নিজস্ব প্রতিবেদন: পশ্চিমবঙ্গের প্রথম দফার ভোট পার হয়ে শুরু হয়ে গেছে দ্বিতীয় দফার তোড়জোড়। আর কয়েক ঘন্টা বাদেই শুরু হবে বহু আলোচিত নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই আসরে হঠাৎই যেন ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন অধীর চৌধুরী। বঙ্গ কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি তথা বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। এবারের ভোটে তাঁর দল তৃণমূল আর বিজেপির বিরোধিতায় জোট বেঁধেছে বাম শিবিরের সঙ্গে। ত্রিপাক্ষিক জোটের শরিক হয়েছে আব্বাস সিদ্দিকীর নতুন দল আইএসএফ-ও। শাসক বিরোধিতায় যখন রাজ্যের কোণায় কোণায় গলা ফাটাচ্ছে সংযুক্ত মোর্চা, তখন বঙ্গ কংগ্রেসের প্রধান মুখ অধীর চৌধুরীর নীরবতা যেন তুলে দিয়েছে অনেক প্রশ্ন। একেবারেই যে রাজনৈতিক প্রচারে যাচ্ছেন না তিনি তা নয়, তবে বলা বাহুল্য তাঁর প্রচারে সেই উদ্যম, ক্ষুরধার তেজ আজ চোখে পড়ার মতো অনুপস্থিত।

এমনিতে মতাদর্শের আঙিনায় কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের তফাৎ আকাশ পাতাল। তা সত্ত্বেও ভোট বাক্সের স্বার্থে বাংলায় এই জোট বাঁধতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। নানা দ্বিধা দ্বন্দ্ব মনোমালিন্যের বেড়াজাল কাটিয়ে গড়ে উঠেছে আজকের সংযুক্ত মোর্চা। নীল বাড়ির ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে তৃতীয় দল হিসেবে যথেষ্ট আশাও জাগাচ্ছে জোট শিবির। কিন্তু জোটের পথে এখনও একটা বড় কাঁটা কংগ্রেসী নেতৃত্ব, অনন্ত বঙ্গ রাজনীতির সামগ্রিক ছবিটা দেখে সামনে আসছে সেই চিত্রই।

অমিত শাহ নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে জে টি নাড্ডা, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা ভোটের আগে বাংলায় এসে প্রচার চালিয়েছেন ব্যাপক। কিন্তু কংগ্রেসের দিকে তাকালে সেখানেই দেখা যাচ্ছে ভিন্ন ছবি। আজ পর্যন্ত কংগ্রেসের তরফে একজন শীর্ষ নেতাও ভোট প্রচারে পা রাখেননি পশ্চিমবঙ্গে। যদিও তামিলনাড়ু, কেরালা কিংবা আসাম পুদুচেরিতে গিয়ে প্রচার চালাতে অসুবিধা হয়নি রাহুল গান্ধী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীদের। কিন্তু বাংলা? নৈব নৈব চ। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের এহেন আচরণে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। আর সে প্রশ্নের অনিবার্য জবাব হিসেবে উঠে আসছে বঙ্গ রাজনীতির সাম্প্রতিক সমীকরণ।

বাম-ডান জোটকে যদি এড়িয়ে চলতে চান গান্ধীরাও, যদি বাংলায় জোট সত্ত্বেও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী কেরালায় গিয়ে বাম সরকারকে তুলোধুনো করতে পারেন অনায়াসে, তবে অধীর চৌধুরীর নীরবতার কারণও সহজেই অনুমেয়।