নিজস্ব সংবাদদাতা- নবজাতক শিশুদের অপুষ্টির সমস্যা দূর করতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেরল সরকার। মাতৃদুগ্ধ ব্যাঙ্ক তৈরি করে সদ্যোজাত শিশুদের মধ্যে যারা মাতৃদুগ্ধ না পেয়ে গোড়াতেই দুর্বল হয়ে পড়ে, তাদের কাছে এটা এক উল্লেখযোগ্য সুযোগ হিসাবে দেখা দেবে বলেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যের এর্নাকুলাম সরকারি হাসপাতালে মাতৃদুগ্ধের এই ব্যাঙ্কটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রচেষ্টার মূল উদ্যোক্তা কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা, তাঁর কাজ এর আগে করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশ্বের দরবারে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল।

চিকিৎসকরা বারবার জানিয়ে এসেছেন নবজাতকের জন্মের পর প্রথম ছয় মাস মাতৃদুগ্ধ পান করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ এই সময়ে যে সমস্ত শিশুরা মাতৃদুগ্ধ সঠিক পরিমাণে পান করতে পারে তাদের পুষ্টি অন্যদের থেকে অনেক ভালো হয়। এই পর্যায়েতেই সাধারণত প্রাথমিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। সেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠার পিছনে মাতৃদুগ্ধ‌ই মূল ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে সন্তান জন্মের পর মুহূর্তেই মায়ের দেহ থেকে হলুদ রঙের একরকম দুধ নিঃসৃত হয়।

হলুদ রঙের এই দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে। মিল্ক ব্যাঙ্কে মূলত এই দুধ সংরক্ষণ করা হয়। যে সমস্ত মায়েদের শরীরে স্তন্যদুগ্ধের পরিমান বেশি থাকে, তাদের কাছ থেকে তা সংগ্রহ করে পাস্তুরাইজ প্রক্রিয়ায় মিল্ক ব্যাঙ্কে সংগ্রহ করে রাখা থাকে। প্রয়োজনমতো যে সমস্ত নবজাতকরা স্তন্যদুগ্ধের অভাবে ভুগছে তাদের চাহিদা মেটাতে এটি খাওয়ানো হয়।

,দেশের
মাতৃদুগ্ধ এই ভাবেই সংরক্ষিত করে ব্যাঙ্কে রাখা থাকে

অপুষ্টির কারণেই মূলত অনেক মায়ের শরীরে সেভাবে দুধ উৎপাদিত হয় না। এর পাশাপাশি অনেকেই সন্তানের জন্ম দিয়ে মারা যায়, তখন সেই সদ্যজাত শিশুটি মাতৃদুগ্ধের অভাবে ভুগতে থাকে। মূলত এই সমস্যা দূর করার লক্ষ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মাতৃদুগ্ধের ব্যাঙ্ক গড়ে তোলা হয়েছে। ভারতে এইরকম ব্যাঙ্কের সংখ্যা খুবই কম। পশ্চিমবঙ্গের এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এরকম একটি মাতৃদুগ্ধের ব্যাঙ্ক আছে। এছাড়াও পুনের দীনানাথ মাঙ্গেশকর হাসপাতাল সহ দেশের মোট ১৪ টি জায়গায় এরকম ব্যাঙ্ক আগেই গড়ে তোলা হয়েছে।

আজ, অর্থাৎ ৬ ফেব্রুয়ারি কেরলে এই মাতৃদুগ্ধ ব্যাঙ্কটি পথচলা শুরু করছে। তার ফলে ভারতে মাতৃদুগ্ধ ব্যাঙ্কের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ তে গিয়ে পৌঁছবে।