নিজস্ব সংবাদদাতা: ছেলে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তিনি বিষোদগার শুরু করেছিলেন। তখনই জল কোনদিকে গড়াতে পারে, তা বেশ অনুধাবন করা যাচ্ছিল। এরপর একেবারে ভোটের মুখে তৃণমূল শিবির ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। আর এরপরই প্রশ্নের মুখে শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ। এমতাবস্থায় এই প্রবীণ রাজনীতিকের ‘‌পুনর্বাসন’‌ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

খবর, সব ঠিকঠাক চললে পূর্বাঞ্চলের কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল করা হতে পারে তাঁকে। 
অধিকারী পরিবারে প্রথম শুভেন্দুই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। সেই থেকে গুঞ্জনটা চলছিল। এরপর সৌম্যেন্দু এবং সবশেষে মোদীর সভায় বিজেপিতে যোগ দেন শিশির অধিকারী। তিনি কাঁথির তৃণমূল সাংসদ ছিলেন। বিজেপিতে যোগদানের পরই শিশিরবাবুর সাংসদ পদ খারিজ করার জন্য উদ্যোগী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। দলের তরফে জানানো হয়েছে, ভোট মিটলে লোকসভার স্পিকারের কাছে শিশিরকে সরানোর জন্য আবেদন পাঠানো হবে। 

সাংসদ পদ হারানোর পর প্রবীণ এই রাজনীতিককে সম্মানীয় কোনও পদে বসাতে চায় বিজেপি। জানা গিয়েছে, পূর্বাঞ্চলের এক রাজ্যে আগামী আগস্টেই সেখানকার রাজ্যপালের মেয়াদ শেষ হবে। কেন্দ্র সরকারের ইচ্ছে, সেখানেই বসানো হোক শিশিরকে। শিশিরবাবু নিজে অবশ্য এই নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে শিশির কাঁথির সাংসদ পদ থেকে সরে গেলে বিজেপি–র আর একটা লাভও হবে। কাঁথির এই আসনটি নিজেদের দখলে নিয়ে আসার সুযোগ পাবে তারা। কারণ তখন এই আসনে পুনর্নির্বাচন হবে। সেক্ষেত্রে সেই নির্বাচন জিতে আরও একটি লোকসভা আসন নিজেদের দখলে আনার সুযোগ পাবে দেশের শাসকদল।

প্রশ্ন উঠছে, এই কাঁথি লোকসভা আসনে বিজেপি কাকে প্রার্থী করতে পারে? বিজেপি এই নিয়ে যদিও এখনই মুখ খুলতে নারাজ।‌ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকারী পরিবার আসনটি হাতছাড়া করতে চাইবে না। তাই এই আসনে শুভেন্দুর ভাই সৌম্যেন্দুকেই প্রার্থী করা হতে পারে। কাঁথি পুরসভার প্রধান প্রশাসক ছিলেন তিনি। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সৌম্যেন্দুকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। তার পরেই বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। এবার কাঁথির সাংসদ হওয়ার দৌড়ে তাই এগিয়ে সেই সৌম্যেন্দুই, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে যতক্ষণ না রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন মিটছে, ততক্ষণ কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়।