নিজস্ব সংবাদদাতা- বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সহ মতুয়াদের বিজেপি পন্থী নেতাকর্মীদের দাবি ছিল অমিত শাহকে বনগাঁয় এসে সিএএ ও এনআরসি নিয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা করতে হবে। সেই দাবি মেনেই ঠাকুরনগরের সভামঞ্চে থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন করোনার প্রকোপ কমলেই দেশজুড়ে সিএএ-র কাজ শুরু হয়ে যাবে। যদিও শান্তনু ঠাকুররা বারবার দাবি জানিয়ে এসেছেন বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সিএএ সংক্রান্ত কাজ শুরু করতে হবে।

গত মাসের শেষের দিকে ঠাকুরনগরের আসার কথা ছিল অমিত শাহের। কিন্তু দিল্লিতে ইজরায়েল দূতাবাসের সামনে বোম বিস্ফোরণ ঘটায় তিনি সেই সময় আসতে পারেননি। তারপরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হতে থাকে ঠাকুরনগরে এসে মতুয়াদের সিএএ নিয়ে অস্বস্তিকর প্রশ্নের সামনে যাতে পড়তে না হয় সেজন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ সফর বাতিল করেছেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে অমিত শাহ বলেন, “গতবার বিশেষ কারণে এখানে আসতে না পারায় মমতা দিদি খুব খুশি হয়েছিলেন।”

মতুয়ারা বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থী হলেও তাদের এ দেশে আগে থেকে বসবাস করার অধিবাসীদের মতই একই অধিকার আছে জানিয়ে সিএএ নিয়ে যখন নির্দিষ্ট ঘোষণা করেন অমিত শাহ সেই সময় সভায় উপস্থিত মতুয়ারা উচ্ছ্বাসে ভেসে যান। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, “কংগ্রেস প্রথমে জানিয়েছিল মতুয়াদের এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু সে বিষয়ে কোনো কাজের কাজ করেনি। আমরাই প্রথম ২০১৮ সালে সিএএ আইন পাস করে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করি। ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ এসে যাওয়ায় এই সংক্রান্ত কাজ পিছিয়ে গিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেই সিএএ-র কাজ জোরকদমে শুরু হয়ে যাবে। একটা বিষয় মনে রাখবেন আমরা যা বলি তাই করি।”

ঠাকুরনগরের সভা মঞ্চ থেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের বিরোধীরা ভুল বোঝাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কমিউনিস্ট, কংগ্রেস, তৃণমূল সমস্ত বিরোধীরা একজোট হয়ে সংখ্যালঘুদের গিয়ে বলছে সিএএ-এনআরসির ফলে তোমাদের নাগরিকত্ব চলে যাবে। সম্পূর্ণ মিথ্যা বলছে। সিএএ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আইন নয়, তা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।এর ফলে কোনো সংখ্যালঘু ভাই-বোনের নাগরিকত্ব যাবে না।”

মতুয়াদের মন জয় করার উদ্দেশ্যে অমিত শাহ জানিয়েছেন রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠন করলে মতুয়া সমাজের দলপতিদের প্রতিমাসে পেনশন দেওয়া হবে। তিনি মতুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, “লোকসভা ভোটের সময় আপনারা যেমন দুহাত ভরে পদ্মফুলকে সমর্থন জানিয়েছিলেন, বিধানসভা ভোটের সময়‌ও আমাদের সমর্থন করুন।”