গত কয়েক দশক ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ইন্টারনেটের বহুল ব্যবহারের ফলে সুবিধা হয়েছে এই যে নানান কেলেঙ্কারির খবর আলোর গতিবেগে পৌঁছে যায় পৃথিবীর সমস্ত কোণায়। বিশেষ করে তা যদি হয় রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে জড়িত কোনও যৌন কেলেঙ্কারি। জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে যারা ক্ষমতায় আসেন, তাঁদের মাধ্যমেই কোনও শোষণ বা পীড়নমূলক ঘটনা ঘটে , তবে তা যেমন সেই দেশের মানুষের পক্ষে লজ্জাজনক, তেমনই দুশ্চিন্তারও বটে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা ঘটে বারবার। স্ক্যান্ডাল তৈরি হয়, মাতামাতিও হয়, আবার কিছুদিন বাদে তা মিলিয়েও যায়। বাজারে চলে আসে নতুন কোনও মুখরোচক বিতর্ক! তবে পৃথিবীর বড়ো বড়ো দেশের রাষ্ট্রনেতাদের গায়ে একবার এই ধরনের কেলেঙ্কারির দাগ লাগলে সহজে তা মিলিয়ে যায় না। জেনে নেব এমন কয়েকজন রাষ্ট্রনেতার কথাই—-
যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িত বিল ক্লিনটন
আমেরিকার প্রাক্তন এই সুদর্শন রাষ্ট্রপতি একসময় মহিলামহলেও ছিলেন প্রবল জনপ্রিয়। তবে ১৯৯৮এ তাঁর নাম যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। হোয়াইট হাউসের এক ২২ বছর বয়সী ইন্টার্ন মনিকা লিউয়েনস্কির সঙ্গে তাঁর রগরগে প্রেমের কাহিনি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় তাঁর জনপ্রিয়তায় অনেকখানি ভাঁটা পড়ে। তাছাড়া ২১ দিনের সেনেটের ট্রায়ালের মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে।
কেলেঙ্কারির নায়ক ইদি আমিন
উগান্ডার ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট ইদি আমিনের নামে যৌন কেলেঙ্কারি জনিত সমস্ত রকমের অভিযোগই রয়েছে। তাঁর পঞ্চাশটিরও বেশি রক্ষিতা ছিল বলে জানা যায়। মোট ছয় বার বিয়ে করেছিলেন এই খ্যাতিমান রাষ্ট্রনায়ক। শোনা যায় তাঁর সন্তানের সংখ্যাও চল্লিশের অনেক বেশি। এই মানুষটির নামে নির্যাতনের নানান অভূতপূর্ব অভিযোগ উঠে এসেছে বারবার।
মোশে কাটসাভ
ইজরায়েলের পূর্বতন রাষ্ট্রপ্রধান মোশে কাটসাভ যৌন কেলেঙ্কারির সাত বছর কারাবাসের সাজা অব্দি পান। তাঁর অধীনে কর্মরত প্রায় দশজন মহিলা তাঁর দ্বারা নিগৃহীত হয়েছিলেন বলে জানা যায়। এছাড়াও নানান আরও অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন তিনি।
মুয়াম্মর আল গাদ্দাফি
যৌন কেলেঙ্কারি এই রাস্ত্রপ্রধানের কীর্তিকলাপের অনুপাতে খুব মামুলি একটি অধ্যায়। লিবিয়ার এই প্রাক্তন প্রধান বেছে বেছে কুমারি মেয়েদের দেহরক্ষীবাহিনী বানিয়েছিলেন। একটি বড়সড় হারেমও ছিল তাঁর। তাঁর নজরে পড়লে সে দেশের কোনও মহিলাই রেহাই পেতেন না বলে জানা গেছে বারবার, আইনকানুনের ধার খুব একটা ধারতেন না এই মানুষটি।
যৌন কেলেঙ্কারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প
আমেরিকার সদ্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গোটা জীবনই মহিলাঘটিত নানান কেচ্ছায় বর্ণময়। এযাবৎ প্রায় ছাব্বিশজন মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। এছাড়াও মডেল ও অভিনেত্রীদের প্রতি এই নেতা একটু বেশিই দুর্বল। নিজেও ইনি স্বীকার করেছেন তা।
ফলে বোঝাই যাচ্ছে সেক্স স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে পড়া রাষ্ট্রনেতাদের কাছে নতুন নয়। তবে অনেকেই পরবর্তী সময়ে নিজেদের শুধরে নেবার চেষ্টাও করেন। কিন্তু কেউ কেউ এই ধরনের কেলেঙ্কারি থেকে শিক্ষা না নিয়ে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন বারংবার।