চীনের উহান প্রদেশ থেকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে গিয়ে এখনও পর্যন্ত অসংখ্য মানুষের প্রাণ কেড়েছে মারণ করোনা ভাইরাস। শুধু তাই নয়, বিশ্ব জুড়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকেই একেবারে এলোমেলো করে দিয়েছে করোনা। এই মহামারীর প্রভাব অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রের মত শিক্ষাব্যবস্থাতেও পড়েছে।
করোনা আবহে লকডাউন পরবর্তী কালে নিউ নর্মালে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে জনজীবন, কিন্তু স্কুল কলেজ প্রভৃতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলি এখনও ঠিক মতো খোলেনি। তাই অনলাইনে ডিজিটাল মাধ্যমেই এখনও চলছে পড়াশোনা। কিন্তু এই নতুন পাঠ প্রক্রিয়ার খরচ বহন করতে পারেনি দেশের বহু ছাত্র ছাত্রী। করোনা আবহে লেখাপড়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে তাঁদের। সেই সমস্ত দরিদ্র কিন্তু মেধাবী ছাত্রী ছাত্রীদের জন্য এবার এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন উত্তরাখন্ডের এক যুবক।


জানা গেছে, ২৭ বছর বয়সী শুভম ধর্মস্কতু উত্তরাখন্ডের হল্দিওয়ানির বাসিন্দা। রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও যাতে অনলাইনের পঠনপাঠন পৌঁছে যায়, সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে তার ব্যবস্থা করছেন এই যুবক। তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করছেন পুরোনো স্মার্টফোন, এবং সেগুলি গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিলি করছেন ছাত্রীদের মাঝে। সকলেই যাতে করোনা আবহে বিনা বাধায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, দারিদ্র্য যেন শিক্ষার পথে অন্তরায় না হয়ে দাঁড়ায় সেটাই যুবকের একমাত্র উদ্দেশ্য।


সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুভমের মা একজন স্কুল শিক্ষিকা। তিনি লকডাউনের পর থেকে বাড়িতে বসেই অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন। তাঁর কাছ থেকেই শুভম জানতে পারেন যে অর্ধেকের বেশি ছাত্রছাত্রীই ক্লাস করতে পারছে না। এবং তারপরেই এই উদ্যোগের কথা মাথায় আসে তাঁর।


ইতিমধ্যেই উত্তরাখন্ডের বিভিন্ন পার্বত্য এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম গুলিতে অনেক ছাত্রছাত্রীর কাছে ফোন পৌঁছে দিতে পেরেছেন ওই যুবক। পাশাপাশি সাহায্যের জন্য তিনি সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন। জানা গেছে, ফোন দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। শুভম বলেছেন, “বাড়িতে যদি একটা ফোন থাকে, ছেলেরাই সেটা পায়। মেয়েরা নয়। তাই আমি আগে মেয়েদের কাছে ফোন দিচ্ছি।” শুভমের মত তরুণের এই উদ্যোগকে সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন।