জাতীয়তাবাদী ভাবমূর্তিকে আরও পাকাপোক্ত করে তুলতে নতুন চাল বিজেপির। কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে আগামী ৩০ জানুয়ারি শহীদ দিবস উপলক্ষে দেশজুড়ে ২ মিনিটের নীরবতা পালন করা হবে। এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত ৩০ জানুয়ারি মৃত্যু হয় মহাত্মা গান্ধীর। নাথুরাম গডসে এবং বিনায়ক আপ্তে গুলি করে হত্যা করে গান্ধীজিকে। জাতির জনকের মৃত্যু দিনটিকে শহীদ দিবস হিসাবে পালন করা হয়।

বিরোধীদের অভিযোগ সামনে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে টার্গেট করেই জাতীয়তাবাদের জিগির তুলতে চাইছে কেন্দ্র। দেশের মূল সমস্যাগুলি থেকে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়াই কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির মূল উদ্দেশ্য বলে বামেদের অভিযোগ। তাদের বক্তব্য বিজেপি জাতীয়তাবাদী হুজুককে সামনে নিয়ে আসে সবসময়, অথচ কর্মসংস্থান দারিদ্রতা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলি নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করে না।

বামেদের পাশাপাশি তৃণমূলের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে সামনে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন থাকায় বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারকে ব্যবহার করে এই নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। এদিকে রাজ্য বিজেপির দাবি স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদদের সম্মান জানাতেই এই পদক্ষেপ। যারা ভারতকে ভালবাসে তারা সবাই এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলনে আত্ম বলিদান দেওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আগামী ৩০ জানুয়ারি শহীদ দিবসের দিন বেলা ১১ টা নাগাদ দেশবাসী সর্বত্র দু মিনিটের নীরবতা পালন করবে। ঠিক ১০:৫৯ মিনিটে দেশের সর্বত্র সাইরেন বেজে উঠবে। তারপর নীরবতা পালন করা হবে। দু’মিনিট পর আবার সাইরেন বেজে উঠে নীরবতা পালনের বিষয়টি শেষ হয়েছে বলে জানিয়ে দেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে দেশের কিছু কিছু জায়গায় সাইরেনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী তোপ দেগে নীরবতা পালনের বিষয়টি শুরু করবে এবং তোপ দেগে তা সমাপ্ত‌ করা হবে। দেশের প্রান্তিক অঞ্চলগুলিতে যাতে এই কর্মসূচি পালনে কোনো অসুবিধা না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে।

বিশেষজ্ঞ মহলের কেউ কেউ বলছেন বর্তমান সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা মানুষের ইচ্ছার ওপর না ছেড়ে দিয়ে জোর করে জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন থালা বাজানো, হাততালি দেওয়া, নীরবতা পালনের কর্মসূচিগুলি পালনের ক্ষেত্রে কেন্দ্র যতটা তৎপর তার যদি অর্ধেক তৎপরতা যদি দেশের অর্থনীতির হাল ফেরানোর উদ্দেশ্যে হতো তাহলে মানুষজন আর একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারত!