নিজস্ব সংবাদদাতা: সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে গতকাল উত্তাল হল সংসদ। সোমবার কৃষ্ণনগরের সাংসদ প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্য করায় লোকসভায় ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। এবার লোকসভায় এমন বিতর্কিত মন্তব্য করার জেরে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সোমবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ধন্যবাদজ্ঞাপক বক্তব্য রাখতে উঠে ওই মন্তব্য করেন মহুয়া। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মহুয়ার বক্তব্য সংসদের বিধি বিরোধী। কেন্দ্রের মোদী সরকারের এক বরিষ্ঠ মন্ত্রী জানিয়েছেন সংসদীয় বিধির ১২১ নম্বর ধারা অনুসারে, যে কোনও সদস্যকে বিতর্কে অংশগ্রহণের সময় সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের সম্মানরক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখতে হয়। এক্ষেত্রে সেই বিধিই ভঙ্গ করেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ।
উল্লেখ্য, গতকাল লোকসভায় তাঁর ভাষণে মহুয়া মৈত্র কোনও বিচারপতির নাম না করলেও ইঙ্গিতে স্পষ্ট করে দেন, তাঁর মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ও বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “পবিত্র ভারতীয় বিচারব্যবস্থা এখন আর সম্মানীয় নয়। এটা সেদিন থেকে অপবিত্র হয়ে গেছে যবে থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত হয়ে নিজেই নিজের ট্রায়াল করছেন, নিজেকে দোষমুক্ত ঘোষণা করেন, তারপর অবসরের তিন মাসের মধ্যে রাজ্যসভায় মনোনয়ন নিশ্চিত করে জেড প্লাস নিরাপত্তা পান। সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলিকে রক্ষা করার কাজ থেকে সরে আসায় বিচারব্যবস্থা এখন আর পবিত্র নেই।”
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানা গিয়েছে, বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে তারা। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সংসদীয় বিধি মেনে পদক্ষেপের প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে তারা। প্রসঙ্গত, মহুয়ার বক্তব্যের পরই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে উঠে দাঁড়িয়ে এর বিরোধিতা করেন এবং প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির নামে এই মন্তব্যকে লজ্জাজনক আখ্যা দেন।
তবে পাল্টা তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় মহুয়ার সমর্থনে সংসদে বলেন, তিনি কারও নাম নেননি। এবং অবসর গ্রহণের পর কোনও প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বলা যায় না। তবে লোকসভার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রেমাচন্দ্রণ এদিন মহুয়াকে তাঁর বক্তব্য শেষ করার অনুমতি দিলেও, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির প্রসঙ্গে না টানার নির্দেশ দেন।