নিজস্ব সংবাদদাতা- মূলস্রোতের রাজনীতিতে এসে কিছুটা কি পিছিয়ে পড়ছেন কানাইয়া কুমার? প্রশ্ন উঠছে, কারণ এই বামপন্থী ছাত্র নেতা যেভাবে শুরু করেছিলেন সেই তেজ যেন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বিভিন্ন সময়ে মন্তব্য করেন তার নিজের দলের অভিজ্ঞ নেতারাই লাগাম টেনে ধরায় একটু যেন ছন্দপতন ঘটেছে। কিন্তু এবার দলীয়ভাবে জহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংসদের এই প্রাক্তন সভাপতিকে সতর্ক করা হল।

কানাইয়া কুমারের উত্থান সিপিআই-এর ছাত্র সংগঠন এআইএসএফ-র হাত ধরে। যদিও খুব দ্রুত তিনি এই বামপন্থী দলটির জাতীয় পরিষদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু বিহার বিধানসভার নির্বাচন-পরবর্তী পর্যায়ে পর একের পর এক বিতর্কিত ঘটনার সঙ্গে তার নাম জড়িয়ে যায় তার। এবার জাতীয় পরিষদের বৈঠক ডেকে কানাইয়াকে সতর্ক করে প্রস্তাব পাস করাল সিপিআই নেতৃত্ব। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী দলীয়ভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে কানাইয়া কুমারকে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে এর পরও যদি তিনি নিজেকে না সংশোধন করেন, তবে তার বিরুদ্ধে দল কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে।

ঘটনা হল কিছুদিন আগে নিজেরই দলকে ‘কনফিউশন পার্টি অফ ইন্ডিয়া’ বলে কটাক্ষ করেন কানাইয়া কুমার। এরপর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে গত ১ ডিসেম্বর তিনি তার এক দল সমর্থক নিয়ে বিহারের সিপিআই নেতা ইন্দু ভূষণের ওপর চড়াও হয়েছেন। ওই প্রবীণ নেতাকে মারধর করার পাশাপাশি পার্টি অফিসেও কানাইয়া অনুগামীরা ভাঙচুর চালিয়েছে বলে খবর। যদিও এই বিষয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে এই প্রাক্তন ছাত্র নেতা দাবি করেন ঘটনার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

কানাইয়া কুমার ও তার সমর্থকদের আচরণ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সিপিআই-এর অভ্যন্তরে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছিল। গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত হায়দ্রাবাদে সিপিআই-এর জাতীয় পরিষদের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই দলের সম্পাদক ডি রাজা নিজে কানাইয়া কুমারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ করেন। এই যুব নেতাকে সতর্ক করে দিয়ে আনা প্রস্তাবটি সিপিআই-এর জাতীয় পরিষদে বিপুল সমর্থন পাস হয়ে যায়। কেবলমাত্র তিনজন নেতা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। যদিও শরীর খারাপের কারণ জানিয়ে কানাইয়া নিজে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।

এর আগে সিপিআই নেতৃত্তের একাংশ অভিযোগ করেছিল তাদের থেকে সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠতা কানাইয়া কুমারের। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে ক্রমশ বামপন্থী রাজনীতির মূল কক্ষপথ থেকে সরে যাচ্ছেন এই প্রাক্তন ছাত্র নেতা। যদিও তা কতটা ঠিক একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।