নিজস্ব সংবাদদাতা- গতকাল পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল থেকে ওজনদার নেতাদের যত দ্রুত সম্ভব ভাঙিয়ে আনতে হবে। তারপরই আজ রাজ্যসভার অধিবেশন চলাকালীন সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পাশাপাশি তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করে দিলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি যে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তা একরকম নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।

তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল দীনেশ ত্রিবেদী সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করার পরেই ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং তাকে দলে স্বাগত জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত গত লোকসভা নির্বাচনের সময় রব উঠেছিল দীনেশ ত্রিবেদী তৃণমূল ছাড়তে পারেন। এমনিতেই তিনি গুজরাটের মানুষ হওয়ায় তার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের সুসম্পর্ক আছে বলে জানা যায়। শোনা যায় গত লোকসভা নির্বাচনের সময় মুকুল রায় তার চাণক্য নীতি প্রয়োগ করে অর্জুন সিং এবং দীনেশ ত্রিবেদী দু’জনকেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া টোপ দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত দীনেশ ত্রিবেদীকে প্রার্থী করায় অর্জুন সিং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন এবং ৪০ হাজারেরও বেশি ভোটে দীনেশ ত্রিবেদীকে পরাজিত করেন।

এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর দীনেশ ত্রিবেদীকে রেলমন্ত্রী করেছিলেন। রেল বাজেট পেশের সময় তিনি দলের সঙ্গে আলোচনা না করেই যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর কথা ঘোষণা করায় তৎক্ষণাৎ তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। সেই সময়ে ভারতীয় সংসদে আর এক বিরল নজির তৈরি হয়, দীনেশ ত্রিবেদী রেল মন্ত্রী হিসেবে বাজেট পেশ করলেও রেল বাজেটের উপর জবাবি ভাষণ দিয়েছিলেন সদ্য নিযুক্ত রেলমন্ত্রী মুকুল রায়।

রাজনৈতিক মহলের মতে অবশেষে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হতে চলেছে। যে মুকুল রায় তাকে সরিয়ে রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন এবং যে অর্জুন সিং তাকে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত করেন তারা দুজনেই আজ বিজেপিতে। এবারে তিনি বিজেপিতে যোগ দিলে ষোলো কলা পূর্ণ হবে বলে ধারণা।

দীনেশ ত্রিবেদী ইস্তফার কথা ঘোষণা হওয়ার পরে তাকে কটাক্ষ করেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। অর্জুন সিং-এর কাছে তার হারার ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি। অর্জুন সিং অবশ্য দীনেশ ত্রিবেদীকে বিজেপিতে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “দীনেশ দা বিজেপিতে এলে খুব খুশি হব।”