নিজস্ব সংবাদদাতা: একেবারেই দোরগোড়ায় একুশের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ভোট উত্তাপে কার্যত ফুটছে বাংলা। বিজেপি থেকে শুরু করে তৃণমূল, সিপিএম- প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছে প্রতিটি দলই। তবে এবার প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের সেই আগুন পৌঁছে গেল কংগ্রেসের ঘরেও। দল নির্ধারিত প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালালেন হাত শিবিরের কর্মী সমর্থকরা। সূত্রের খবর, মালদহের কালিয়াচকে মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে এবার কংগ্রেসের তরফে ভোটে লড়ার টিকিট পেয়েছেন দুলাল শেখ। কিন্তু এই প্রার্থীকে মানতে নারাজ দলেরই কর্মীদের একাংশ। ফলে তাঁরা যথারীতি প্রার্থী বদলের দাবিতে শুরু করেছেন বিক্ষোভ।

এদিন কালিয়াচকে দলের ১ নম্বর ব্লক কংগ্রেসের পার্টি অফিসে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি অবিলম্বে দুলাল শেখের বদলে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটের টিকিট দিতে হবে। পরে অবশ্য পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দিকে চোখ রাখলে কংগ্রেসের এই প্রার্থী ক্ষোভের বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যের অন্যান্য জেলায় কংগ্রেসের তেমন প্রভাব না থাকলেও মালদহে এখনও বেশ শক্তিশালী হাত শিবির। টাই কালিয়াচকের মত জায়গায় এই ধরণের ঘটনা একেবারেই অভিপ্রেত নয় বলে মন্তব্য করেছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব।

সূত্রের খবর, দুলাল শেখকে টাকা নিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে, এমনটাই দাবি বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস কর্মীদের। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের সুপারিশেই দুলাল শেখকে মোথাবাড়ি বিধানসভা থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে দলীয় নেতৃত্ব কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন, আশ্বাস দিয়েছেন। উল্লেখ্য, মালদহে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে গত ২ দিন ধরেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন কর্মীরা। এক সময় যে কোতোয়ালি ভবনের প্রভাবে জেলায় বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত, এখন সেই বাড়ির সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে কসুর করছে না কংগ্রেস কর্মীরা। আগে কারোর ক্ষমতা ছিল না এই বাড়ির বিরুদ্ধে কোনও কথা বলার, বিশেষ করে কংগ্রেসের নেতাকর্মী আর সমর্থকদের। কিন্তু এখন সেই কংগ্রেস কর্মীরাই দলের প্রার্থী বদলের দাবি তুলে এই ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতেও দু’বার ভাবছে না।

গতকাল এই কোতোয়ালি ভবনে এসে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগের তির ছিল রতুয়ার কংগ্রেস প্রার্থী নাজিমা খাতুনের দিকে। কর্মীদের দাবি, আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে প্রার্থী করা হয়েছে নাজিমাকে। যদিও কোতোয়ালি বাড়ির সদস্য তথা কংগ্রেস নেতা ও বিধায়ক ঈষা খান চৌধুরী জানান, এই কেন্দ্রের দাবীদার হিসাবে ১৭জন ব্যাক্তির নাম উঠে আসে। যার মধ্য থেকে রতুয়া বিধানসভার কংগ্রেস নেতৃত্বদের সঙ্গে আলোচনার করেই নাজিমা খাতুনের নাম ঠিক করা হয়। এরপর সেই নাম প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়। তারপর প্রদেশ নেতৃত্ব ও কংগ্রেসের হাইকমান্ড বিবেচনা করে নাজিমা খাতুনের নাম ঘোষনা করেছে। যদিও আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে প্রার্থী করা হয়েছে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ঈষাবাবু জানান কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ থাকতে পারে। তবে তা আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া হবে। সেই ক্ষোভ মিটতে না মিটতেই, এদিন ফের বিপাকে পড়ল মালদহ জেলা কংগ্রেস।