নিজস্ব সংবাদদাতা- গণপরিবহন সমস্যাকে কেন্দ্র করে ফের বিপাকে পড়তে চলেছে রাজ্যবাসী। বেসরকারি বাস ও মিনিবাস সংগঠনগুলির একাংশ টানা ৭২ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের কথা ঘোষণা করেছে। আগামী ২৮, ২৯ ও ৩০ জানুয়ারিপশ্চিমবঙ্গের প্রায় সমস্ত বেসরকারি বাস ও মিনিবাস এর ফলে রাস্তায় নামবে না।

বেসরকারি বাস ও মিনিবাস সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ক্রমাগত ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে তাদের পক্ষে বর্তমান ভাড়ায় গাড়ি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। দাবি বেসরকারি বাসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ভাড়া ১৪ টাকা করা হোক! অর্থাৎ বাসে উঠলেই ১৪ টাকা ভাড়া দিতে হবে যাত্রীদের, যা এখন ৯ টাকা। তবে লকডাউনের পর থেকে বেশিরভাগ রুটের বেসরকারি বাস বর্তমানে দশ টাকা করে ন্যূনতম ভাড়া নিচ্ছে বলে যাত্রীরা বারবার অভিযোগ করেছেন।

বাস মালিকদের দাবি ডিজেলের দামের ওপর থেকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সমস্ত কর প্রত্যাহার করে নিক, তার বদলে জিএসটি চালু করা হোক। বাস সংগঠনগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে জিএসটি চালু করা হলে ডিজেলের দাম বর্তমানে ৫৫-৬০ টাকার আশেপাশে থাকবে। সে ক্ষেত্রে তারাও যেমন স্বস্তিতে রাস্তায় বাস নামাতে পারবেন তেমনি সাধারণ মানুষকেও ভাড়া নিয়ে চাপে পড়তে হবে না।

ভাড়া বৃদ্ধির দাবি নিয়ে বেসরকারি বাস ও মিনিবাস সংগঠনগুলি রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের সঙ্গে বারবার আলোচনায় বসলেও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। সূত্রের খবর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাস ভাড়া বৃদ্ধিতে সম্মতি দিয়ে রাজ্য সরকার জনসাধারণের রোষে পড়তে চাইছে না। সেই কথা সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে মালিক সংগঠনগুলিকে। আর কোনো উপায় নেই বুঝতে পেরেই টানা ধর্মঘটের পথে হাসতে বাধ্য হচ্ছে বাস ও মিনিবাস মালিকদের সংগঠনগুলি। অন্তত তাদের দাবি সেরকমই।

যদিও ধর্মঘটী বাস মালিক সংগঠনগুলির মধ্যেই বিভাজন আছে। বাস ও মিনিবাস মিলিয়ে মালিকদের সাতটি সংগঠনের মধ্যে পাঁচটি সংগঠন ধর্মঘটের পক্ষেই সায় দিলেও দুটি মালিক সংগঠন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তাদের বক্তব্য ধর্মঘট করে সমস্যার সমাধান হবে না। একমাত্র সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব বলে তাদের বিশ্বাস।

পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে ধর্মঘটীদের মধ্যেই যেহেতু মতবিরোধ আছে তাই অল্প কিছু সংখ্যক হলেও বাস ধর্মঘটের তিনদিন পথে নামবে। তবে টানা তিনদিনের বাস ধর্মঘটের ফলে নিত্যযাত্রীদের যে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে তা এখন থেকেই বলে দেওয়া যায়। সাম্প্রতিক অতীতে টানা তিনদিনের বাস ধর্মঘটের নজির নেই। সে দিক থেকে বলতে গেলে বেসরকারি বাস ও মিনিবাস মালিকদের ডাকা টানা ৭২ ঘণ্টার এই ধর্মঘট নজিরবিহীন পদক্ষেপ।