নিজস্ব সংবাদদাতাঃ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবা মারা গিয়েছিলেন। বিসিসিআই সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে বাড়ি ফেরার অনুমতি দিলেও তিনি বাড়ি ফেরেননি। বরং প্রবল শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে কিভাবে তাদেরই দেশের মাটিতে হারানো যায় সে নিয়ে পরিকল্পনা করে গেছেন। আর তারই ফলাফল চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিপক্ষের ৫ উইকেট।

মহম্মদ
yourstory

তারপর টেস্ট জিতে দেশে ফিরেই বাবার কবরের সামনে শ্রদ্ধা জানাতে গেলেন মহম্মদ সিরাজ। গাব্বায় ভারতের ‘অজি বধ’-এর অন্যতম নায়ক তিনি৷ অস্ট্রেলিয়ায় সফরচলাকালীন বাবা-কে হারিয়েও দেশের হয়ে কর্তব্য পালন করতে বাবা’র শেষ যাত্রায় সামিল হতে পারেননি৷ কিন্তু সিরিজ শেষ করে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেই বিমানবন্দর থেকে সোজা বাবা’র কবরে প্রার্থনা জানাতে গেলেন মহম্মদ সিরাজ৷

গাব্বায় অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর সিরাজ বলেছিলেন, এটা বাবা’র আশীর্বাদ৷ আর গতকাল হায়দ্রাবাদ বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে না-ঢুকে গাড়ি নিয়ে সোজা চলে যান বাবা’র কবরের কাছে৷ সেখানেই ফুল দিয়ে বাবা’কে শেষ শ্রদ্ধা জানান টিম ইন্ডিয়ার এই তরুণ বোলার৷ সিরাজ বলেন, “আমি বাড়ি যায়নি৷ বিমানবন্দর থেকে সোজা কবরস্থানে চলে যায়ই৷ বাবা’র পাশে বসে কিছুক্ষণ সময় কাটাই৷ কথা বলতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছি৷ তারপর বাড়ি ফিরি৷ মায়ের সঙ্গে দেখা হতে মা কাঁদতে শুরু করে৷ আমি মাকে সান্তনা দিই৷ আমার অন্য অনুভূতি হচ্ছে৷ মা আমার বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করছিল৷ আমি কবে ফিরব, দিন গুনতো৷”

13 48 27 2Q
xtratime

উল্লেখ্য, নিজের কেরিয়ারের তৃতীয় টেস্টে পাঁচ উইকেট তুলে নজির গড়েছেন সিরাজ৷ টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন ভারতীয় এই পেসার৷ সেই সঙ্গে গাব্বায় পঞ্চম ভারতীয় বোলার হিসেবে ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়ে এরাপল্লী প্রসন্ন, বিষেণ সিং বেদী, মদন লাল ও জাহির খানের পাশে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

13 47 52 images
free press journal

অজিদের বিরুদ্ধে মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে অভিষেক হয় সিরাজের৷ অভিষেকেই বল হাতে নজর কেড়েছিলেন হায়দ্রাবাদের বছর ছাব্বিশের এই তরুণ৷ সিডনিতে দ্বিতীয় টেস্টে মাত্র দু’টি উইকেট পেয়েছিলেন৷ ব্রিসবেনে প্রথম ইনিংসে একটি মাত্র উইকেট পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৩ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরান সিরাজ৷ মাত্র তৃতীয় টেস্টেই এই কৃতিত্ব ছুঁয়ে ফেলেন সিরাজ৷ সিডনিতে তৃতীয় টেস্টে তাঁকে ‘ব্রাউন ডগ’ বল কটাক্ষ করেছিলেন এসসিজি-র দর্শকরা৷ ব্রিসবেনে তাঁর জবাব দিয়েছেন ভারতীয় পেসার৷

এই পাঁচ উইকেট বাবারই আশীর্বাদ বলে মনে করেন সিরাজ৷ ম্যাচের পর সিরাজ বলেন, “বাবা চাইতেন আমি দেশের হয়ে খেলি৷ বাবার স্বপ্ন সত্যি করতে পেরেছি৷ আজকে যে পাঁচ উইকেটে পেয়েছি, তা বাবা’র আশীর্বাদ৷”