নিজস্ব সংবাদদাতা- দীনেশ ত্রিবেদীর তৃণমূল ত্যাগ ও সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ঘটনায় হেলিকপ্টারকে দায়ী করছে তৃণমূলের একাংশ। আসলে তৃণমূলের কিছু সাংসদ ঘরোয়া আলোচনায় মজা করে বলেছেন হেলিকপ্টারের জন্যই দীনেশ ত্রিবেদীকে দল ছাড়া থেকে রুখতে পারলেন না দলনেত্রী।

হেঁয়ালি বাদ দিয়ে আসল ঘটনায় আসা যাক। দীনেশ ত্রিবেদী যে দল ছাড়তে চলেছেন সেটি প্রথম আঁচ করেছিলেন কোনো তৃণমূল নেতা নন, মারাঠা স্ট্রং ম্যান শরদ পাওয়ার। ঝানু রাজনীতিক বলে পরিচিত শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিকেই কথা হয় দীনেশ ত্রিবেদীর। সদ্য দলত্যাগী তৃণমূলের এই রাজ্যসভার সাংসদ নিজেই ফোন করে শরদ পাওয়ারকে ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি তৃণমূল ছাড়তে পারেন। এই মুহূর্তে দিল্লির বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে শরদ পাওয়ার একরকম নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলা যায়। স্বাভাবিকভাবেই তিনি চাননি তৃণমূলে নতুন করে আবার ভাঙন ধরুক। তাই তিনি তৎক্ষণাৎ সৌগত রায়কে ফোন করে গোটা ঘটনাটি জানান।

শরদ পাওয়ার যখন কংগ্রেসে ছিলেন তার সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব ছিল প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির। পরে কংগ্রেস ত্যাগ করে এনসিপি তৈরি করলেও প্রিয়র সঙ্গে তার সেই বন্ধুত্বে কোনো চিড় ধরেনি। এদিকে সৌগত রায় আবার প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ঘনিষ্ঠ অনুগামী ছিলেন। সেই সূত্রেই শারদ পাওয়ারের সঙ্গে সৌগত বাবুর যোগাযোগ‌ও বেশ ভালো। সৌগত রায়কে ফোন করে শরদ পাওয়ার জানান দীনেশ ত্রিবেদী সম্ভবত দল ছাড়তে চলেছেন।

মারাঠা স্ট্রং ম্যানের কাছ থেকে ফোন পাওয়ার পরই সৌগত রায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন। কিন্তু সেই সময় মালদার জনসভায় যাওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেলিকপ্টারে উঠছিলেন। নিরাপত্তাবিধানে হেলিকপ্টারের ভিতরে মোবাইল ফোনে কথা বলা নিষিদ্ধ। স্বাভাবিকভাবেই সৌগত বাবুর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ কথা হয়নি। এরপরই তিনি মালদার উদ্দেশ্যে উড়ে যান। সম্ভবত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় দীনেশ ত্রিবেদী সঙ্গে তৃণমূলের তরফ থেকে আলোচনা করা সম্ভব হয়নি।

এই ঘটনার কারণেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে একদল সাংসদ মজা করে দাবি করছেন হেলিকপ্টার কান্ডের জন্যই দীনেশ ত্রিবেদী সঙ্গে দলের আলোচনা করা সম্ভব হয়নি, তাই তৃণমূল ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন এই রাজ্যসভার সংসদ। তৃণমূলের আরেকটি সূত্রের দাবি দীনেশ ত্রিবেদী যে দলত্যাগ করতে চলেছেন নেত্রী সেটা একরকম নিশ্চিত ছিলেন। তাই তিনি আলোচনা করার আগ্রহ দেখাননি। কারণ যাই হোক ফল আপাতত তেতো ঠেকছে তৃণমূল নেতাদের কাছে।