নিজস্ব সংবাদদাতা: যে কোনো পরিস্থিতিতে, যে কোনো মূল্যে রোগীর সেবা করাই তাঁদের কর্তব্য। কিন্তু সব জীবিকায় সকলে কি আর সমান হয়! যেমন বর্ধমানের এই চিকিৎসক। পারিশ্রমিক পাবেন না জেনে রোগীর প্রেসক্রিপশন থেকে ওষুধের নামই কেটে দিয়েছেন এক ডাক্তার। পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার এই ঘটনায় সময় মতো জরুরি ওষুধ না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এক বৃদ্ধা। যেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয়রা। তাঁদের বিক্ষোভের জেরে বর্তমানে বেপাত্তা চিকিৎসকও। ‘অমানবিক’ চিকিৎসকের শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি জানানো হয়েছে জেলা পরিষদেও। এমন আচরণের জন্য ডাক্তারকে শাস্তি দেওয়া যায় কি না বা কী ধরনের পদক্ষেপ করা যায় তা খতিয়ে দেখছে তারা।

জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ডাক্তারের নাম জ্যোর্তিময় দাস। তিনি এক সময়ে কালনা মহকুমা হাসপাতালের ডাক্তার ছিলেন। এখন প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। বুধবার ব্রেন স্ট্রোক এবং ঘাড়ে যন্ত্রণার সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন এক বৃদ্ধা। তাঁকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে প্রেসক্রিপশনে ওষুধও লিখে দেন জ্যোতির্ময়। কিন্ত বৃদ্ধা তাঁর দাবি মতো পারিশ্রমিক দিতে পারবেন না। তা জানার পরই প্রেসক্রিপশন থেকে ওষুধের নাম কেটে দেন তিনি। এই ঘটনায় জেরে জরুরি ওষুধ না পেয়ে ওই বৃদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

অসুস্থ সেই বৃদ্ধার নাম মালতি দেবনাথ। কালনার নান্দাই গ্রামে বাড়ি তাঁর। বেশ কয়েক মাস ধরেই মাথার সমস্যা ও ঘাড়ের যন্ত্রণায় তিনি ভুগছিলেন। কর্মসূত্রে একমাত্র রোজগেরে ছেলে থাকেন মুম্বইয়ে। বৌমা এবং নাতিকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন অসুস্থ মালতি দেবী। স্থানীয় বাসিন্দারা গত ৪ ফেব্রুয়ারি জ্যোর্তিময় দাসের চেম্বারে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান। সে দিন অবশ্য চিকিৎসককে তাঁর প্রাপ্য পারিশ্রমিক দিয়েছিলেন মালতী। তবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসকের নির্দেশমতো কিছু মেডিকেল পরীক্ষা করিয়ে সেই রিপোর্ট দেখাতে গেলে তিনি জানান পারিশ্রমিক দিতে পারবেন না। তাতেই চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধের নাম কেটে দেন। যেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা।