নিজস্ব সংবাদদাতা: মানুষের স্বার্থে কাজ করার জন্য কোনো রাজনৈতিক দলে নাম লেখাতে তিনি রাজি নন। আবার লাইমলাইটে এসেও সমাজসেবা করতেও তিনি ঘর অবিশ্বাসী। তাই প্রচারের আশা না করেই সারা বছর ধরেই নানারকম সেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন তিনি। যখন তাঁর বেশিরভাগ সহকর্মীই মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নাম লেখাচ্ছেন, তখন নিজের একার ক্ষমতাকে সঙ্গী করেই জনগণের সাহায্য করে চলেছেন টলি ডিভা ঋতাভরী চক্রবর্তী। এই যেমন ধরুন, অনাথাশ্রমের শিশুদের সঙ্গে জন্মদিন পালন কিংবা মূক ও বধিরদের পাশে থাকা। মাঝেমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সে ব্যাপারে অবগত হন তাঁর অনুরাগীরা। করোনা কালেও সমাজসেবায় কোনোরকম বিচ্যুতি ঘটেনি। আর এবার ফের নিজের মহানুভবতার পরিচয় দিলেন ঋতাভরী।

কী এমন করলেন টলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী? আসলে দেশজুড়ে নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে মারণ করোনা ভাইরাস। সোমবারই যেমন স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে ২৪ ঘণ্টায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ পেরিয়েছে। স্বস্তিতে নেই বাংলাও। সেখানেও একদিনে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ২০০০ ছুঁই ছুঁই। এমন পরিস্থিতিতে টেস্টিং, ট্রেসিং আর টিকাকরণই মূল ভরসা সাধারণ মানুষের। ভারতের অন্যান্য প্রান্তের মতো এ রাজ্যেও চলছে করোনার টিকাকরণ। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, বর্তমানে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেকেই ভ্যাকসিন নিতে পারছেন।

কিন্তু শহরের ঘন বস্‌তি অঞ্চলে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার বিষয়ে সচেতনতা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়েও তাঁরা বেশ উদাসীন। সেই মানুষদেরই এবার টিকাকরণের ব্যবস্থা করলেন ঋতাভরী। শনিবার বন্ধু রাহুল দাশগুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে দত্তাবাদ বস্‌তির ১০০ জন দুঃস্থ প্রবীণ নাগরিককে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন তিনি। ‘মসিহা’ হয়ে ওঠা অভিনেত্রীর এমন উদ্যোগে মুখে হাসি ফুটেছে বস্‌তির বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরও।

নিজের সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে গত পরশু এই টিকাকরণ সংক্রান্ত একটি সুন্দর ভিডিও পোস্ট করেছেন ঋতাভরী। যেখানে দেখা যাচ্ছে কোভিড প্রোটোকল মেনে দত্তাবাদের একশো প্রবীণ বাসিন্দাকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। কোভিডের বিরুদ্ধে সকলে সতর্ক হলে এবং একজোট হলে, তবেই এই অতিমারীর সঙ্গে অসম লড়াইয়ে জেতা সম্ভব হবে। নিজের এই উদ্যোগের মাধ্যমে সে বার্তাই দিয়ে রাখলেন ঋতাভরী। একইসঙ্গে বার্তা দিলেন টলিজগতের সহকর্মীদেরও। মানুষের জন্য কাজ করতে চাইলে যে কোনো রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় না থেকেও করা যায়, সেটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে স্পষ্ট দেখিয়ে দিলেন তিনি।