নিজস্ব সংবাদদাতা- বোম বিস্ফোরণের ফলে আহত রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিল রাজ্য সরকার। ওয়াই ক্যাটাগরি থেকে তাকে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ সকালেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা করা হয়। এর ফলে তিনি এখন থেকে যেখানেই যাবেন তার কনভয়ের আগে স্থানীয় থানার একটি করে পাইলট কার থাকবে। এছাড়াও সর্বসময়ের জন্য কমান্ডো বাহিনীর নিরাপত্তা পাবেন রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী।

মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর বিধানসভার বিধায়ক জাকির হোসেন এই মুহূর্তে রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এ ভর্তি আছেন। চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে তার শরীরে তিন জায়গায় প্লাস্টিক সার্জারি করতে হতে পারে। তবে শারীরিক পরিস্থিতি এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণে আছে। বিপদের আশঙ্কা কেটে গিয়েছে বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন। তবে তার সঙ্গে যে তৃণমূল কর্মীরা আহত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা এখনও পর্যন্ত অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তবে চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন যাতে তাদের সুস্থ করে তোলা যায়। জাকির হোসেনের একজন সঙ্গীর শরীরে বড় মাপের স্প্লিন্টারের টুকরো পাওয়া গিয়েছে।

বড় সাইজের স্প্লিন্টার দেখে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ঐদিন সুতির নিমতিতা রেলস্টেশনে সাধারণ কোনো বোম রাখা ছিল না। সম্ভবত ব্যাগের মধ্যে ভরে আইইডি বিস্ফোরক রাখা ছিল। মন্ত্রীর কোনো একজন সঙ্গী সেই ব্যাগটি সরানোর চেষ্টা করার ফলেই বিস্ফোরণটি ঘটে। সূত্র মারফত জানা গেছে গোটা ঘটনাটির তদন্ত ভার হাতে নিতে পারে এনআইএ। এই ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি যোগের কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থাটি তদন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

গতকাল সিআইডি ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। আজ সকালে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট আধিকারিকরা নিমতিতা স্টেশনে যান। তাদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের আইজি জাভেদ শামিম।

রাজ্য প্রশাসন দ্রুত তদন্ত করে এই ঘটনার সঙ্গে কারা যুক্ত আছে তা বের করে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। দ্রুত অপরাধীদের ধরার জন্য তৃণমূলের উচ্চস্তর থেকেও রাজ্য প্রশাসনের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। কারণ সামনেই বিধানসভা ভোট। তার আগে যদি অপরাধীদের ধরে ফেলা সম্ভব না হয় তবে বিরোধীরা নিরাপত্তা ইস্যুতে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ বাড়াবে। যার প্রভাব গিয়ে পড়বে তৃণমূলের ওপর। এর পাশাপাশি স্থানীয় স্তরে জাকির হোসেনের জনপ্রিয়তা যথেষ্ঠ। স্বাভাবিকভাবেই দলীয় কর্মী সমর্থকদের ভাবাবেগের বিষয়টিও তৃণমূলকে মাথায় রাখতে হচ্ছে।