্ধতিও তিনি আবিষ্কার করেছেন বলে জানা যায়।

২) হজরত আদম( কোরান মতে) :

ইনি পৃথিবীর প্রথম মানুষ এবং প্রথম নবী। পবিত্র কোরআনের মোট ২৫ জায়গায় তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আদম (আ.) এর তাওবার ঘটনা বেশ উল্লেখযোগ্য ঘটনা। শুরুতে তিনি এবং মা হাওয়া জান্নাতে ছিলেন। পরবর্তীতে দুনিয়ায় বসবাস শুরু করেন।

৩. হজরত নুহ( কোরান মতে) : কোরআনে মোট ৪৩ বার উল্লেখ করা হয়েছে এই নবীর নাম। তিনি সাড়ে নয় শত বছর দাওয়াতি কাজ করে মাত্র আশি জন নারী পুরুষকে হেদায়াতের পথে আনতে পেরেছেন। তার সময়ের পৃথিবীতে আজাব হিসেবে মহা প্লাবন দেয়া হয়।

৪. হজরত সালেহ( কোরান মতে) :

কোরআনের মোট ৯ জায়গায় এ নবীর প্রসঙ্গ এসেছে। তিনি সামুদ জাতির কাছে প্রেরিত হয়েছেন। সামুদ জাতিও উন্নত প্রযুক্তির অধিকারী ছিলো। আল্লাহকে অমান্য করার কারণে তারা ধ্বংস হয়ে যায়।

৫. হজরত হুদ( কোরান মতে) : মোট সাতটি আয়াতে এ নবীর আলোচনা করা হয়েছে কোরআনে। তিনি আদ জাতির কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন। আদ জাতি খুবই উন্নত প্রযুক্তিসমৃদ্ধ জাতি ছিলো। আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দেন।

. হজরত ইবরাহিম( কোরান মতে) :

এর নাম পবিত্র কোরআনে ৬৯ বার উল্লেখ হয়েছে। তিনি ইরাকে জন্মগ্রহণ করেন ও ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপন করেন। তাকে মুসলিম মিল্লাতের পিতা বলে কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি কাবা ঘরের নির্মাতা ছিলেন।

৭.হজরত ইসহাক ( কোরান মতে) :

কোরআনের মোট ১৭ বার আলোচিত হয়েছে তার নাম। তিনি ও ইসমাঈল (আ.) সম্পর্কে ভাই ছিলেন। হজরত ইসহাক (আ.) অন্যতম মর্যাদাবান নবী ছিলেন।

৮. হজরত ইসমাঈল( কোরান মতে) :

হজরত ইবারাহিম (আ.) এর ছেলে তিনি। পবিত্র কোরআনে মোট ১২টি আয়াতে তার সম্পর্কে বলা হয়েছে। তিনি ছিলেন পরম ধৈর্যের প্রতীক। কোরবানি ও হজের সঙ্গে ইসমাইল (আ.) এর স্মৃতি জড়িত।

৯. হজরত লুত ( কোরান মতে) :

তার কথা ২৭ বার উল্লেখ করা হয়েছে কোরআনে। তার সম্প্রদায়ের লোকেরা সমকামিতার মতো জঘন্য পাপে লিপ্ত ছিলো। ফলে আল্লাহতায়ালা তাদের কঠোর শাস্তি দিয়ে দুনিয়া থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেন।

কোরান
Photo source : Wikipedia

১০. হজরত ইয়াকুব :

মোট ১৬টি আয়াতে আলোচিত হয়েছে তার নাম। তার আরেক নাম হলো- ইসরাইল। তিনি ইউসুফ (আ.) এ পিতা।

১১. হজরত ইউসুফ :

২৭টি আয়াতে উল্লেখ হয়েছে তার নাম। তার পিতা ইয়াকুব (আ.), তার দাদা ইসহাক (আ.) ও পরদাদা ইবরাহীম (আ)ও নবী ছিলেন।

১২. হজরত শোয়াইব :

১১টি আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তার নাম। তার সম্প্রদায় ওজনে কম দেওয়ার অপরাধে খোদায়ি গজবে ধ্বংস হয়ে যায়।

১৩. হজরত আইয়ুব :

কোরআনের ৪ জায়গায় আলোচিত হয়েছে তার নাম। আল্লাহতায়ালা তাকে দীর্ঘকাল কঠিন অসুখ দিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ধৈর্যধারণ করে সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৪. হজরত যুলকিফল :

পবিত্র কোরআনে দুই জায়গায় তার নাম এসেছে। তিনি পুরো পৃথিবীর বাদশাহ ছিলেন।

১৫. হজরত মুসা :

পবিত্র কোরআনে সবচেয়ে বেশি বার তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মোট ১৩৭ বার এসেছে তার নাম।

আরো পড়ুন: https://www.banglakhabor.in/18-ডিসেম্বর-সংখ্যালঘু-অধিক/amp/?

.