নিজস্ব সংবাদদাতা- গতকাল অমিত শাহ কাকদ্বীপের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন এ রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসলে মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ হাব বানানো হবে। পাশাপাশি ৪ লক্ষ মৎস্যজীবীকে বছরে ৬ হাজার টাকা করে সাহায্যের কথা তিনি ঘোষণা করেন। সেইসঙ্গে মৎস্য জাতীয় দ্রব্য বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যের নতুন একটি মন্ত্রক তৈরি করা হবে বলেও তিনি জানান। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর এই সমস্ত প্রতিশ্রুতির পাল্টা দিতে আজ তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখানেই তিনি বলেন, “গুজরাটে প্রদীপের নিচে অন্ধকার আছে।”

ব্রাত্য বসুর অভিযোগ গুজরাটের বাসিন্দা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ রাজ্যে এসে মৎস্যজীবীদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করছেন যা আসলে ভাবের ঘরে চুরি। বিজেপি নেতার এই প্রতিশ্রুতির কোনো মূল্য নেই বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, “গুজরাট হাইকোর্ট গত কয়েক বছরে পাঁচবার রাজ্য সরকারকে সতর্ক করে বলেছে আদিবাসী ও মৎস্যজীবীদের পাশে দাঁড়ান, তারা অত্যন্ত দুরাবস্থার মধ্যে আছে। ওই রাজ্য সরকার চালায় বিজেপি। সেখানে কোনো কাজের কাজ করছে না অথচ এ রাজ্যে এসে মৎস্যজীবীদের উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।”

ব্রাত্য বসু পিএম কিষাণ  সম্মন প্রকল্পের সঙ্গে রাজ্য সরকারের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের তুলনা করে বলেন, “পিএম কিষাণ নিধিতে একর প্রতি একজন কৃষক পাবে ১,২০০ টাকা। আর কৃষক বন্ধু প্রকল্পে একর প্রতি একজন কৃষক পাচ্ছে ৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ রাজ্য সরকারের প্রকল্পে একজন কৃষক প্রতি একরে ৪,৮০০ টাকা বেশি পাচ্ছে। মানুষ কোন প্রকল্পের সুবিধা নিতে চাইবে?” পিএম কিষাণ নিধি সম্মান প্রকল্পে ২ হেক্টর পর্যন্ত জমি থাকা কৃষকদের ক্ষুদ্র চাষী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে এই নাট্যকার রাজনীতিবিদ বলেন, “আমার গফুর মিঞার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মহেশ গল্পে জোতদার কৃষকদের আচরণে গফুর মিঞার কী অবস্থা হয়েছিল আমরা সবাই জানি। এরা নামেই গোমাতা গোমাতা করেছে, না গরুর দুঃখ বোঝে না সাধারন মানুষের।”

এই সাংবাদিক সম্মেলনে ব্রাত্য বসু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নাম না করে বলেন, “কাল একজন এসে শিক্ষকদের নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেল। অথচ গুজরাটের শিক্ষকরা অনেকেই ঠিকভাবে পেনশন পারছে না। আর এখানে এসে বলছে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াবে। উনি যা মিথ্যা কথা বলেন তা প্রধানমন্ত্রীকেও লজ্জা দেবে।” তিনি যে ঘুরিয়ে অমিত শাহকে মিথ্যাবাদী বললেন তা পরিষ্কার। পাশাপাশি দাবি করেন গুজরাটে ৪০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। তাদের উন্নয়নের বিষয়ে সে রাজ্যের সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।