নিজস্ব সংবাদদাতা: বঙ্গ রাজনীতির সাম্প্রতিকতম প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে ভগবান রাম এবং দুর্গা এক বিশেষ তাৎপর্যে উপস্থাপিত হন। প্রাক-নির্বাচনী আবহে এই বিতর্ক নতুন করে যোগ করেছে উত্তাপ। বস্তুত, বিতর্কের সূত্রপাত মা দুর্গাকে নিয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের কিছু মন্তব্যে। এর জেরেই এদিন এক অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন শাসকদলের নেতারা।

দুর্গাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে দেবীর ‘অপমান’ করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, এদিন এমনটাই দাবি করেছেন শ্রীরামপুর এলাকার তৃণমূল কর্মীরা। আর সেই অপমানের প্রতিবাদেই এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের ১০ জন কর্মী মস্তক মুণ্ডন করেছেন। স্থানীয় কর্মীদের এহেন কীর্তিতে স্বভাবতই এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য।

বস্তুত, দিন কয়েক আগে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে (India Today) আয়োজিত এক আলোচনা চক্রে যোগ দিয়েছিলেন গেরুয়া নেতা দিলীপ ঘোষ। রাজনীতিতে ধর্মের অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেখানে তিনি বলেন কেন তাঁর দল দুর্গা নয়, রামকেই রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে বেছে নিয়েছে। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রশ্ন, “রামের ১৪ জন পূর্বপুরুষের নাম বলে দেওয়া যাবে। কিন্তু দুর্গার পূর্বপুরুষ আছে কি?” রক্তমাংসের মানুষ হিসেবে রাজনীতিতে রাম অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শুধু তাই নয়, দেবী দুর্গার মতো ঈশ্বরকে রাজনীতির আঙিনায় টেনে আনার জন্য তৃণমূলের পাল্টা সমালোচনাও করতে শোনা যায় দিলীপ ঘোষকে। তাঁর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই ওঠে বিতর্কের ঝড়। কড়া সমালোচনা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এদিন অভিনব প্রতিবাদ দেখা গেছে শ্রীরামপুরের রাধাঘাট এলাকার দুর্গামণ্ডপের সামনে। গেরুয়া নেতার ‘পাপের প্রায়শ্চিত্ত’ হিসেবেই মস্তক মুণ্ডন করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই ১০ তৃণমূলকর্মী। তাঁদের মতে, দিলীপ বাবুর মন্তব্যে মা দুর্গাই শুধু নন, অপমানিত হয়েছেন সমগ্র নারী জাতি।

এদিকে দুর্গাকে ঘিরে তৃণমূলের এই প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক বিরোধিতার নামান্তর বলেই দাবি করেছে গেরুয়া শিবির। যাঁরা মহরমের জন্য দুর্গাপুজোর ভাসানে বাঁধা দেয়, তাঁদের মুখে মা দুর্গার অপমানের কথা মানায় না বলেই দাবি করেছে তারা।