নিজস্ব সংবাদদাতা- ২০১৪ সালে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ভোট আসলেই প্রতারিতদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলি। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বৈতরণী পেরোনোর জন্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে ব্যবহার করে শ্যামল সেন কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের মাধ্যমে সে সময় অল্প কিছু প্রতারিতকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। আবার তার আগে ১৪ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বামেরা ফিরে আসার লক্ষ্যে এই চিটফান্ড কেলেঙ্কারিকে হাতিয়ার করার চেষ্টা করেছিল। যদিও সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগেও বিজেপির পক্ষ থেকে চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কথা অল্পবিস্তর তোলা হলেও এবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেকটাই যেন আড়ালে চলে গিয়েছে সারদা-কাণ্ড।

রাজনীতির কারবারিরা বলে থাকেন চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে যুক্ত তৃণমূলের মূল মাথারা যেহেতু এই মুহূর্তে গেরুয়া শিবিরের ছাতার তলায় আশ্রয় নিয়েছেন তাই বিজেপি আর সারদা কেলেঙ্কারির কথা সামনে আনে না। অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষে এই বিষয়টি সামনে তুলে ধরার কোনো যুক্তি নেই।অপরপক্ষে বাম-কংগ্রেস জোট চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কথা তুলে ধরার চেষ্টা করলেও তাদের রাজনৈতিক প্রভাব এতটাই কম যে তা বিশেষ আমল পায়না রাজ্যবাসীর কাছে।

এই পরিস্থিতিতে আজ নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর মুখে ফের চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কথা শোনা গেল। তিনি দাবি করলেন বিজেপি রাজ্য সরকার তৈরি করতে পারলে প্রতারিত প্রত্যেকের আসল টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তবে সুদ দেওয়া সম্ভব হবে না বলেও জানিয়েছেন এই বিজেপি নেতা।

শুভেন্দু বলেন, “এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরট চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে যুক্ত প্রত্যেকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বাজারে বেচে রাজ্যের তিন কোটি প্রতারিত মানুষের আসল টাকা ফিরিয়ে দেবে। তবে সুদ দিতে পারব না। কিন্তু আপনারা যাতে আসলটা পান তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা আমরা করব।” এর পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বর্তমান তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনেন শুভেন্দু। দাবি করেন রাজ্যের এই মন্ত্রী নাকি নিজের বাড়ি চিটফান্ড সংস্থা ভেরোনার জমির ওপর তৈরি করেছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দুর এই প্রতিশ্রুতি অন্যতম মাস্টার স্ট্রোক হিসেবে দেখা যেতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন এই প্রাক্তন তৃণমূল নেতা খুঁচিয়ে চিটফান্ড কেলেঙ্কারিকে সামনে নিয়ে আসলেন। এটা বিজেপির পক্ষে হিতে বিপরীত হতে পারে।