নিজস্ব সংবাদদাতা- টরে টক্কা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল এবং প্রধান বিরোধী হিসাবে উঠে আসা বিজেপি, কেউ কাউকে যে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে প্রস্তুত নয় তা আবারও প্রমাণ হয়ে গেল। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের পাল্টা হিসাবে বিজেপি আজ জেপি নাড্ডার একের পর এক কর্মসূচি রেখেছে উত্তরবঙ্গের জেলা মালদায়। এদিকে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর পাল্টা জবাব দিতে আজ বিকালে কাঁথিতে জনসভা করার কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অধিকারী গড় বলে পরিচিত কাঁথিতে দাঁড়িয়ে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কি বলেন সেদিকে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল তাকিয়ে আছে। গত কয়েকদিন যাবত বিভিন্ন মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী পরস্পরকে উদ্দেশ্য করে তীব্র বিষোদগার করেন। এই পরিস্থিতিতে কাঁথির জনসভা থেকে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কোনো বার্তা দেন কিনা সেটাই দেখার। এর আগে অবশ্য শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই কাঁথিতে সভা করেন সৌগত রায়, ফিরহাদ হাকিম, কুনাল ঘোষেরা।

সৌগত রায়দের ওই সভাকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট বিতর্ক সৃষ্টি হয় তৃণমূলের অভ্যন্তরে। এই সভা থেকে তার পরিবারের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করা হয়েছে বলে দাবি করে দলের সঙ্গে ব্যবধান তৈরি করেন শুভেন্দু অধিকারীর বাবা তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আজকের সভায় শিশির অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তবে অধিকারী পরিবারের আরেক সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে কোনো আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়নি বলেই খবর।

নবদ্বীপ রাজ্যের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিসরে খুব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হলেও শ্রী চৈতন্যদেবের জন্মস্থানকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক পরিকল্পনা রচনার মতো ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এর আগে ঘটেনি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার হাত ধরে সেই নবদ্বীপ থেকেই পরিবর্তন যাত্রা নামক বিজেপির রথ যাত্রার প্রথম চাকা গড়াতে চলেছে। শ্রীচৈতন্যদেবের বাসভূমিকে কেন্দ্র করে বিজেপির এই পরিকল্পনা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাদের কোনো এক্সট্রা মাইলেজ দেয় কিনা সেটাই দেখার।

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে তারা যে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবে না তা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। জানানো হয়েছে পাল্টা আগামীকাল নবদ্বীপে জনসভা করা হবে। দলীয় মুখপাত্র কুনাল ঘোষের সঙ্গে রাজ্যের শীর্ষস্তরের মন্ত্রীরা ওই জনসভায় উপস্থিত থাকবেন। সেই সঙ্গে বিজেপির চেয়ে অনেক বেশি লোক সমাগম করার চ্যালেঞ্জ নেওয়া হয়েছে রাজ্যের শাসক দলের পক্ষ থেকে।