নিজস্ব সংবাদদাতাঃ মরণোত্তর দেহদান বা ব্রেন ডেথ-র পর অঙ্গদান করার ঘটনা প্রায়শই শোনা যায়। দিন কয়েক আগেই দিল্লীতে এক দম্পতি তাঁদের ৫ বছরের মেয়ের ব্রেনডেথের পরে তার অঙ্গগুলি দান করেছিলেন। যেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই প্রশংসা উপচে পড়েছিল গোটা দেশের চিকিৎসক মহলে। এবার আরও বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এক দম্পতি। আসামের বাসিন্দা অচিন্ত্য-বিপাশা নিজেদের সদ্যোজাত সন্তানকেই দান করে দিলেন চিকিৎসক-গবেষকদের কাছে।

সদ্যোজাত
growing your baby

বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুটি আপাতত মুকুন্দপুর আমরি হাসপাতালের নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে মৃতপ্রায় অবস্থায় রয়েছে কৃত্রিম লাইফ সাপোর্টে। ১০ দিন ধরে নিথর হয়ে রয়েছে সে। তার জ্ঞান ফিরবে না বলেই জানিয়েছেন ডাক্তাররা। এই অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও এসএসকেএম-এর অধ্যক্ষকে চিঠি লিখে শিশুটির বাবা-মা জানিয়েছেন, তাঁরা চান তাঁদের সন্তান চিকিৎসা গবেষণার কাজে লাগুক।

এদিন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পুরোপুরি ম্যাচিওর্ড হওয়ার আগেই জন্ম নেয় শিশুটি। মাত্র ৪৫০ গ্রাম ওজন তার। এক হাতের তালুতে এঁটে যায় ছোট্ট শরীর। জন্মানোর পরে সে কাঁদেওনি, তাই খোলেনি ফুসফুসও। এভাবে ১১ জানুয়ারি জন্মানোর পর থেকেই ‘সিভিয়ার গ্রোথ রেস্ট্রিকশন’-এ আক্রান্ত হয় সে। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতি ১০ হাজারে ১ জন শিশুর শরীরে এ অসুখ হয়। এর ফলে তার শরীরে কোনও নড়াচড়া নেই। মস্তিষ্কেও সাড়া নেই, কোমাতেই রয়েছে সে জন্ম থেকে এবং কৃত্রিম উপায়ে চলছে শ্বাস-প্রশ্বাস। অথচ প্রস্রাব ও মলত্যাগ করছে নিয়মিত, যার অর্থ পাচনতন্ত্র ও রেচনতন্ত্র কাজ করছে।

21 59 23 images
india tv news

সন্তানের এমন পরিণতি শোনার পরে স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েন অচিন্ত্য-বিপাশা। চিকিৎসকরা বোঝান, বাচ্চার জ্ঞান ফেরার সম্ভাবনা কার্যত নেই-ই। এভাবেই নিওনেটাল ইউনিটে তাকে বাঁচিয়ে রাখার কথা বলেন বাবা-মা। কিন্তু তা যে বাস্তবে সম্ভব নয়, সে কথাও ভাল করে বোঝানো হয় ওই দুর্ভাগা বাবা-মা’কে। মেডিক্যাল কাউন্সেলিং চলে দফায় দফায়। শেষে অচিন্ত্য ও বিপাশা ঠিক করেন, তাঁদের সন্তান আর না ফিরলেও, এমন যেন আর কারও সঙ্গে না হয়। তাই তাঁরা জানান, সন্তানের দেহ যেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাজে লাগে। এই ঘটনায় সকলে চমকে গেলেও কুর্নিশও জানান নেটিজেনরা।