নিজস্ব সংবাদদাতা: এবার খাস কলকাতাতেও পদ্ম ফুটবে! লোকসভা ভোটের নিরিখে এমনটাই আশা করছেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। দেখা গিয়েছে, বিধাননগর, রাজারহাট-গোপালপুর, রাসবিহারী, জোড়াসাঁকো এবং শ্যামপুকুরে বেশ ভালমতোই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। যার মধ্যে আগামীকাল রাজ্যের অষ্টম দফার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে উত্তর কলকাতার দুই কেন্দ্র জোড়াসাঁকো ও শ্যামপুকুরে। এই দুই আসনে এবার গেরুয়া ঝড় উঠবে বলেই আশায় বুক বাঁধছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিশেষ করে জোড়াসাঁকো আসনটি নিয়েই স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া বাহিনী।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর ১৯৫১ সাল বাদে এই আসনে কখনও জিততে পারেনি বামেরা। প্রথমে কংগ্রেস, তারপর ২০০১ সাল থেকে এই কেন্দ্রের দখল থেকেছে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতেই। তবে এলাকার গত দু’বারের বিধায়ক স্মিতা বক্সীকে এবার সেখানে টিকিট দেয়নি দল। বদলে তাঁকে পাশের শ্যামপুকুর কেন্দ্রে টিকিট দেওয়া হয়েছে। ২০১১ সালে এই কেন্দ্রে টিএমসি প্রার্থী স্মিতা বক্সী পেয়েছিলেন ৫৭,৯৭০ ভোট। আর বিজেপির মীনাদেবী পুরোহিত পেয়েছিলেন ১৭,১৬১ ভোট। আবার গত বিধানসভায় তৃণমূলের স্মিতা বক্সী ফের জিতেছিলেন ৬,২৯০ ভোটের ব্যবধানে। সেবার মোট ভোটের ৪৩ শতাংশ গেছিল ঘাসফুল শিবিরের দিকে। আর রাহুল সিনহা পেয়েছিলেন ৩৭ শতাংশ ভোট। তবে ২০১৯ সালে ফের এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে থাকায় কিছুটা আশার আলো দেখছেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা।

গত দু’বার বিধানসভা নির্বাচনে জোড়াসাঁকো থেকে ঘাসফুল ফুটিয়েছেন স্মিতা বক্সীই। কিন্তু এবার সেই কেন্দ্রে তাঁকে টিকিট দেননি মমতা। জোড়াসাঁকো এলাকাটি মূলত হিন্দিভাষী অধ্যুষিত হওয়ায় মমতা বুঝতে পেরেছিলেন, সেই ভোট পেতে গেলে হিন্দিভাষী কাউকে দাঁড় করাতে হবে। তাই স্মিতা বক্সীকে সরিয়ে এবার সেই কেন্দ্রে বিবেক গুপ্তাকে দাঁড় করানো হয়েছে। তিনি অবাঙালি হওয়ায় বিজেপির ভরসাস্থল অবাঙালি ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে পারবেন বলে আশা ঘাসফুল শিবিরের।

এদিকে অষ্টম দফায় ধনী প্রার্থীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন এই বিবেক গুপ্তা। জোড়াসাঁকো বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩২ কোটি টাকা। তবে অবাঙালি ধনী প্রার্থীর প্রচারে তৃণমূলের একটা অংশকে নাকি সেভাবে দেখাই যায়নি। ফলে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়টিও একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এরমধ্যেই প্রার্থী হিসাবে বিবেকের নাম ঘোষণার পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন আগেই জানিয়েছিলেন, সারদার যে বিস্তীর্ণ মিডিয়া ব্রাঞ্চ, তারই মধ্যে একটি পত্রিকার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন বিবেক গুপ্তা। অর্থাৎ তাঁর সঙ্গে সারদার একটি আর্থিক লেনদেনও ছিল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে প্রচারে সুচারু ভাবে এই বিষয়টিকেও ব্যবহার করতে চাইছে বিজেপি।