নিজস্ব সংবাদদাতা- পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পুরানো মেজাজে ধরা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি গাড়ি ছেড়ে ইলেকট্রিক স্কুটিতে করে নবান্নে গিয়ে হাজির হলেন। যদিও স্কুটি তিনি চাননি, চালিয়েছেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। তিনি পিছনের সিটে হেলমেট পড়ে স‌ওয়ার হন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিবাদের ধরন যেমন রাজ্যবাসীর মধ্যে শোরগোল ফেলে দিয়েছে তেমনি নবান্নে প্রবেশ করার আগে ছোট্ট সাংবাদিক সম্মেলন রাখা বক্তব্য একইরকমভাবে নজরে উঠে এসেছে।

ইলেকট্রিক স্কুটারে করে নবান্নে যাওয়ার ঘটনাকে পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চিহ্নিত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার ভোটের আগে বিনামূল্যে গ্যাসের নামে মানুষকে গ্যাস দিচ্ছে!” এক্ষেত্রে তিনি যে কেন্দ্রের উজ্জ্বলা যোজনায় দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার প্রধানের ঘটনাকে উল্লেখ করেছেন তা পরিষ্কার।

উল্লেখ্য উজ্জ্বলা যোজনায় প্রথমে বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার পেলেও পরবর্তীতে তা আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো দাম দিয়েই কিনতে হয় দরিদ্র পরিবারের মহিলাদের। মুখ্যমন্ত্রী তার বক্তৃতায় উজ্জ্বলা যোজনার এই বিষয়টিকে উল্লেখ করতে গিয়েই ‘গ্যাস দেওয়া’ শব্দবন্ধ প্রয়োগ করেন। প্রসঙ্গত বাংলা মেঠো ভাষায় গ্যাস দেওয়া বলতে মিথ্যাচারিতা বা সত্যের অপলাপ করাকে বোঝায়।

সে দিক থেকে দেখতে গেলে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ দপ্তরের বাইরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় মুখ্যমন্ত্রী যে একেবারেই মেঠো ভাষায় কথা বলেছেন তা বলাই যায়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে গ্যাস দেওয়া প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তৃণমূল নেত্রী আসলে এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করেছেন। প্রথমত, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উজ্জ্বলা যোজনার কথা উল্লেখ করে বিজেপি এ রাজ্যের ভোটে সুবিধা পাওয়ার যে চেষ্টা করছে তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি মেঠো ভাষায় কথা বলে বাংলার পিছিয়ে পড়া আমজনতার মন জিতে নেওয়ার চেষ্টাও করেছেন বলে তাদের অভিমত।

অতএব বলাই যায় ‘গ্যাস’ নাকি ‘গ্যাস দেওয়া’, কোনটি আগামী দিনে মানুষ বেছে নেবে তার জন্য আরও বেশ কিছু দিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।