নিজস্ব সংবাদদাতা: এখনও বাড়িতে মেলেনি পানীয় জল। তাই গ্রামেরই একটি জায়গায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পরিবারের সকলের জন্য পানীয় জল সংগ্রহ করেন এলাকার মা-কাকিমারা। যেখানে রাজনৈতিক নেতারা ‘উন্নয়ন হবে’, ‘বিকাশ হবে’ বলে বাজার গরম করছেন, সেখানে এমন দৃশ্য খানিক অস্বস্তির বৈকি! ঘটনাটি
পূর্ব বর্ধমানের ভাতার বিধানসভার সাহেবগঞ্জ গ্রামে। সেখানে আদিবাসী পাড়ায় দূর থেকে মহিলাদের লাইন দেখলে মনে হতেই পারে কোনও ভোটের বা রেশন দোকানের লাইন। ভুল ভাঙবে কাছে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো মহিলাদের হাতে বালতি-ঘড়া দেখলে।

প্রসঙ্গত, সাহেবগঞ্জ গ্রামের হলদিগোরে আদিবাসী পাড়ায় রয়েছে ৬০থেকে ৭০টি পরিবার। প্রায় ২০০ ভোটার রয়েছে এই পাড়ায়। গ্রামে গেলে টিউবওয়েল ও জলের কল দেখা যাবে। কিন্তু, তাতে জল পড়ে না। তাই তীব্র জল সঙ্কট গ্রামে। গ্রামবাসীদের কথা অনুযায়ী, স্নান, জামা-কাপড় কাচা, শৌচকর্ম করতে ১০থেকে ১৫ মিনিট হেঁটে দূরে মাঠে ঘাটে জল যেখানে আছে সেখানে যেতে হয়। গ্রামে একটি পুকুর রয়েছে, কিন্তু সেটিও জলশূন্য। গ্রামের পাশ দিয়ে ডিভিসি ক্যানেল গেছে সেই ডিভিসি ক্যানেলে জল এর মাধ্যমেই তাদের বাড়ির কাজকর্ম হয়। কিন্তু সেটা সাময়িক, তার কারণ সেখানেও সব সময় জল থাকে না।

পাড়ার মধ্যে দিয়ে ডিভিসি ক্যানেলের নিচ দিয়ে সজলধারা জলের পাইপ গেছে। সেইখানে পাড়ার মহিলারা নেমে জল সংগ্রহ করেন প্রতিদিনই। বাড়ির মধ্যে যে সজলধারার সংযোগ দেওয়া হয়েছে তাতে জলের প্রেশার না থাকায় জল পৌঁছায় না বাড়িতে। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্যানেলে নেমে জল সংগ্রহ করতে হয় মহিলাদের। পরে লম্বা লাইন। এলাকারই বাসিন্দা লক্ষ্মী মাড্ডি এই বিষয়ে জানান, বাড়ি বাড়ি সজল ধারার কল রয়েছে, কিন্তু জল নেই। ৩ বেলা জল দেয়, কিন্তু জল আসে না। পাড়ায় পঞ্চায়েতের কল আছে, কিন্তু জল নেই। পঞ্চায়েত কে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে, কিন্তু সমাধান হয় নি। তাই এবার ভোটে “জল দিন, ভোট নিন।”

একই বক্তব্য, পাড়ার আরেক বাসিন্দা রাজু মুর্মুরও। তিনি জানান, চরম জল সঙ্কট রয়েছে আমাদের পাড়ায়। সকালবেলা হলেই মাঠে শৌচকর্ম করতে যেতে হয়। বাড়িতে শৌচালয় থাকলেও নেই জল। তাঁর মতে, যে জল দেবে ভোট তাকে দেব। টাকা পয়সা চাই না। খেটে খাব। চাই জল। না হলে ভোট নয়। আমরা রোদে পুড়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করে ভোট দেব আর কষ্টে থাকবো তা হবে না।