আদি অকৃত্রিম যুগ থেকেই অন্যান্য পশুর তুলনায় কুকুরের সঙ্গে মানুষের বন্ধন অত্যন্ত দৃঢ়। ইতিহাস বলে, কুকুরকেই প্রথম পোষ মানিয়েছিল আদিম মানুষ। আর সৃষ্টির সেই প্রথম সময় থেকে যে বন্ধন গড়ে উঠেছে, তা আজও সেই একই রয়ে গেছে। অন্তত উত্তরপ্রদেশের ছোট্ট অঙ্কিতের ঘটনা তেমনটাই প্রমাণ করল।

উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফর নগরের রাস্তার ধারে বেশ কিছুদিন ধরেই বাস করছে ছোট্ট অঙ্কিত। সেখানে তার সঙ্গী রাস্তার একটি কুকুর। কুকুরকে জড়িয়েই রাতে রাস্তার ধারে ফুটপাতে ঘুমোয় সে। মা বাবা কেউ যখন তার পাশে নেই, তখন পথের কুকুরই হয়েছে তার সুখ-দুঃখের একমাত্র সঙ্গী। গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় কুকুরের সঙ্গে ছোট্ট অঙ্কিতের ঘুমানোর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে অভিভূত নেটিজেনরা।

অঙ্কিত
divya bharat

কে এই অঙ্কিত? কী তার গল্প? জানা গেছে, ৯-১০ বছরের অঙ্কিতের বাবা জেলবন্দী। আর তার মা তাকে রাস্তাতেই ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তারপর থেকেই মাথার উপর ছাদ নেই অঙ্কিতের। রাস্তাই ঘরবাড়ি তার। মুজফ্ফর নগরের রাস্তায় অঙ্কিত চা আর বেলুন বিক্রি করে কোনো রকমে পেট চালায়। কোথা থেকে এসেছে, কোথায় তার বাড়ি কিছুই জানে না অঙ্কিত। শুধু জানে তার জীবন যুদ্ধটা আর পাঁচ জনের মত সহজ সরল নয়, বরং বেশ কঠিন।

ফুটপাতের ঠিকানায় ছোট্ট অঙ্কিতের একমাত্র সঙ্গী ড্যানি; রাস্তার একটি কুকুর। অঙ্কিতের সঙ্গে সঙ্গেই সর্বক্ষণ ঘুরে বেড়ায় সে। এক মুহূর্তের জন্যেও তাকে চোখের আড়াল করে না। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে ড্যানিকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের রাস্তায় বেঁচে আছে অঙ্কিত। দিনে যা রোজগার করে, ড্যানির সঙ্গে ভাগ করে তা থেকে খাবার খায়।

IMG 20210120 224414

কিছুকাল আগে, একজন চিত্র সাংবাদিক অঙ্কিত এবং ড্যানির ঘুমন্ত অবস্থায় একটি ছবি তোলেন। ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেই মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। তারপর থেকেই অঙ্কিতের খোঁজ চলছিল। অবশেষে গত সোমবার তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। সূত্রের খবর, অঙ্কিত এখন রয়েছে মুজফ্ফর নগরের জেলা পুলিশ কর্মকর্তা অভিষেক যাদবের হেফাজতে। তিনিই অঙ্কিতকে খুঁজে বের করার জন্য পুলিশের একটি দলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরই বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ চালানোর পর পাওয়া যায় অঙ্কিত ও তার ছোট্ট ড্যানিকে।