২০২০ সালের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলসমূহ যখন সামনে এল তখন বিজয়ী ডেমোক্র্যাট দলই নয় উচ্ছ্বসিত হয়েছিল ভারতবাসীও। কেন? আসুন ফলাফলের সারাংশ একটু দেখে নেই।
রিপাবলিকান ( ডোনাল্ড ট্রাম্প ) | ২৩২ |
ডেমোক্র্যাট ( জো বাইডেন ) | ৩০৬ |
![ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত হওয়ার দরুন আমেরিকার সাথে ভারতের সখ্যতা কি আরও নিবিড়ের পথে? 2020 : Smooth or Hard for Indo America? 1 images.jpeg](https://banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/images.jpeg.jpg)
সংখ্যার তত্ত্বের নিরীখে জয়ী দল ডেমোক্র্যাটের রাষ্ট্রপতি হলেন জো বাইডেন (Joe Biden https://twitter.com/JoeBiden?ref_src=twsrc%5Egoogle%7Ctwcamp%5Eserp%7Ctwgr%5Eauthor) আর উপরাষ্ট্রপতি হলেন কমলা হ্যারিস (Kamala Harris https://twitter.com/KamalaHarris?ref_src=twsrc%5Egoogle%7Ctwcamp%5Eserp%7Ctwgr%5Eauthor)। এই দুজনের ব্যাক্তিগত জীবনের দিকে আলোকপাত করলেই স্পষ্ট হবে আমেরিকার নির্বাচনের ফলাফলে ভারত এতটা কেন উৎসাহিত!
জো বাইডেন আগাগোড়াই আমেরিকা নিবাসী হলেও উপরাষ্ট্রপতি থাকাকালীন তাঁর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক সম্পর্ককে নতুন করে উস্কানি দেয় নি। শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখার জন্য বাইডেনের দৃঢ়তা অত্যন্ত প্রশংসার দাবী রাখে। শুধু ভারত না সামগ্র বিশ্বের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি, তাঁর কাজের জন্য দেওয়া কথা ও তাঁর দলমত ভারতের জনতাকে আশাবাদী করে তোলে।
০
ইসরাইলের মিসাইল নিয়ে কারবার রদের ক্ষেত্রেও জো বাইডেনের পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। ২০২০ সালের নির্বাচনে ভোটের প্রচারের সময়ও তাঁর মূল উদ্দেশ্য নজর কেড়ে ছিল বিশ্বের দরবারে।
০আমেরিকায় পড়তে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার নিবারণের আশ্বাস ছিল তার মধ্যে অন্যতম। যা ভারত ও আমেরিকা দুই দেশের অন্তর্বর্তী সম্পর্কের কোমলতা বজায় রাখতেই সাহায্য করবে।
![ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত হওয়ার দরুন আমেরিকার সাথে ভারতের সখ্যতা কি আরও নিবিড়ের পথে? 2020 : Smooth or Hard for Indo America? 2 আমেরিকার ভোট](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2020-10%2Fb429a3a0-f81b-4214-9d3c-3eb21aac1296%2FUntitled_6.jpg?w=640&auto=format%2Ccompress)
![ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত হওয়ার দরুন আমেরিকার সাথে ভারতের সখ্যতা কি আরও নিবিড়ের পথে? 2020 : Smooth or Hard for Indo America? 2 আমেরিকার ভোট](https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2020-10%2Fb429a3a0-f81b-4214-9d3c-3eb21aac1296%2FUntitled_6.jpg?w=640&auto=format%2Ccompress)
এবার আসা যাক আমেরিকার উপরাষ্ট্রপতি কমলা হ্যারিসের প্রসঙ্গে। তিনি আমেরিকার রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর মাতৃকুল ছিল ভারতীয়। মাতামহ পি.ভি.গোপালান আর মাতামহী রাজম ছিলেন ভারতবর্ষের চেন্নাইয়ের নিবাসী। তীব্র আশা তাই ভারতবর্ষের মানুষের ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই উপরাষ্ট্রপতি ভারত ও আমেরিকার সুসম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
বাইডেনের ক্যাবিনেট টিমে যতজন সদস্য আছে তার মধ্যে ২০ জনেরও বেশি সদস্য হল ভারতীয়। তার মধ্যে রয়েছে একজন ভারতীয়ও। হোয়াইট হাউসের বাজেট টিমেও থাকছেন দুজন ভারতীয় মহিলা সদস্য – নীরা টন্ডন (Neera Tanden) ও জেন সাকি (Jen Psaki)। তাদের মধ্যে নীরা টন্ডন হলেন বাঙালি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক বিবেক মূর্তি রয়েছেন কো ভিড টাস্ক ফোর্সের সহ উপদেষ্টা পদে। শক্তিসচিবের পদে থাকছেন বাঙালি বিজ্ঞানী তথা স্ট্যানফোর্ড বিশ্ব বিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক অরুণ মজুমদার।
![ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত হওয়ার দরুন আমেরিকার সাথে ভারতের সখ্যতা কি আরও নিবিড়ের পথে? 2020 : Smooth or Hard for Indo America? 3 আমেরিকা](https://akm-img-a-in.tosshub.com/indiatoday/images/bodyeditor/202011/Barometer_Biden_s_Indians-1200x6000.jpg?i6oN4G_.YvR_eBAur0t4d5KXGWCRWcNr)
![ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত হওয়ার দরুন আমেরিকার সাথে ভারতের সখ্যতা কি আরও নিবিড়ের পথে? 2020 : Smooth or Hard for Indo America? 3 আমেরিকা](https://akm-img-a-in.tosshub.com/indiatoday/images/bodyeditor/202011/Barometer_Biden_s_Indians-1200x6000.jpg?i6oN4G_.YvR_eBAur0t4d5KXGWCRWcNr)
যে দেশের ট্রাঞ্জিশন টিমে এতো সংখ্যক বাঙালি তথা ভারতীয় সদস্য রয়েছেন সেই দেশের সাথে ভারতের বাণিজ্য, সামরিক সম্পর্কতে কোমলতা বিরাজ করবে এই কামনাই করা যায়। দুই দেশের মধ্যে টানাপড়েন তবুও বেশ কিছু জায়গায় বর্তমান। রাষ্ট্রপুঞ্জের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে মদতের সুর ধ্বনিত হতে দেখা গেছে ইতিমধ্যেই। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি বজায় রাখার প্রস্তাব রাষ্ট্রপুঞ্জ যদিও বারবার প্রস্তাব করেছেন।
বর্তমানে আমেরিকার স্বাস্থ্য অবস্থাও কোভিডের কারণে যথেষ্ট চিন্তার। প্রতি মিনিটে ৯৯ জন আক্রান্ত হচ্ছে, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুর সংখ্যা শুধু কোভিডের কারণেই ২৭৩১। নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মোকাবিলায় বদ্ধপরিকর। অন্য দিকে চাকরির ছাঁটাই বাড়ছে উত্তরোত্তর। আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়রা তাদের কর্মসুরক্ষা ও স্থায়িত্বের কারণে যে উদ্বেগ নিয়ে ছিলেন তারা বাইডেনের আসার ফলে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।
ছাত্রছত্রীদের জন্য আমেরিকার ভিসা জটিলতা শিথিল করার যে দাবী বাইডেন করেছিলেন তা পূর্ণতা পাওয়ার লক্ষ্যে বেশ খানিকটা পদক্ষেপ এগিয়েছে। যে যে অঙ্গীকার নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকালে করেছিলেন তা ফলপ্রসূ হবে শিগগিরি। তাই আশা করা যায় যে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক নিবিড় হবে ভবিষ্যতে।