নিজস্ব সংবাদদাতা: শুরু হয়ে গেছে বহু প্রতিক্ষিত বহু চর্চিত পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। আজ রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে চলছে প্রথম দফার ভোট গ্রহণ। এবারের ভোটের আগে বেশ কয়েক মাস ধরে যে তুমুল রাজনৈতিক উন্মাদনা, চাপানউতোর এবং বাদানুবাদের সাক্ষী থেকেছে গোটা বাংলা, তা থেকে ভোট যে খুব একটা নির্বিঘ্নে হবে না তা আন্দাজ করা গিয়েছিল আগেই। আর প্রথম দফার সকাল থেকেই আশঙ্কা সত্যি করে জায়গায় জায়গায় ভোট রাজনীতিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পরিস্থিতি।

এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে অশান্তির খবর আসতে থাকে। সময় যত এগিয়েছে অশান্তি যেন বেড়ে চলেছে ততই। আজ পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার ৩০ টি আসনে ১৯১ জন প্রার্থীর ভোটগ্রহণ পর্ব চলছে। পটাশপুর থেকে শুরু করে গোপীবল্লভপুর, পুরুলিয়া থেকে শুরু করে শালতোড়া, বিক্ষিপ্ত হিংসার ছবি উঠে আসছে লাগাতার।

এদিন মেদিনীপুরের পটাশপুর থেকে বোমাবাজির খবর এসেছে, স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের তরফে তৃণমূলের দিকে তোলা হয়েছে অভিযোগের আঙুল। এছাড়া পুরুলিয়া বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে খাবার বিলি করার অভিযোগ উঠেছে। ভোটারদের প্রভাবিত করতেই যে এই উদ্যোগ, তা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না। যদিও বিরোধীদের দাবি অস্বীকার করেছে পদ্ম শিবির।

শালবনীতে সিপিআইএম প্রার্থী সুশান্ত ঘোষের কেন্দ্রে আলাদা করে নজর ছিলই। যথারীতি এদিন সকাল থেকেই অশান্তির খবর আসতে শুরু করে ওই এলাকা থেকে। অভিযোগ, ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় সুশান্ত ঘোষের গাড়িতে। খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই একজনকে আটক করেছে পুলিশ।বেশ কিছু জায়গায় সিপিআইএমের পোলিং এজেন্ট বসতে না দেওয়ার অভিযোগও তোলা হয়েছে।

দক্ষিণ কাঁথি থেকে ওঠা অভিযোগ আরো গুরুতর। ‘তৃণমূলে ভোট দিচ্ছে, BJP-তে ভোট যাচ্ছে’, এমনটাই অভিযোগকে কেন্দ্র করে এদিন ধুন্ধুমার বেঁধে যায় ওই বিধানসভা কেন্দ্রে। সবমিলিয়ে যে অশান্তির আঁচ করে বিশাল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল এবারের ভোটে, তাকে সত্যি প্রমাণিত করছে প্রথম দফার নির্বাচনই। সেই সঙ্গে প্রথম দিনের প্রথম বেলাতেই যদি এই হয়, তবে বাকি সাত দফায় রাজ্যে কি ছবি দেখা যাবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ।