নিজস্ব সংবাদদাতা: গত ১ সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা যুদ্ধের অবসান! করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। আজ বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সকালে ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল থেকেই করোনায় আক্রান্ত ছিলেন বাংলা কবিতা জগতের পঞ্চপাণ্ডবের একজন। হাসপাতালে ভর্তি হতে অনীহা ছিল, তাই বাড়িতেই আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলা সাহিত্য মহল।

গত কয়েকদিন যাবৎ গায়ে জ্বর থাকায়, গত সপ্তাহে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন কবি। এরপর ১৪ এপ্রিল বিকেলে রিপোর্ট এলে জানা যায়, তিনি মারণ করোনা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন। এদিকে, এমনিতেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন কয়েক মাস ধরে, যা শারীরিক ভাবে আরও দুর্বল করে দিয়েছিল তাঁকে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে এ বছর জানুয়ারি মাসে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয় তাঁকে।

তাই কোভিড সংক্রমণ ধরা পরার পর ঝুঁকি না নিয়ে নিজের বাড়িতেই নিভৃতবাসে ছিলেন। তিনি নিজেও হাসপাতালে যেতে চাননি। তাই বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল।কিন্তু মঙ্গলবার রাতে আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বুধবার সকালে তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন কবি। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, নিজের দীর্ঘ কর্মজীবনে নানা ভূমিকা পালন করেছেন কবি শঙ্খ ঘোষ। দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয় এবং শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনাও করেছেন। ইউনিভার্সিটি অব আইওয়ায় ‘রাইটার্স ওয়ার্কশপ’-এও শামিল হন। বছর দুয়েক আগে ‘মাটি’ নামের একটি কবিতায় কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠেছিলেন তিনি।

আজ কবির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “শঙ্খদার মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করছি। তাঁর পরিবার এবং শুভানুধ্যায়ীদের সকলকে সমবেদনা জানাই। কোভিডে মারা গিয়েছেন শঙ্খদা। তা সত্ত্বেও যাতে রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা যায়, আমি মুখ্যসচিবকে তেমনই নির্দেশ দিয়েছি। তবে শঙ্খদা গান স্যালুট একেবারেই পছন্দ করতেন না। তাঁর ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে সেটা বাদ রাখছি।”