নিজস্ব সংবাদদাতা- চিরাচরিত রীতি ভেঙে সম্ভবত নতুন নজির সৃষ্টি করতে চলেছে এবারের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্য পুলিশকে বাদ করে দিয়ে মুখ্য হয়ে উঠতে চলেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। নির্বাচন কমিশনের সূত্র মারফত এই ফর্মুলার কথা জানা গিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্টভাবে কিছু ঘোষণা করা হয়নি।

বিজেপি পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে অশান্তি নিয়ে বারে বারে অভিযোগ তোলা হয়। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের মুখোমুখি হয় রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ আজ অভিযোগ করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করানোর উদ্দেশ্যে তিনি অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানান।

সিপিআই(এম)-এর পক্ষ থেকে রবিন দেব নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকের সময় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করানোর দাবি তোলেন। এই প্রসঙ্গে তিনি গত লোকসভা নির্বাচনে এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের উদাহরণ টেনে আনেন। সিপিআই(এম) অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও লোকসভা নির্বাচনে একাধিক অঞ্চলে রিগিং হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে যাতে ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো যায় সেই দাবি তোলা হয়।

রাজ্যের বিরোধী দলগুলির একের পর এক অভিযোগের কথা শুনেই সম্ভবত নির্বাচন কমিশন এতদিনের রীতি-রেওয়াজ ভেঙে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ঘটনা যদি শেষ পর্যন্ত দিনের আলো দেখে তাহলে অন্যান্য বারের থেকে অনেক বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী এবারের নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিযুক্ত হবে, যা রাজ্যবাসীর কাছে সম্পূর্ণ নতুন।

জানা যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বিএসএফ ও সিআরপিএফ কর্তাদের এই বিষয়ে প্রস্তুত থাকার বার্তা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।

যদিও আজ সকালে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে সীমান্ত অঞ্চলে বিএসএফের কার্যকলাপে বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে পরোক্ষে প্রচার চালাচ্ছে বিএসএফ। এই কেন্দ্রীয় বাহিনী নাকি সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজনকে ভয় দেখাচ্ছে তারা যাতে ওই নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে ভোট দেয়।

এতদিন কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন রাজ্যে আসলেও মূল দায়িত্বে থাকত প্রধানত রাজ্য পুলিশ। তারা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পথ দেখিয়ে যেমন ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেত, তেমনি কোন জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী যাবে এবং কোথায় যাবে না তাও নির্ধারণ করার ক্ষমতা দেওয়া থাকত রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের কাছে। কিন্তু এই নতুন প্রক্রিয়ায় স্থানীয় অঞ্চল সঠিকভাবে চেনা না থাকা স্বত্বেও কী করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবে সে নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।