আর মাত্র কটা দিন। তারপরই ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে ভোট দিতে চলেছে বনগাঁ। আর বনগাঁ উত্তরের নির্দল প্রার্থী দীনেশ দাস খবরে আসছেন তাঁর বক্তব্যের জন্য। প্রতিপক্ষদের দিকে কাদা ছুঁড়ে নয়, ব্যক্তি কুৎসায় নয়, জাত-ধর্মের ভিত্তিতে নয়, কোনও খেলা হওয়ার আওয়াজ তুলে নয়, তিনি নিজেই এমন এক মডেল এনেছেন, যা তাঁকে খবরে আনছে বারবার। ভোটপ্রচারে গিয়ে বছর ২৭-এর দীনেশ দাস এমনও বলছেন, তাঁকে ভোট দিতে হবে না, শুধু কথা শুনলেই হবে। ভোটের বাজারে যা সত্যি অভিনব। তিনি বারবার বলছেন, আমি ডিশ অ্যান্টেনা চিহ্নে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়ছি। আমার নামটা ইভিএমের ৯ নম্বরে আছি। এসব কথা বলে ভোট চেয়ে আমি মানুষের সময় নষ্ট করতে চাই না। আমার নির্বাচনী প্রচারের বক্তব্যের নির্যাস হল, আমি ভোটে জিতি কিংবা হারি সেটা কোনও ফ্যাক্টর হবে না। কারণ আমি একটা ভিশন নিয়ে এসেছি। সেটা মানুষের কাছে জানাতে চাই।

আরও পড়ুন: পঞ্চম দফার ভোটে এই পাঁচ প্রার্থীই প্রধান তারকা

ভোটপ্রচারে সেটা বলার পরিধি অনেক বড় থাকে, আমি সেই পরিধিটা কাজে লাগিয়ে মানুষকে বলতে চাই, বনগাঁকে বেকারমুক্ত, স্বচ্ছ এক অঞ্চল বানানোর সব পরিকল্পনা আমার তৈরি। মানুষের জন্য কাজ আমি করবই, মানুষের পাশে আমি থাকবই। তবে এটা ঠিক, প্রশাসনিক ক্ষমতা পেলে আমার ভিশনকে বাস্তবায়িত করতে অনেক সুবিধা হয়। তাই আমি বলব, ভোট দিন বুঝেশুনে। বড় দলের টোপ নয়, মোহ নয়, অপ্রাসঙ্গিক প্রচার নয়, নিজের ভোটটা দিন খুব ভাবনাচিন্তা করে। আমি আগেও বলেছি, আপনার একটা ভোট বনগাঁকে বদলে দিতে পারে। ২০২১-এর নির্বাচনে এসে আপনার ভোটটা যেন ১৯৭১-বা ১৯৯১-র ভাবনার মত পুরনো না হয়। এবারের ভোটে হোক নয়া ভাবনার জন্ম। বড় দলকে ভোট মানেই সেই থোড়বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়। বনগাঁকে বদলাতে, আপনার চারপাশে থাকা হতাশা-অন্ধকার-বেকারত্ব ঘোচাতে সবার আগে আপনার ভোট দেবার প্রথাগত ভাবনা বদলান।

নির্বাচনী প্রচারে নিজের কেন্দ্র পুরো চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। মানুষকে বোঝাচ্ছেন, বেকারত্বই হল আসল সমস্যা। শিক্ষাই হল উন্য়নের প্রথম ধাপ। নির্বাচনী প্রচারের মাঝেই তাঁকে প্রশ্ন করা হল, নির্দল হয়ে লড়া মানে তো গোঁজ প্রার্থী বা শখে দাঁড়ানো বা বড় দল টিকিট না দিলে ক্ষোভে নির্দল হওয়া। জবাবে দীনেশ দাস বললেন, “এটা একেবারে ভুল কথা। বিদেশের ভোটে নির্দলদের বড় ভূমিকা থাকে। আমাদের দেশেও নির্দল হয়ে লড়ে, জিতে ভাল কাজ করার নজির আছে। তবে এটা ঠিক এখন নির্দলরা অনেক সময় বড় দলের বিক্ষুব্ধ, বা গোঁজ প্রার্থী। এটা সামাজিক অবক্ষয়ের প্রমাণ। আসলে সেই নির্দল প্রার্থীরা তখনই মূল্যহীন, যখন আসে কোনও দলের কাছে আশা করে, দলের জন্য কিছু করে শুধু প্রার্থী হবে বলে। আমি কোনও দলের জন্য কিছু করিনি, কোনও কিছু আশাও করিনি। আমি মানুষের জন্য করেছি, করছি, করব। প্রশাসনিক ক্ষমতা পেলে বৃহৎ আকারে করার সুযোগ পাবো বলেই ভোটে দাঁড়ানো। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের অনেকেই বড় বড় রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞাপন, সরকারী বিজ্ঞাপনের স্বার্থে নির্দল প্রার্থীদের ভোটারদের কাছে ছোট করে দেখায়, হাসিঠাট্টা করায়। এর পিছনে কারণ হল যাতে নির্দলরা বড় দলগুলোর স্বার্থে আঘাত করতে না পারে।”